ঢাকা, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বিশ্বজমিন

যুক্তরাষ্ট্র-চীন সংঘাত হবে বিশ্বের জন্য অসহনীয় বিপর্যয়

মানবজমিন ডেস্ক
৫ জুন ২০২৩, সোমবার
mzamin

যুক্তরাষ্ট্র-চীন যখন তীব্র বিরোধ, ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি দ্রুত বদলে যাচ্ছে, তখন আবার কি এই দুই পরাশক্তি নিজেদের ভুল শুধরে নেয়ার উদ্যোগ নিচ্ছে! সিঙ্গাপুরে সাংগ্রি-লা ডায়ালগে চীনের নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লি শ্যাংফুর বক্তব্য যেন সে কথারই ইঙ্গিত দিচ্ছে। এই সম্মেলন এশিয়ার নিরাপত্তা সম্মেলন বলে পরিচিত। এতে চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রোববার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধ হবে এক অসহনীয় বিপর্যয়। কিন্তু তার দেশ সেই যুদ্ধ বা সংঘাতের পরিবর্তে সংলাপে আগ্রহী। যুক্তরাষ্ট্রও এই সামিটের আগে চীনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছিল। কিন্তু লি শ্যাংফুর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে হয়তো চীন তাতে সায় দেয়নি। কিন্তু দুই দেশই যে নিরাপত্তা নিয়ে একত্রে কাজ করতে আগ্রহী তার প্রকাশ পেয়েছে। লি শ্যাংফু বলেছেন, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রকে একত্রে বেড়ে ওঠার জন্য বিশ্বটা অনেক বড়।

অর্থাৎ তিনি দুই দেশকে এক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে সরাসরি সংলাপের প্রস্তাব নাকচ করে দেয়ার কয়েকদিন পরে তিনি এ মন্তব্য করলেন। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

বিজ্ঞাপন
প্রতিরক্ষামন্ত্রী হওয়ার পর এটাই প্রথম উল্লেখযোগ্য কোনো আন্তর্জাতিক সম্মেলন লি শ্যাংফুর জন্য। তিনি বলেন, চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সিস্টেমের দিক দিয়ে অনেক পার্থক্য আছে। 

এ ছাড়া অন্য অনেক দিক দিয়ে ভিন্নতা আছে। কিন্তু দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে বৃদ্ধি করতে এবং সহযোগিতাকে আরও গভীর করার ক্ষেত্রে দুই পক্ষকে অভিন্ন ক্ষেত্র এবং স্বার্থ খোঁজা থেকে বিরত থাকা উচিত নয়। এটা অনস্বীকার্য যে, চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কঠোর একটি যুদ্ধ বা সংঘাত বিশ্বের জন্য অবশ্যই হবে একটি অসহনীয় বিপর্যয়। ১৯৮৯ সালের তিয়েন আন মেন স্কয়ারে রক্তপাতের ৩৪তম বার্ষিকীতে লি শ্যাংফু এই ভাষণ দেন। এ সময় তিনি ছিলেন পিপলস লিবারেশন আর্মির ইউনিফর্ম পরা। ওয়াশিংটন এবং বেইজিংয়ের মধ্যে বেশ কিছু ইস্যুতে প্রচণ্ড টানাপড়েন সৃষ্টি হয়েছে। 

এর মধ্যে আছে গণতান্ত্রিকভাবে শাসিত তাইওয়ান, দক্ষিণ চীন সাগরের সীমানা নিয়ে বিরোধ, অর্ধপরিবাহী চিপ রপ্তানিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিধিনিষেধ। সম্মেলনে এসব উত্তেজনাকে কেন্দ্র করে দুর্ঘটনার ঝুঁকি এবং ভুল বোঝাবুঝি নিয়ে ডেলিগেটরা বিতর্ক করেন যখন, তখন শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী বলেছে চীনের একটি ডেস্ট্রয়ার তাইওয়ান প্রণালির কাছে অনিরাপদভাবে চলাচল করেছে। 

স্পর্শকাতর এই প্রণালি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা ইচ্ছাকৃতভাবে যৌথ মহড়া চালিয়ে উস্কানি দিয়ে যাচ্ছে বলে সমালোচনা করছে চীনের সেনাবাহিনী। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক কমান্ড থেকে বলা হয়েছে, নিয়মিত অপারেশনের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার জাহাজ সেখানে অবস্থান নেয় সমুদ্রসীমায় স্বাধীনতার অধীনে। কানাডার প্রতিরক্ষামন্ত্রী অনীতা আনন্দ বলেন, আন্তর্জাতিক আইন যতটুকু অনুমোদন দেয়, ততটুকু এলাকায় কানাডা তার জাহাজ চালাবে। এর মধ্যে আছে তাইওয়ান প্রণালিও। 

তবে লি শ্যাংফু বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদেরকে এমন নৌ-মহড়া অনুমোদন করবে না চীন। তার বক্তব্যের পরে আঞ্চলিক বোদ্ধারা তার কাছে জানতে চান বার বার বিরোধপূর্ণ দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের বিস্তৃত নৌ-সীমানায় সেনা মোতায়েন প্রসঙ্গে। এসব প্রশ্নের সরাসরি কোনো উত্তর দেননি শ্যাংফু। অন্যদিকে মতপার্থক্য নিয়ে দুই সুপারপাওয়ারের অচলাবস্থা কাটিয়ে ওঠার জন্য যে প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল তা চীন প্রত্যাখ্যান করায় শনিবার তাদের কড়া সমালোচনা করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন।  

বিশ্বজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

বিশ্বজমিন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status