ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৬ হিঃ

অনলাইন

আনন্দবাজারের রিপোর্ট

নব্য আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি, নেতৃত্বে থাকবেন না শেখ হাসিনা?

(২ দিন আগে) ১৬ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার, ৮:০৯ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১২:২৭ পূর্বাহ্ন

mzamin

নতুন কৌশল। আওয়ামী লীগ থাকবে, নেতৃত্বে শেখ হাসিনা থাকবেন না। তাঁর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত নেতারাও বাদ যাবেন। আওয়ামী লীগের পরিচিত কিছু নেতা-নেত্রীকে সামনে রেখে নব্য আওয়ামী লীগ বা তথাকথিত পরিচ্ছন্ন আওয়ামী লীগকে বাজারে আনার একটি পরিকল্পনা বাংলাদেশে বেশ এগিয়েছে। আওয়ামী লীগের বর্তমান নেতৃত্ব এই প্রয়াসকে ‘প্রতারণা’ ও তাঁদের ‘দলকে ধ্বংস করার চক্রান্ত’ বলে আখ্যা দিচ্ছেন। ভারতের কূটনীতিকদের একাংশও মনে করেন, হাসিনাকে বাদ দিয়ে নব্য আওয়ামী লীগ গঠিত হলে দিল্লির পক্ষে তা সুখকর হবে না। কারণ এই পরিকল্পনায় বাংলাদেশের যে সব আওয়ামী লীগ নেতা-নেত্রীর নাম উঠে আসছে, তাঁদের ভাবমূর্তি আদৌ পরিচ্ছন্ন নয়, তার উপরে পাকিস্তান-ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিতি রয়েছে কয়কে জনের। ভারতের এক সাবেক কূটনীতিকের কথায়, “বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে দিল্লির কিছু করণীয় নেই। কিন্তু আওয়ামী লীগ ঐতিহাসিক ভাবে ভারতের বন্ধু ও আস্থাভাজন রাজনৈতিক শক্তি। তার নেতৃত্বও পাকিস্তান-বান্ধবদের হাতে চলে গেলে ভারতের পক্ষে তা বিপর্যয়ের চেয়ে কম কিছু হবে না।”

জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া ছাত্রদের সদ্যগঠিত রাজনৈতিক দল এনসিপি (জাতীয় নাগরিক দল)-র নেতা হাসনাত আবদুল্লার একটি ফেসবুক পোস্ট নিয়ে কয়েক সপ্তাহ আগে হইচই হয়েছিল বাংলাদেশে। সেই পোস্টে হাসনাত অভিযোগ করেছিলেন, সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ় জ়ামান একান্ত বৈঠকে তাঁদের বলেছিলেন— প্রাক্তন স্পিকার শিরিন শরমিন চৌধুরী, ঢাকার প্রাক্তন মেয়র শেখ ফজলে নুর তাপস, প্রাক্তন সাংসদ সাবের হোসেন চৌধুরীর মতো ‘পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির’ নেতাদের নেতৃত্বে ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ নির্বাচনে অংশ নিলে তাঁদের মেনে নিতে হবে। হাসনাত লেখেন, ‘আমাদের বলা হয়— রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ যাঁদের দিয়ে করা হবে, তাঁরা এপ্রিল-মে থেকে শেখ পরিবারের অপরাধ স্বীকার করবেন, হাসিনাকে অস্বীকার করবেন এবং তাঁরা বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ করবেন এমন প্রতিশ্রুতি নিয়ে জনগণের সামনে হাজির হবেন।’

আওয়ামী লীগের এক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলছেন, “হাসনাতের পোস্টের আগেই আমরা এই চক্রান্তের বিষয়টি জানতে পারি। নামগুলিও নতুন নয়। এই ভাবে তারা দেখাতে চায়, নির্বাচনে আওয়ামী লীগকেও অংশ নিতে দেওয়া হয়েছে। তবে সেটা হবে প্রতারণা। মানুষকে এ ভাবে ভুল বোঝানো যায় না।” এই নেতা বলেন, “২০০৬-এও সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতা দখলের পরে শেখ হাসিনাকে বাদ দিয়ে অন্য কিছু নেতাকে নিয়ে একটা আওয়ামী লীগ গঠনের চেষ্টা করেছিল পশ্চিমি শক্তি। তা ব্যর্থ হয়। এ বারেও তাই হবে।” ওই নেতার মতে, ভারতের কংগ্রেসের যেমন গান্ধী পরিবার, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকের কাছেও শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের উপরে অগাধ আস্থা ও ভরসা। রাজনীতিতে দুই পরিবারের ত্যাগ ও সাফল্য কম নয়। রাহুল গান্ধী যেমন ঠাকুমা ও বাবাকে হারিয়েছেন, শেখ হাসিনার বাবা-মা, ভাই-সহ গোটা পরিবার খুন হয়েছে। ওই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, “চক্রান্তকারীরাও জানে, হাসিনাহীন আওয়ামী লীগ টিকবে না।আদতে আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করাই তাদের লক্ষ্য।”

কলকাতায় আত্মগোপনে থাকা এক আওয়ামী লীগ নেতা জানাচ্ছেন, আপাতত এই ‘রিফাইন্ড’ চক্রান্তই তাঁদের সবচেয়ে বড় মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন এলাকার আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে, হাসিনার বিরুদ্ধে তোপ দাগলে তাঁদের নিরাপত্তার গ্যারান্টি দেওয়া হবে। এলাকায় ফিরে নির্বাচনে অংশ নিতেও দেওয়া হবে। অন্যথায় তাঁদের ভবিষ্যৎ হবে অন্ধকার। কয়েক জন বিএনপি নেতা এবং সেনাদের বশংবদ ব্যবসায়ী ফোন করে এই প্রস্তাব দিচ্ছেন বলে তিনি জানান। হাসিনা-ঘনিষ্ঠ এই নেতা জানাচ্ছেন, কলকাতায় আশ্রয় নেওয়া কিছু নেতাও এই দিকে ঝুঁকছেন বলে তাঁরা খবর পেয়েছেন। এঁরা অন্যদেরও টানতে চেষ্টা করছেন। ওই নেতা বলেন, “যাঁদের ‘ক্লিন’ বলা হচ্ছে, তাঁদের কেউই পরিচ্ছন্ন নন। এঁদের অনেকে চিন বা পাকিস্তানের সঙ্গে ব্যবসা করেন। সে সব বাঁচাতেই দলের বিরুদ্ধে চক্রান্তে রাজি হয়েছেন।”

কী ভাবে এই চক্রান্তের মোকাবিলা করছে আওয়ামী লীগ? দলের ওই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জানাচ্ছেন, জেলায় জেলায় ভার্চুয়াল মিটিং করছেন নেতৃত্ব। সেই মিটিংয়ে শেখ হাসিনা নিজে যুক্ত হচ্ছেন। ঘণ্টা কয়েক ধরে তিনি কর্মীদের কথা শুনছেন। তাঁদের বলছেন, “এদের দিন ফুরিয়ে আসছে। আমি যখন বেঁচে রয়েছি, শীঘ্রই ফিরব। কর্মীদের উপরে হওয়া প্রতিটি নির্যাতনের বিচার করব।” ৬৪টি জেলার মধ্যে ২৩টি জেলার কর্মীদের সঙ্গে এই বৈঠক শেষ হয়েছে। হাসিনা বলছেন, “আমি দেশ ছাড়তে চাইনি। ইস্তফাও দিইনি। আমাকে জোর করে বিমানে তুলে দেশছাড়া করা হয়েছে। চক্রান্ত করে আমার সরকার ফেলা হয়েছে। এর শেষ দেখে ছাড়ব।”

 

পাঠকের মতামত

নেতা যেই হোকনা কেন, দলটা চালায় ভারতের 'র' ।

Monir
১৭ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৭:০০ অপরাহ্ন

বাংলার জমিনে হাসিনা, আওয়ামিলীগ, রিফাইন্ড আওয়ামিলীগ এগুলা জনগণ আর খাবে না। তারা বিগত দিনে জনগণকে যা উপহার দিয়েছে জনগণ তা আর ভুলবে না। জনগণ আবারো আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের ফাঁদে পাঁ দিবে না। এটাই শেষ কথা।

Mohammed Rafiqul Isl
১৭ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১২:৩৫ অপরাহ্ন

এমন একটা নিৎকৃষ্ট স্বৈরাচার আবার এসে রাজনীতির হাল ধরবে এমন চিন্তা যে দলের কর্মীরা করে নিঃসন্দেহে তারা ্মানসিক ভাবে ভারসাম্য হীন ।পুরু শেখ পরিবার দুর্নীতি গ্রস্থ , এরা আর কখনোই এদেশের রাজনীতিতে ফিরতে পারবে না । এ দলের নেতারা যে ভাবে দুর্নীতি করেছে তাতে মনে হয় এরা রাজনীতি মানে বুঝে লুটপাট করা । এ দলটাকে নিষিদ্ধ করা এখন সময়ের দাবী ।

zakiul Islam
১৭ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৯:৩৭ পূর্বাহ্ন

আওয়ালীগ বাংলাদেশে আর চলবে না।

হেদায়েত উল্লাহ
১৭ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৯:২৪ পূর্বাহ্ন

শেখ পরিবারের পুরোটাই যে চোরের পরিবার আনন্দবাজার কি তা জানে!???

বীর বাংগালী
১৭ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৯:১৪ পূর্বাহ্ন

আওয়ামীলীগের সব ইন্ডিয়ান জারজ

Samad
১৭ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৬:০০ পূর্বাহ্ন

বিষের বোতল কাঁচের হলেও যা প্লাস্টিকের হলেও তা।

অমিত শাহ
১৭ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৫:৩৩ পূর্বাহ্ন

এদেশ আমাদের। জনগন মতামত দিবে। রাজনৈতিক দলগুলো যদি অন্য দেশের উপর নির্ভর করে বা তারা যদি বাংলাদেশ পরিচালনা করতে চায় তাহলে তো আমরা পরাধীন রয়ে গেলাম?তাহলে ভারত আমাদের চালাবে নাকি পাকিস্তান? অনেক হয়েছে আর না।

Moniruzzaman Rimon
১৭ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১২:২৮ পূর্বাহ্ন

আওয়ামি লিগ আর ভারতের দিন শেষ আনন্দবাজারির প্রপাগান্ডা আর চলবে না.....

Haider Ali
১৬ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার, ১১:৫৩ অপরাহ্ন

এক দুর্বৃত্ত অন্য দুর্বৃত্তের জন্য কান্নাকাটি করতে পারে, তাই বলে দুর্বৃত্তায়ন শেষ হবে না। বরং দুর্বৃত্ত এইপথে হাঁটছে বাড়তি নষ্টামী জমা করতে।।

Nazma Mustafa
১৬ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার, ৯:১৯ অপরাহ্ন

রিপোর্ট অনুযায়ী শেখ হাসিনার অনুসারি যাদের প্রায় সবাই পলাতক বা জেলে তারা এখনো বারত নির্ভর হয়ে রাজনীতি করতে চায় যা বাংলাদেশে আর বেশিদুর আগাতে পারবে বলে মনে হয়না। আওমীলীগ ক্লিন ইমেজের কেউ অবশিষ্ট নাই থাকলে অবশ্যই তারা রাজনীতিতে সক্রিয় হতো জনগনের কাছে তাদের মনোভাব প্রকাশ করার চেস্টা করতো

Arifa Sultana
১৬ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার, ৯:১৫ অপরাহ্ন

REWARD - Tk. 1 Lakh: For arrest of Sheikh Hasina and bringing her to justice.

Nam Nai
১৬ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার, ৮:৫৬ অপরাহ্ন

আনন্দ বাজারিদের খবরে বিশ্বাস নেই। ওদের দেশে সমস্যার অন্ত নেই। তার পর বাংলাদেশকে নিয়ে খাওয়া ঘুম বাদ। নেই কাজ ত খই ভাজ

Professor Rahman
১৬ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার, ৮:২০ অপরাহ্ন

অনলাইন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

অনলাইন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status