বিশ্বজমিন
গাজায় ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতাল ঘিরে রেখেছে ইসরাইলি ট্যাংক, নিহত আরও ১২
মানবজমিন ডেস্ক
(১ বছর আগে) ২০ নভেম্বর ২০২৩, সোমবার, ৪:০১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০২ পূর্বাহ্ন

সোমবার সকাল থেকেই গাজায় ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতাল ঘিরে ফেলে ট্যাংক। সেখানে ইসরাইলের সরাসরি হামলায় কমপক্ষে ১২ জন নিহত হয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে ৭ই অক্টোবরের পর ইসরাইলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ১৩,০০০ ছাড়িয়ে গেছে। অন্যদিকে গাজার সবচেয়ে বড় আল শিফা হাসপাতালে হামাসের একটি দীর্ঘ টানেলের সন্ধান পাওয়ার দাবি করেছে ইসরাইল। তারা বলেছে, প্রায় ১০ মিটার একটি সুড়ঙ্গের সন্ধান পেয়েছে। এর একটি ভিডিও-ও প্রকাশ করেছে। তবে গাজায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিচালক এমন দাবিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা একে পুরো মিথ্যা বলে দাবি করেছেন। ওদিকে লোহিত সাগরে ইসরাইলের সঙ্গে যোগসূত্র আছে এমন একটি কার্গো জাহাজ জব্দ করেছে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা। এর দুই ডজন ক্রুকে জিম্মি করেছে তারা। এর সঙ্গে ইরানের যোগসূত্র থাকার অভিযোগ করেছে ইসরাইল। তবে ইরান এ অভিযোগকে প্রত্যাখ্যান করেছে। এ নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই যুদ্ধের বিস্তার ঘটতে পারে। গাজা থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক হিশাম জাকুট বলেছেন, রাফাহ সীমান্ত এলাকার কাছে একটি বাড়িতে বিমান থেকে হামলা করেছে ইসরাইল। সেখানে অনেক মানুষ হতাহত হয়েছেন। তিনি আরও বলেছেন, ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতাল এখন পুরোপুরি ইসরাইলি সেনাদের দখলে। আল শিফা হাসপাতাল থেকে কিছু মেডিকেল স্টাফকে উদ্ধার করে সরিয়ে নেয়া হয়েছে ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালে। উত্তরাঞ্চলের বেইত হানুন থেকে ইসরাইলি ট্যাংক ও সমরযান সরিয়ে নেয়া হয়েছে এই হাসপাতালে। এ হাসপাতালকে আর্টিলারি শেলের টার্গেট করেছে। এর আশপাশে কেউ নড়াচড়া করলে তাকেই গুলি করছে।
অন্যদিকে বাড়িঘর বিধ্বস্ত মানুষগুলো তাঁবুতে বসবাস করছেন। কিন্তু ভারি বর্ষণ ও প্রবল বৃষ্টির কারণে তাঁবুতে বসবাস কঠিন হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালের পরিস্থিতিকে বিপর্যয়কর বলে গাজা থেকে খবর দিয়েছেন আরেক সাংবাদিক ইসমাইল আল-ঘোল। তিনি বলেছেন, এই হাসপাতালটিও মানুষে পূর্ণ। এতে আছেন কমপক্ষে ৬০০০ মানুষ। এর মধ্যে আছেন স্টাফ, রোগী এবং আশ্রয় হারানো মানুষজন। গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে রোগীদের স্থানান্তর করা কঠিন হয়ে পড়েছে। কারণ, ওই এলাকার দিকে কেউ গেলেই তাকে টার্গেট করছে ইসরাইলি বাহিনী।
ওদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষক দোহা ইনস্টিটিউট ফর গ্রাজুয়েট স্টাডিজের ইব্রাহিম ফ্রেইহাত বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র শক্তির যে শূন্যস্থান সৃষ্টি করেছে, চীন আন্তর্জাতিক ভূমিকা নিয়ে তা পূরণের ভূমিকা নিয়েছে। এ জন্যই বেইজিংয়ে আরব ও মুসলিম বিশ্বের নেতারা একে অন্যকে উন্মুক্ত স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই ভূমিকায় চীনের খুব আগ্রহ আছে। ইসরাইলের সঙ্গে তাদের শক্তিশালী সম্পর্ক আছে। ফিলিস্তিনিদের প্রতি এবং আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার প্রতি তাদের আস্থা আছে। এর মধ্য দিয়ে তিনি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে চীনের ভেটো ক্ষমতার দিকে ইঙ্গিত করেছেন।
অন্যদিকে ৭ই অক্টোবর ইসরাইলে সঙ্গীতের উৎসবে হামাসের হামলার সঙ্গে প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ও তার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জড়িয়ে যে বক্তব্য দিয়েছে ইসরাইল, তার নিন্দা জানিয়েছেন ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সদস্য আহমেদ মাজদালানি। তিনি বলেছেন, অযাচিতভাবে গাজায় চলমান যুদ্ধে ফাতাহ পার্টিকে টেনে নেয়ার চেষ্টা করছে ইসরাইল। তিনি আরও বলেন, ইসরাইলিরা সবাই বলতে চাইছে- সবাই সন্ত্রাসী। এদের কোনো রাষ্ট্র পাওয়ার অধিকার নেই। ফলে এটাকে শেষ যুদ্ধ হিসেবে দেখছে ইসরাইল। রোববার প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, গাজা সীমান্ত বেড়ার কাছে একটি কনসার্টে হামাস ইসরাইলিদের হত্যা করেছে এ কথা প্রত্যাখ্যান করেন আব্বাস ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ।