খেলা
২৪ বছর পর দাবায় তিতাসের শিরোপা
স্পোর্টস রিপোর্টার
৩ মে ২০২৫, শনিবার
১৯৯৭ সাল থেকে দাবা লীগে খেলে আসছে তিতাস ক্লাব। ২০০০ সালে প্রথম বিভাগে শিরোপা জিতেছিল ক্লাবটি। গতকাল ২৪ বছর পর প্রিমিয়ার বিভাগ দাবায় শিরোপা জিতলো তিতাস ক্লাব। প্রিমিয়ার লীগের শেষ রাউন্ডে উত্তরা চেস ক্লাবকে হারিয়ে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় তিতাস। ২০১১ সালের আগ পর্যন্ত প্রথম বিভাগই ছিল দাবার সর্বোচ্চ স্তর।
তিতাস গ্যাস প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে পরিচালিত তিতাস ক্লাব। সাবেক জাতীয় দাবাড়ু ফিদে মাস্টার সাইফ উদ্দিন লাভলু তিতাস ক্লাবের সঙ্গে আছেন অনেকদিন থেকেই। ২০০০ সালে এনামুল হোসেন রাজীব, খন্দকার আমিনুল, রুহুল কবির শিপলু, আরমান মনিরের সঙ্গে চ্যাম্পিয়ন দলে ছিলেন লাভলুও। ২৪ বছর পরের চ্যাম্পিয়ন দলেও তিনি আছেন। এবারের লীগে ছয় জনের দলে দাবাড়ু হিসেবে তার নাম থাকলেও ম্যানেজার বা অধিনায়কের দায়িত্বই বেশি পালন করেছেন। গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোর্শেদ, ফিদে মাস্টার তাহসান তাজওয়ার জিয়া, আন্তর্জাতিক মাস্টার ফাহাদ রহমান, ফিদে মাস্টার সাকলাইন মোস্তফা সাজিদ ও ভারতীয় আন্তর্জাতিক মাস্টার পানিসার বেদান্তই ঘুরে ফিরে নয় রাউন্ড খেলেছেন। দাবা লীগে প্রতি রাউন্ডে চার জন করে খেলেন। দুই যুগ পর তিতাস ক্লাব আবার দাবার শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে পারায় বেশ তৃপ্ত সাবেক জাতীয় দাবাড়ু লাভলু। গত বছর ডিসেম্বরে অবসরে যাওয়া তিতাস গ্যাসের সাবেক এই ডিজিএম বলেন, ‘আমরা প্রতিবারই প্রিমিয়ার লীগে সম্মানজনক অবস্থানে থাকি। একাধিকবার রানার্স-আপ ও তৃতীয় হয়েছি। এবার আমাদের ম্যানেজমেন্ট গত বারের চেয়ে বাজেট বৃদ্ধি করে ১৫ লাখ করেছে। জাতীয় পর্যায়ের শীর্ষ দশ জন দাবাড়ুর মধ্যে চারজনকেই আমরা নিয়েছি এবং ভালো একজন বিদেশি এনেছি। আমাদের দলীয় শক্তি ছিল অনেক বেশি পাশাপাশি বিমান এবার খেলেনি, পুলিশও বড় দল করেনি। দীর্ঘদিন পর চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় আমাদের ম্যানেজমেন্ট খুশি হয়ে দাবাড়ুদের সম্মানিত ও উৎসাহিত করবে এতে বাজেট আরও বাড়বে।’ এবার তিতাসের হয়ে খেলেছেন উপমহাদেশের প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোর্শেদ। দুই যুগ পর তিতাসকে চ্যাম্পিয়ন করাতে পেরে তিনি বলেন, ‘নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে একবার তিতাসে খেলেছিলাম। অনেকদিন পর আবার খেললাম এবং তিতাস চ্যাম্পিয়ন হলো। তিতাস অনেকদিন থেকেই দাবার সঙ্গে আছে। দীর্ঘদিন পর একটি বড় সাফল্য পেলো। এটা অবশ্যই আনন্দের। এবারের লীগে জৌলুস কম হলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে।’ প্রয়াত গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমানের ছেলে তাহসিন তাজওয়ার জিয়াও খেলেছেন তিতাসের হয়ে। শিরোপা জিতে তরুণ এই দাবাড়ু বলেন, ‘এটি আমার দ্বিতীয় লীগ শিরোপা। দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এতে ভালো লাগছে তবে আমি খুব বেশি ভালো খেলতে পারিনি। বাবা গত লীগে খেলেছে এবার নেই এটা ভেবে খুব খারাপও লাগছে।’ গতকাল বিকালে চ্যাম্পিয়ন দলকে ট্রফি হস্তান্তর করেছে দাবা ফেডারেশন। ট্রফি থাকলেও এই লীগে ছিল না কোনো অর্থ পুরস্কার। গ্রেট ওয়াল সিরামিকের নাম পৃষ্ঠপোষক হিসেবে থাকলেও সেটা নাকি শুধু আরবিটার ও অন্য ব্যয় মেটানোর বেশি নয়। ২০২৪ সালে লিগ হয়নি তাই এই বছর দু’টি লীগ করতে চায় ফেডারেশনের নতুন কমিটি। সেই যুক্তিতে বছরের শেষের দিকে লীগে অর্থ পুরস্কারের আশ্বাস রয়েছে দাবাড়ুদের প্রতি। ফেডারেশন থেকে আর্থিক পুরস্কার পাচ্ছেন না দাবাড়ুরা। তেমনি ক্লাবগুলো থেকেও সম্মানী ছিল কম। দাবার সকল অঙ্গনে সরব বিচরণ আন্তর্জাতিক মাস্টার আবু সুফিয়ান শাকিল, ফিদে মাস্টার নাইম হকের মতো আরও দাবাড়ু এবার দলই পাননি। দল সংখ্যা কম আবার অনেক ভালো দাবাড়ু খেলতে পারেননি ফলে এবারের লীগের মান ও আকর্ষণ দু’টিই ছিল কম। ফেডারেশনের নতুন কমিটির জন্য যা খানিকটা বিব্রতকরই।