ঢাকা, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, সোমবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৬ হিঃ

খেলা

তবে কেন নেয়া হলো বিজয়কে!

স্পোর্টস রিপোর্টার
২৮ এপ্রিল ২০২৫, সোমবার
mzamin

বাকি ছিল দুই ম্যাচ, নামের পাশে ৮১১ রান! ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে শেষ পর্যন্ত কোথায় থামবেন এনামুল হক বিজয়, এমন আলোচনাও শুরু হয়েছিল। ঠিক তখনই হুট করে তাকে উড়িয়ে নেয়া হয় চট্টগ্রামে জাতীয় দলের টেস্ট শিবিরে। যেখানে সিরিজের প্রথম টেস্ট হেরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পিছিয়ে পড়েছে টাইগাররা। ব্যাটাররা ব্যর্থ হয়েছেন প্রথম ম্যাচে। সেখানে বিজয়কে দলে ভিড়িয়ে শক্তি বাড়ায় নির্বাচকরা। কিন্তু গতকাল ম্যাচের আগে জাতীয় দলের হেড কোচ ফিল সিমন্স বলেন, এই মুহূর্তে বিজয়কে খেলানোর পরিস্থিতি নেই। ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে বিজয়কে তড়িঘড়ি করে দলে ডাকা হলো কেন! গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের হয়ে নিজের শেষ দুই ম্যাচে পরপর দুটি সেঞ্চুরি করেন বিজয়। পরের দিনই তাকে যেতে হয় চট্টগ্রাম। যেখানে মাত্র দুই দিনের অনুশীলনে তাকে হয়তো নেমে যেতে হবে সাদা পোশাক লাল বলের কঠিন চ্যালেঞ্জে। সাদা বলে টানা খেলতে থাকা বিজয়কে আচমকা লাল বলের ক্রিকেটে ডাকা নিয়ে হয় বিস্তর সমালোচনা। অনেকে দাবি করেন, প্রিমিয়ার লীগে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবকে সুবিধা করে দিতেই বিজয়কে জাতীয় দলে নেওয়া হয়েছে। কারণ, গাজী গ্রুপের ম্যাচ বাকি ছিল মোহামেডানের বিপক্ষে। বিজয়ের অনুপস্থিতিতে ওই ম্যাচে মোহামেডানের কাছে শেষ বলে গার দেখে গাজী গ্রুপ।
বিজয়কে দলে ডাকা নিয়ে যে বিস্তর সমালোচনা হয়েছে সেটা যে অমূলক ছিল না সেটাই যেন শোনা গেল টাইগারদের হেড কোচ সিমন্সের কণ্ঠে। এমনিতে বাংলাদেশ ক্রিকেটে আদর্শগত ভাবনার চর্চা খুব একটা দেখা যায় না। জোড়াতালি দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার ব্যাপারটিই এখানে থাকে বেশি। এ প্রসঙ্গে সিমন্স বলেন, ‘না, এটি আদর্শ নয়। কিন্তু বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের টুর্নামেন্টগুলো এভাবে সাজানো। চার দিনের টুর্নামেন্ট বছরের শেষ দিকে খেলা হয়। এখন ডিপিএলের (ঢাকা প্রিমিয়ার লীগ) সময়। এই বিষয়ে আমাদের কিছু করার ছিল না। আমাদের উদ্বোধনী জুটি তো বেশ কিছুদিন ধরেই সমস্যার কারণ।’
ঢাকা প্রিমিয়ার লীগের চলতি আসরে প্রথম দুই ম্যাচে শূন্য রানে আউট হওয়ার পরও প্রথম ১৪ রাউন্ড শেষে বাকি সবাইকে ছাড়িয়ে অভিজ্ঞ উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান বিজয়। চারটি করে সেঞ্চুরি ও ফিফটিতে ৭৯.৪৫ গড়ে বিজয়ের সংগ্রহ ৮৭৪ রান। সর্বশেষ জাতীয় ক্রিকেট লীগেও রান করেছেন বিজয়। ১৩ ইনিংসে ১ সেঞ্চুরির সঙ্গে ৬ ফিফটিতে ৭০০ রান করে আসরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন খুলনা বিভাগের এই ব্যাটার। চট্টগ্রাম টেস্টে সুযোগ পেলে প্রায় তিন বছর পর নতুন জীবন পাবে বিজয়ের সাদা পোশাকের ক্যারিয়ার। ২০২২ সালের জুনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সবশেষ টেস্ট খেলেছিলেন ৩২ বছর বয়সী ব্যাটার। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে বিজয়ের লাল বলের ক্যারিয়ার, আর অমিত হাসানের মতো ক্রিকেটার! যে আসরে বিজয়ের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান, সেই জাতীয় ক্রিকেট লীগে সর্বোচ্চ ৭৮৬ রান অমিতের। ঘরের মাঠ, প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে এমন সিরিজে তো নির্বাচকরা একজন তরুণকে সুযোগ দিতে পারতো। কিন্তু সেখানে ডাকা হলো বিজয়কে, যিনি কিনা ২০১৩ সালে অভিষেক হলেও টেস্ট ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত ৫টির বেশি ম্যাচ খেলতে পারেননি। ২০১৪ সালের পর ২০২২ সালে টেস্ট দলে ফেরেন বিজয়। সেবারও দলে টিকে থাকার মতো কিছু করতে পারেননি। 
সব মিলিয়ে ৫ টেস্টের ক্যারিয়ারে বলার মতো কিছু করতে পারেননি এনামুল। ১০ গড়ে তার সংগ্রহ মাত্র ১০০ রান। সর্বোচ্চ ইনিংস মাত্র ২৩ রানের।
সিমন্স কিন্তু আরও একবার বাংলাদেশ ক্রিকেটের অপ্রিয় বাস্তবতার কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন। এই যে একজন ক্রিকেটার ছন্দে থাকলেই তাকে যে কোনো ফরম্যাটেই দলে ডাকা এটা যে আদর্শ নয় এটাও বলেছেন তিনি। বাংলাদেশের নির্বাচকরা যদিও প্রতিপক্ষ আর ঘরের মাঠ বিবেচনা করেন না, সিদ্ধান্ত নেন মুখস্ত কৌশলে। অন্যান্য দেশ এসব সিরিজে তরুণদের সুযোগ দেয় সেখানে বাংলাদেশের নির্বাচকরা ১৩ বছরে ৫ টেস্ট খেলা ব্যাটারকে ফিরিয়ে বঞ্চিত করে তরুণদের।
আরও একটা প্রশ্ন সিরিজের মাঝপথে একজন ক্রিকেটার দলে অন্তর্ভুক্ত হলো কিন্তু সেটা কি কোচ জানতেন না! আদর্শ কী আদর্শ নয় সেটা বললেন কেন। 

খেলা থেকে আরও পড়ুন

খেলা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status