অনলাইন
সহযোগীদের খবর
কিছু সংস্কার প্রস্তাবে অভিন্ন অবস্থান ইসি ও বিএনপির
অনলাইন ডেস্ক
(৭ ঘন্টা আগে) ২৫ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবার, ৯:৪১ পূর্বাহ্ন

প্রথম আলো
দৈনিক প্রথম আলোর প্রথম পাতার খবর ‘কিছু সংস্কার প্রস্তাবে অভিন্ন অবস্থান ইসি ও বিএনপির’। প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) দায়বদ্ধ করতে কয়েকটি নতুন বিধান করার প্রস্তাব দিয়েছিল নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। এসবে আপত্তি জানিয়ে ইসি বলেছিল, এসব প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা খর্ব হবে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় নির্বাচন কমিশনের দায়দায়িত্ব নির্ধারণ–সংক্রান্ত এসব প্রস্তাবে বিএনপিও একমত হয়নি। এ ক্ষেত্রে বিএনপি ও ইসির অবস্থান অভিন্ন।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার আনার লক্ষ্যে প্রস্তাব তৈরির জন্য গত অক্টোবরে ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করে। এর একটি ছিল বদিউল আলম মজুমদারের নেতৃত্বে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। এ কমিশন গত ১৫ জানুয়ারি সুপারিশের সারসংক্ষেপ এবং ৮ ফেব্রুয়ারি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেয়। তারা ১৬টি ক্ষেত্রে দুই শতাধিক সুপারিশ করেছে।
সংস্কার কমিশনের সুপারিশের একটি ক্ষেত্র ছিল ‘নির্বাচন কমিশনের দায়বদ্ধতা’। বিদ্যমান আইনে কোথাও সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানের দায়বদ্ধতার বিষয়টি সেভাবে স্পষ্ট করা নেই। নির্বাচন কমিশনের আইনি, আর্থিক ও প্রশাসনিক প্রস্তাব কোনো মন্ত্রণালয়ের বদলে জাতীয় সংসদের স্পিকারের নেতৃত্বে একটি সর্বদলীয় সংসদীয় কমিটির কাছে উপস্থাপনের বিধান করার সুপারিশ করে সংস্কার কমিশন। এতে বলা হয়, সংসদীয় কমিটি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে প্রস্তাবগুলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পাঠাবে।
এ ছাড়া নির্বাচন কমিশনের মেয়াদকালে কমিশনারদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ উঠলে তা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে সুরাহা করার বিদ্যমান বিধান কার্যকর করা এবং মেয়াদ-পরবর্তী সময়ে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা বা শপথ ভঙ্গের অভিযোগ এলে তা তদন্ত ও ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করার জন্য সংসদীয় কমিটিকে ক্ষমতা দেওয়ার প্রস্তাব করে সংস্কার কমিশন।
সংস্কার কমিশনের এসব সুপারিশ বা প্রস্তাব নিয়ে আপত্তি আছে নির্বাচন কমিশনের। সংস্কার কমিশনের সুপারিশের সারসংক্ষেপ প্রকাশের পর গত ২৬ জানুয়ারি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেছিলেন, সংস্কার কমিশনের অনেক সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে ইসির স্বাধীনতা খর্ব হবে। সেদিন তিনি মূলত ইসির অর্থ বরাদ্দ, মেয়াদ-পরবর্তী সময়ে ইসির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ উঠলে, তা তদন্তে সংসদীয় কমিটিকে ক্ষমতা দেওয়া এবং সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণে আলাদা কর্তৃপক্ষ গঠনের সুপারিশ নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন।
পরে ১৭ মার্চ সংস্কার কমিশনের ২৮টি সুপারিশের বিষয়ে নিজেদের ভিন্নমত তুলে ধরে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে চিঠি দেয় ইসি। সেখানেও দায়বদ্ধ করার সুপারিশের সঙ্গে ভিন্নমত জানানো হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ইসি চিঠিতে বলেছে, তাদের অর্থনৈতিক দায়বদ্ধতার ক্ষেত্রে সংসদীয় কমিটিকে ক্ষমতা দেওয়া হলে উদ্দেশ্যমূলক প্রভাব বাড়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে। এ ছাড়া এটি সংসদীয় কমিটির কাজ নয়, এটি নির্বাহী কাজ। আর সংসদীয় কমিটিকে তদন্তের ক্ষমতা দেওয়া হলে ইসির স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হবে। মেয়াদ–পরবর্তী সময়ে অভিযোগ এলে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে।
বিএনপির অবস্থান
ইসিকে দায়বদ্ধ করার প্রস্তাবের বিষয়ে বিএনপির অবস্থানও ইসির মতো। গত মঙ্গলবার ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবগুলো নিয়ে বিএনপির আলোচনা হয়। সেখানে দলটি ইসিকে সংসদীয় কমিটির কাছে দায়বদ্ধ করার প্রস্তাবের সঙ্গে একমত হয়নি। বিএনপি বলছে, নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। তাদের নতুন করে সংসদীয় কমিটির কাছে দায়বদ্ধ করা ঠিক হবে না। আর এমন কোনো বিধান করাও উচিত হবে না, যাতে ইসির স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হতে পারে।
সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণে ভবিষ্যতে আলাদা একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের প্রস্তাব করেছিল সংস্কার কমিশন। এ প্রস্তাবে ভিন্নমত দিয়ে ঐকমত্য কমিশনে দেওয়া চিঠিতে ইসি বলেছিল, সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ ইসির সাংবিধানিক দায়িত্ব। এটি সরিয়ে নিলে ইসির সাংবিধানিক ক্ষমতা খর্ব হবে। ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় বিএনপিও একই ধরনের অবস্থান তুলে ধরে।
গত মঙ্গলবার ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনা শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, সংসদীয় কমিটির কাছে ক্ষমতা দেওয়া হলে নির্বাচন কমিশনের স্বাধীন সত্তায় আঘাত আসতে পারে। নির্বাচন কমিশনের মেয়াদকালে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে এবং মেয়াদ-পরবর্তী সময়ে তাদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। আর সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ ইসির সাংবিধানিক এখতিয়ার। এখানে আরেকটি বডি করা হলে একসঙ্গে দুটি সত্তা হয়ে যাবে।
ইসির দায়িত্ব–সংক্রান্ত প্রস্তাবে আপত্তি
নির্বাচন কমিশনের কিছু দায়িত্ব সুনির্দিষ্ট করে দেওয়ার প্রস্তাব ছিল সংস্কার কমিশনের। একটি হলো নির্বাচনের সুষ্ঠুতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে সত্যায়ন করা। এ প্রস্তাবে বলা হয়েছে, জাতীয় নির্বাচন শেষ হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে (ফলাফল গেজেটে প্রকাশের আগে) ইসি নির্বাচনের সুষ্ঠুতা, বিশ্বাসযোগ্যতা এবং গ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কে ‘সার্টিফাই’ করে তা গণবিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশের বিধান করতে হবে।
ইসির এ ঘোষণায় নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী কোনো রাজনৈতিক দল সংক্ষুব্ধ হলে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল বা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে অভিযোগ করতে পারবে। কাউন্সিল বা আদালত সর্বোচ্চ সাত কার্যদিবসের মধ্যে অভিযোগ নিষ্পত্তি করবে।
এ প্রস্তাবের বিষয়ে ঐকমত্য কমিশনে লিখিতভাবে ভিন্নমত জানায় ইসি। তারা মনে করে, এ প্রস্তাব অপ্রয়োজনীয়। কারণ, কমিশন সন্তুষ্ট হয়েই ফলাফলের গেজেট প্রকাশ করে। এ ধরনের বিধান করা হলে রাজনৈতিক দল অহেতুক নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার সুযোগ পাবে।
বিএনপির সূত্র জানায়, সংস্কার কমিশনের এ প্রস্তাবের সঙ্গে তারাও একমত হয়নি। দলটির যুক্তি হলো, ভোট গ্রহণের দিন প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা কেন্দ্রভিত্তিক তাৎক্ষণিক ফলাফল ঘোষণা করেন এবং রিটার্নিং কর্মকর্তারা নিজ নিজ ক্ষেত্রে এবং নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রীয়ভাবে প্রাথমিক নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণা করে। রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে চূড়ান্ত ফলাফল প্রাপ্তিসাপেক্ষে ইসি সন্তুষ্ট হয়ে গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রার্থীর নাম–ঠিকানা প্রকাশ করে থাকে। এই গেজেটই ‘সার্টিফিকেশন’। এ ক্ষেত্রে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ফলাফলের সত্যায়নের বিধান করা হলে অহেতুক জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে।
বিএনপি আরও বলেছে, নির্বাচনের সুষ্ঠুতা, নিরপেক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে কোনো রাজনৈতিক দল সংক্ষুব্ধ হলে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলে বা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে অভিযোগ দায়েরের সুযোগ সৃষ্টি করা হলে নির্বাচনী কার্যক্রম চূড়ান্তকরণে জটিলতা দেখা দেবে। রাজনৈতিক দল এ ধরনের অভিযোগ দাখিলের আইনি সুবিধা পেলে নির্বাচনী কার্যক্রম চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে না। নির্বাচনে প্রার্থী বা সংক্ষুব্ধ পক্ষের অভিযোগ দায়েরের বিধান আছে, রাজনৈতিক দলের নয়।
ইসিকে দায়বদ্ধ করা ও তাদের দায়দায়িত্ব–সংক্রান্ত সুপারিশের বিষয়ে বিএনপি ও ইসির অবস্থান অনেকটা অভিন্ন। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সালাহউদ্দিন আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, এসব বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা আছে, তারা নিজেরা চর্চা করে। তাই তারা রাজনৈতিক দলের চেয়ে এসব ভালো বোঝে। সংস্কার প্রস্তাবগুলো বিএনপি নিজেদের মতো করে বিশ্লেষণ করেছে। বিশ্লেষণে হয়তো ইসির সঙ্গে বিএনপির দৃষ্টিভঙ্গি মিলেছে। অন্য কিছু নয়।
সংস্কার কমিশনের সুপারিশ কেন
নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের মেয়াদ ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। ওই কমিশনের সূত্র জানায়, বিদ্যমান আইনে ইসিকে দায়বদ্ধ করার স্পষ্ট কোনো বিধান না থাকায় অতীতে, বিশেষ করে সর্বশেষ তিনটি জাতীয় নির্বাচনে অনেক অন্যায় করেও ইসি পার পেয়ে গেছে। এ কারণে সংস্কার কমিশন ইসিকে দায়বদ্ধ করার বিষয়ে কয়েকটি সুপারিশ করেছে।
সংস্কার কমিশনের একটি সূত্র জানায়, অতীতের নির্বাচনগুলো পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ইসি রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ওপর দায় চাপিয়ে দেয়। নির্বাচনের ফলাফলের গেজেট হয়ে যাওয়ার পর কিছু করার থাকে না, এই যুক্তি দিয়ে এসেছে ইসি। এ কারণে তারা ‘সার্টিফিকেশন’ এর প্রস্তাব করেছে।
সংসদীয় কমিটির কাছে তদন্তের ক্ষমতা দেওয়ার বিষয়ে সংস্কার কমিশন তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, ইসির জন্য এ ধরনের দায়বদ্ধতার কাঠামো অনেক দেশেই আছে। কারণ, একটি গণতান্ত্রিক দেশে কেউই দায়বদ্ধতার ঊর্ধ্বে নয়। আর দায়বদ্ধতা প্রতিষ্ঠানকে অন্যায় আচরণ থেকে দূরে রাখে।
কালের কণ্ঠ
ভোটে ‘এক্স ফ্যাক্টর’ ইসলামী দল-এটি দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ থাকুক বা না থাকুক, দেশজুড়ে নির্বাচনের আমেজ বইতে শুরু করেছে। পাড়া-মহল্লায়, গ্রামগঞ্জে চলছে ভোট নিয়ে নানা রকম আলোচনা। রাজনৈতিক দলগুলোর সম্ভাব্য প্রার্থীরা এরই মধ্যে নির্বাচনের মাঠে সরব। তাঁরা নিজ নিজ আসনে জনসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
যাঁরা দ্রুত নির্বাচন চাচ্ছেন, নির্বাচনের মাঠে তাঁরা যেমন প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তেমনি যাঁরা নির্বাচন পিছিয়ে আগে সংস্কার ও বিচারের দাবি করছেন তাঁরাও নির্বাচনের মাঠে তৎপর। রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন আসনে ভোটের হিসাব-নিকাশ এবং সম্ভাব্য প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের কাজ করছে। নির্বাচন কমিশন বলেছে, আগামী ডিসেম্বরে নির্বাচনকে মাথায় রেখে তারা প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাও পরিষ্কারভাবে বলেছেন, ‘যদি রাজনৈতিক দলগুলো কম সংস্কার চায় তাহলে ডিসেম্বরে নির্বাচন আর যদি বেশি সংস্কার চায়, তাহলে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।’
এদিকে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট একটি রোডম্যাপের লক্ষ্যে কাজ করছে বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের সূত্র ধরে বিএনপি সপ্তাহজুড়ে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে চুলচেরা আলোচনা করেছে। নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট সময় নিয়ে বর্তমানে রাজনীতির মাঠে চলছে নানা মেরুকরণ।
দেশের মানুষ ভোট দিতে চায়। নির্বাচনে তারা তাদের অধিকার প্রয়োগ করতে চায়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে ২০০৮ সালের পর এ দেশের মানুষের ভোটাধিকার হরণ করা হয়। দীর্ঘ সময় সাধারণ মানুষ ভোট দিতে পারেনি। একটি প্রজন্ম তৈরি হয়েছে, যারা বিগত তিনটি নির্বাচনে নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। ফলে দেশের মানুষ নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য মুখিয়ে আছে।
যুগান্তর
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারের সাক্ষাৎকার নিয়ে দৈনিক যুগান্তরের প্রথম পাতার খবর ‘৩০০ আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি’। প্রতিবেদন বলা হয়, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে দ্রুত নির্বাচনের পথে হাঁটবে। ৩০০ আসনে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে জামায়াত। মাঠে-ময়দানে গণসংযোগ, জনগণের দুঃখ-কষ্টে পাশে দাঁড়ানো ও অন্তর জয় করার যে দায়িত্ব-সে ক্ষেত্রে যারা প্রার্থী হিসাবে সম্ভাব্য আলোচনায় এসেছেন তাদের দিয়েছি। বর্তমানে দলের নিবন্ধনের বিষয়টি আদালতে পেন্ডিং আছে। আশা করি ন্যায়বিচার পাব এবং দাঁড়িপাল্লা প্রতীক পাব। তিনি মনে করেন, যথেষ্ট জনপ্রিয়তার অবস্থানে জামায়াত এখন সময় পার করছে। সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে জনগণ মতামত দিলে সেই ফলাফলেরই প্রতিফলন ঘটবে। জনগণ যদি ভোট দিয়ে জামায়াতকে রাষ্ট্র ক্ষমতার দায়িত্বে দেয়, তাহলে প্রত্যাশা অনুযায়ী রাষ্ট্র গঠন করা তাদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। সেভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
সম্প্রতি রাজধানীর মগবাজারে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার যুগান্তরকে একান্ত সাক্ষাৎকার দেন। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী সাক্ষাৎকারে দেশের চলমান পরিস্থিতি, সংসদ নির্বাচন, সংস্কার, নির্বাচনি প্রস্তুতি, বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক, জোট, দলের নিবন্ধন ও আওয়ামী লীগ ইস্যুসহ নানা বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন স্টাফ রিপোর্টার নূরে আলম জিকু
যুগান্তর: সম্প্রতি লন্ডনে বিএনপির দুই শীর্ষ নেতার সঙ্গে জামায়াতের দুই শীর্ষ নেতার সাক্ষাৎ হয়েছে। এ নিয়ে দলের কোনো ফোরামে আলোচনা হয়েছে কিনা?
গোলাম পরওয়ার: লন্ডনে কোনো বৈঠক হয়নি। উনি (খালেদা জিয়া) তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, আমরা দীর্ঘ প্রায় ২৫-৩০ বছর একসঙ্গে আন্দোলন করেছি। উনি রাজনৈতিক সহকর্মী, একই সঙ্গে খুবই অসুস্থ। আমরা যেমন মজলুম, উনিও মজলুম। জামায়াতে ইসলামীর আমির লন্ডনে গিয়েছিলেন অন্য কাজে, ওই সময় উনার (খালেদা জিয়া) স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নিতে গিয়েছেন। জাস্ট এটা একটা সৌজন্য সাক্ষাৎ। কুশলবিনিময় করে চলে এসেছেন। ওখানে কোনো রাজনৈতিক আলাপ হয়নি।
যুগান্তর: বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের সম্পর্ক কেমন? ভবিষ্যতে জোট করার কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা?
গোলাম পরওয়ার: বিএনপি একটি রাজনৈতিক দল। রাজনৈতিক দল হিসাবে যে বন্ধুত্বপূর্ণ ও সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক থাকার-সেটাই আছে। জোট হওয়ার মতো প্রক্রিয়া যখন এসে যাবে, তখন আমরা সিদ্ধান্ত নেব।
সমকাল
দৈনিক সমকালের প্রধান শিরোনাম ‘ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি’। খবরে বলা হয়, কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ বন্দুক হামলার ঘটনায় দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নতুন করে সংঘাতের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। পাকিস্তানের সংশ্লিষ্টতা দাবি করে ওই ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার কঠোর বার্তা দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহও ‘শক্ত ও স্পষ্ট জবাব’-এর কথা বলেছেন। অন্যদিকে পাকিস্তানও পাল্টা পদক্ষেপ নিয়ে শক্ত জবাবের হুঁশিয়ারি দিয়েছে। এ অবস্থায় প্রতিবেশী দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশ মুখোমুখি অবস্থানে চলে এসেছে। চলছে নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা।
গত মঙ্গলবার পেহেলগামে বন্দুকধারীর হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের প্রায় সবাই পর্যটক। হামলার দায় স্বীকার করে রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামে একটি সংগঠন। এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে মনে করা হয়।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানায়, পাকিস্তান বরাবরই সন্ত্রাসবাদকে প্রশ্রয় দেওয়ার কথা অস্বীকার করে আসছে। তবে তারা বলে আসছে, সার্বভৌম কাশ্মীরকে সমর্থন করে। পেহেলগামে হামলার ঘটনাটি প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা অনেকটাই বাড়িয়েছে, যারা এরই মধ্যে তিনবার যুদ্ধে জড়িয়েছে।
নাম প্রকাশ না করে ভারতের নিরাপত্তা বিশ্লেষক বলেন, কাশ্মীরকে পাকিস্তানের ‘অবিচ্ছেদ্য অংশ’ ঘোষণা ও উপত্যকার মানুষকে বীরত্বের সঙ্গে লড়াই বন্ধ না করতে সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরের আহ্বানের এক সপ্তাহ পর এ হামলার ঘটনা ঘটল। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রবিষয়ক নীতিনির্ধারক ও দক্ষিণ এশিয়া বিশেষজ্ঞ মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, অঞ্চলটির জন্য এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী একে অপরকে চোখ রাঙানি দিচ্ছে।
ইত্তেফাক
‘ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা তুঙ্গে’-এটি ইত্তেফাকের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, ভূ-স্বর্গ হিসেবে পরিচিত কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিহতের ঘটনায় পরমাণু অস্ত্রধারী দুই প্রতিবেশি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। হামলার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাঁচটি কঠোর পদক্ষেপ নেয় ভারত। পালটা জবাব হিসেবে ইসলামাবাদও গতকাল দিল্লির বিরুদ্ধে একগুচ্ছ পদক্ষেপ ঘোষণা করে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পৃথিবীর যে কোনো প্রান্ত থেকে খুঁজে এনে দোষীদের শাস্তি দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। আর পাকিস্তান পানি আটকানোর ঘটনাকে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল বলে উল্লেখ করেছে। উত্তেজনার মুহূর্তে দুই দেশের মধ্যে সামরিক পদক্ষেপের আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
পালটাপালটি পদক্ষেপ:কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর জঙ্গি হামলার পরদিন ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধুর পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত ও কূটনীতিদের বের করে দেওয়াসহ পাঁচটি পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করে। গতকাল নতুন করে ভারতে পাকিস্তানিদের ভিসা সেবাও স্থগিত করা হয়। পালটা পদক্ষেপ হিসেবে পাকিস্তানও গতকাল তার জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকে ভারতের বিরুদ্ধে আটটি পদক্ষেপ নেয়।
এগুলো হচ্ছে-ভারতের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ, ভারতীয় বিমানের জন্য পাকিস্তানের আকাশপথ বন্ধ, ওয়াগাহ সীমান্ত বন্ধ, সিন্ধুর পানি বন্ধ হলে যুদ্ধ হিসেবে দেখা হবে, সিমলা চুক্তিসহ ভারতের সঙ্গে সব দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্থগিত রাখা হতে পারে, ভারতীয়দের সব সার্ক ভিসা বাতিল (শিখ পুণ্যার্থী ছাড়া), ভারতীয়দের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশ ছাড়ার নির্দেশ, ভারতের প্রতিরক্ষা, নৌ ও বিমান বাহিনীর উপদেষ্টাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা ও ৩০ এপ্রিলের মধ্যে দেশ ছাড়ার নির্দেশ এবং ভারতীয় দূতাবাসে সদস্য সংখ্যা ৩০ জনে নামিয়ে আনা।
বণিক বার্তা
দৈনিক বণিক বার্তার প্রধান শিরোনাম ‘১০ বছরে বৈধ পথে বিদেশ গিয়ে অবৈধ হয়ে ফিরেছেন প্রায় ৭ লাখ বাংলাদেশী’। খবরে বলা হয়, বিগত ১০ বছরে বিভিন্ন দেশ থেকে অবৈধ হয়ে বাংলাদেশে ফেরত এসেছেন প্রায় সাত লাখ অভিবাসী। যদিও তাদের সবাই বিদেশ গিয়েছিলেন বৈধ পথে। বিদেশ যেতে বাংলাদেশী কর্মীদের গড়ে খরচ হয় প্রায় ৫ লাখ টাকা। এ হিসাবে অবৈধ হয়ে ফেরত আসা প্রবাসীদের পরিবারের অন্তত ৩৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। ভিসা ফি, বিমান ভাড়া বাদ দিয়ে ব্যয় হওয়া অর্থের পুরোটাই রিক্রুটিং এজেন্ট কিংবা দালালদের পকেটে ঢুকেছে। আর ভাগ্য ফেরানোর আশায় বিদেশ যাওয়া শ্রমিকরা ফিরছেন পরিবারের বোঝা হয়ে।
কুমিল্লার লালমাই উপজেলার ভূলইন দক্ষিণ ইউনিয়নের ইকরামুল হক ৫ লাখ টাকা খরচ করে ২০২৩ সালে সৌদি আরব গিয়েছিলেন। নিজের সঞ্চয়, ঋণ ও আত্মীয়দের থেকে ধার করা টাকা তুলে দেন দালালের হাতে। যদিও অবৈধ হয়ে জেল খেটে দুই বছরের মধ্যেই দেশে ফেরত আসতে হয়েছে তাকে।
ইকরামুল হক বণিক বার্তাকে বলেন, ‘ফ্রি ভিসায় সৌদি আরব গিয়েছিলাম। দালালদের কথা ছিল আকামা হবে, ভালো চাকরি পাওয়া যাবে। কিন্তু সবকিছুই ছিল মিথ্যা প্রলোভন। সৌদি যাওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই অবৈধ হয়ে যাই। এরপর জেল খেটেছি। শূন্য হাতে দেশে ফিরে আসতে হয়েছে।’
বৈধ পথে বিদেশগামীদের তথ্য বিশ্লেষণ করে বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)। সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এক দশকে ৮০ লাখ ৪৪ হাজার ৬৫০ জন বাংলাদেশী অভিবাসী শ্রমিক হিসেবে বিদেশ গেছেন। সরকারি এ সংস্থার কাছে বিদেশগামীদের সংখ্যা থাকলেও কতজন ফিরে আসছেন, তার কোনো তথ্য নেই। তবে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড ও বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের তথ্যমতে, এ ১০ বছরে বিভিন্ন দেশ থেকে অবৈধ হয়ে আউটপাস নিয়ে ৬ লাখ ৭৩ হাজার ৫৭০ বাংলাদেশী দেশে ফিরেছেন। বৈধ পথে বিদেশ গিয়ে অবৈধ হয়ে ফিরে আসাদের এ সংখ্যা প্রতি বছরই বাড়ছে।
আজকের পত্রিকা
‘ব্যয়বহুল চিকিৎসায় স্বাস্থ্যবিমা’-এটি দৈনিক আজকের পত্রিকার প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, জটিল ও দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে গিয়ে অনেক মানুষ দরিদ্রতার মধ্যে পড়ছে। বিষয়টি বিবেচনায় ব্যয়বহুল চিকিৎসায় স্বাস্থ্যবিমা চালুর পক্ষে স্বাস্থ্য খাতের সংস্কার কমিশন। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এ প্রস্তাব দিয়ে শুরুতে চার থেকে পাঁচটি ব্যয়বহুল চিকিৎসার জন্য বিমা-সুবিধা দিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে পরামর্শ দেবে কমিশন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্যানসার, ডায়ালাইসিস, কার্ডিয়াক সার্জারি ও পক্ষাঘাত।
সংস্কার কমিশন বলেছে, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সরকারের কাছে এই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। প্রতিবেদনে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার বাইরে ব্যয়বহুল চিকিৎসাগুলোকেও অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হবে। সংস্কার কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
স্বাস্থ্যবিমার প্রস্তাবকে ভালো বললেও স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, এটি বাস্তবায়নের উপায়ও কমিশনকে বলতে হবে। জাতীয় স্বাস্থ্য তহবিল ছাড়া সর্বজনীন স্বাস্থ্যবিমা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।
গত বছরের ১৮ নভেম্বর ১২ সদস্যের স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। এই কমিশনের প্রধান করা হয়েছে জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খানকে। প্রতিবেদন দিতে কমিশনকে প্রথমে ৯০ দিন সময় বেঁধে দেওয়া হয়। পরে গত ফেব্রুয়ারিতে প্রথম দফায় ৩০ মার্চ পর্যন্ত এবং মার্চের শেষে দ্বিতীয় দফায় ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়।
কমিশনের অন্তত তিন সদস্য আজকের পত্রিকাকে জানান, তাঁদের মাঠপর্যায়ের সব কার্যক্রম মার্চের মধ্যেই শেষ হয়েছে। জেলা, বিভাগ, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, চিকিৎসা শিক্ষা, ওষুধ, জনস্বাস্থ্য, মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্যের বিষয়সহ বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে সংলাপ করা হয়েছে।
দেশ রূপান্তর
‘নির্বাচন আদায়ে সব দলের সঙ্গে ঐক্য গঠনে বিএনপি’-এটি দৈনিক দেশ রূপান্তরের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই সম্পন্ন করতে সর্বদলীয় ঐক্য ও জনমত গঠন করতে চায় বিএনপি। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যের ভিত্তিতে এই লক্ষ্যে দলটি ডান-বাম-ইসলামি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনা করছে। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বিএনপি অন্তত সাতটি দল ও জোটের সঙ্গে ইতিমধ্যে বৈঠক সেরেছে।
এসব বৈঠক সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বড় ধরনের ঐক্য গড়ে তুলতে চায় বিএনপি।’
তথ্য বলছে, ১৯ এপ্রিল ১২ দলীয় জোটের নেতাদের সঙ্গে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকের মধ্য দিয়ে এ প্রক্রিয়া শুরু করে দলটি। ওই দিনই এলডিপির সঙ্গেও আলাদা বৈঠক হয়। এতে বিএনপির নেতৃত্ব দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও সেলিমা রহমান। বিএনপি নেতারা ২০ এপ্রিল চা-চক্রে অংশ নেন সিপিবি, বাসদসহ বামপন্থি দলগুলোর সঙ্গে। ওই দিনই গণ অধিকার পরিষদের সঙ্গেও বৈঠক করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল।
২১ এপ্রিল সন্ধ্যায় লেবার পার্টির নেতাদের সঙ্গে, পরে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সঙ্গে বৈঠক করেন নজরুল ইসলাম খান ও সেলিমা রহমান। গত বুধবার বিকেলে এনডিএম ও গণফোরামের সঙ্গে, গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে বাংলাদেশ জন অধিকার পার্টি, ওই দিনই পরে বাম গণতান্ত্রিক ঐক্যের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপি নেতারা। এ ছাড়া গত মঙ্গলবার ফ্যাসিবাদবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের মিত্র গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে বিএনপি অনানুষ্ঠানিক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে করেছে।
বাংলাদেশ প্রতিদিন
দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রথম পাতার খবর ‘পাল্টে যাচ্ছে জামায়াতের কৌশল’। প্রতিবেদনে বলা হয়, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ভোটের মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষপর্যায়ের নেতারা। যোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা বিবেচনায় নিয়ে বিভিন্ন আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নামও ঘোষণা করছেন তারা। তবে দলের চিরচরিত ভোটের কৌশল পাল্টে এবার নতুন কৌশল নিয়ে মাঠে নেমেছে জামায়াত। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের পাশাপাশি ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধি করছে দলটি। আসনভিত্তিক, জেলা, বিভাগ ও কেন্দ্রীয়ভাবে অন্য ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করছেন নেতারা।
জামায়াতে ইসলামীর ব্যানারে আগামী নির্বাচন করার জন্য দলটির পক্ষ থেকে আহ্বানও জানানো হচ্ছে। ভোট ব্যাংক বাড়াতে জামায়াতের নতুন এ কৌশল ইতোমধ্যে সাড়াজাগিয়েছে। দলটি স্থানীয় পর্যায়ে দলমত ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের অভাব অভিযোগের সুরহা করছে। অন্যায় অত্যাচার নিপীড়নের শিকার অসহায় মানুষরা ন্যায়বিচার পাওয়ার আশায় ছুটে যাচ্ছে জামায়াতের নেতাদের কাছে। প্রত্যাশিত সাহায্য সহযোগিতা পেয়ে তাদের অনেকেই ক্রমেই জামায়াতে ইসলামীর প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে উঠছেন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ভোটের মাঠে জামায়াতের সমর্থন অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় ঊর্ধ্বমুখী।
জামায়াতের শীর্ষপর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনায় স্পষ্ট যে, দলটির মূল লক্ষ্য আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইতিহাস সৃষ্টি করা। সেজন্য এখন থেকে মানবিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জনমত তৈরির সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে দলটি। সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় নানান দলীয় ও সামাজিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন। পাশাপাশি হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ অন্য ধর্মাবলম্বী ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়েছেন দলটির নেতারা। করছেন মতবিনিময় সভা ও সমাবেশ। তাদের বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন।