ঢাকা, ২৫ জুন ২০২৫, বুধবার, ১১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৭ জিলহজ্জ ১৪৪৬ হিঃ

অনলাইন

খোঁজ নেই ইরানের ৪০০ কেজি ইউরেনিয়ামের, যুক্তরাষ্ট্রের কপালে চিন্তার ভাঁজ

মানবজমিন ডিজিটাল

(৬ ঘন্টা আগে) ২৪ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার, ৭:০২ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১২:০৭ পূর্বাহ্ন

mzamin

গত সপ্তাহে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় ছয়টি ‘বাঙ্কার বাস্টার’  বোমা নিক্ষেপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এই হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের  ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজকে বলেছেন, ইরানের ৪০০ কেজি ইউরেনিয়ামের মজুদ- যা ১০টি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য যথেষ্ট। এখন তা নিখোঁজ। উল্লেখ্য, যুদ্ধের আগেই জানা গিয়েছিল, ৬০ শতাংশ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছে ইরান। ৯০ শতাংশ হলেই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি সম্ভব। এই আশঙ্কাতেই ইসরাইল ও আমেরিকা যৌথভাবে হামলা চালায় তেহরানের তিনটি পরমাণু স্থাপনায়। এমন খবর ছিল যে ইরান হামলার কয়েকদিন আগে মজুদকৃত ইউরেনিয়াম ও  কিছু সরঞ্জাম গোপন স্থানে সরিয়ে নিয়ে যেতে পারে।  ইসরাইলি কর্মকর্তারা দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসকে এই দাবিটি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। মার্কিন হামলার আগে তোলা স্যাটেলাইট ছবিতে ফরদো পারমাণুকেন্দ্রের বাইরে ১৬টি ট্রাকের সারি দেখা গেছে। এর ফলে ইসরাইল রোববার ভোরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তার বি-২ ‘স্পিরিট’ বোমারু বিমান এবং জিবিইউ-৩৭ ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বোমা মোতায়েনের অনুরোধ জানায়। প্রকাশ্যে এসেছিল ফরদো পরমাণুকেন্দ্রের একাধিক উপগ্রহচিত্র। ১৯ জুনের ওই ছবিতে ১৬টি মালবাহী ট্রাক দেখা যায়। তখনই জল্পনা ছড়ায়, মার্কিন বোমারু বিমানের হামলার আগেই প্রয়োজনীয় পরমাণু সরাঞ্জাম ও ইউরেনিয়াম গোপন স্থানে সরিয়ে ফেলেছে ইরান। এখন সেই আশঙ্কাই উঠে আসছে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্টের  বক্তব্যেও।

ফোরদো, নাতানজ এবং ইসফাহান পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা ফেলা হয়েছিল। হামলার পরের ছবিতে তিনটির উপরিভাগে ক্ষয়ক্ষতি দেখা গেছে। তবে সেই ট্রাকগুলোর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। এখন প্রশ্ন উঠছে ইউরেনিয়াম কী স্থানান্তর করা হয়েছে? হলে তা কোথায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে তা স্পষ্ট নয়। যদিও যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরাইল দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে এটি প্রাচীন রাজধানী ইসফাহানের কাছে অন্য একটি ভূগর্ভস্থ সংরক্ষণাগারে স্থানান্তরিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা আইএইএ- এর প্রধান রাফায়েল গ্রোসির মতে, ইরানে ইসরাইলের প্রথম আক্রমণের এক সপ্তাহ আগে এই পরমাণু কেন্দ্র  শেষবার পরিদর্শন করা হয়। গত সপ্তাহে গ্রোসি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে বলেন, যত দ্রুত সম্ভব পরিদর্শন পুনরায় শুরু করা ‘অপরিহার্য’। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, অব্যাহত সামরিক উত্তেজনা  ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখার জন্য কূটনৈতিক সমাধানের সম্ভাবনা হ্রাস পেয়েছে। ইরানের কি আদৌ  পারমাণবিক অস্ত্র আছে, নাকি অস্ত্র তৈরির পারমাণবিক উপকরণ আছে? ইরান দীর্ঘদিন ধরে জোর দিয়ে বলে আসছে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে। কিন্তু  ইসরাইল  সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করে ইরানে হামলা চালায়। ইসরাইলের আক্রমণের পর ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী তখত রাভানচি এই কর্মসূচি পরিত্যাগ করার দাবি উড়িয়ে দিয়ে জানান, ‘কেউ আমাদের শেখাতে পারে না কী করতে হবে।’ তবে, আমেরিকা এই বিষয়ে একটু বিভ্রান্ত। 

গত সপ্তাহে সিএনএন-এর এক প্রতিবেদন বলা হয়েছে, ইসরাইলের প্রথম দফা ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা জানিয়েছে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে না এবং এটি তৈরি করতে কমপক্ষে তিন বছর সময় লাগবে। ইন্টেল আরও বলেছে যে ইসরাইলের হামলা ইরানকে মাত্র কয়েক মাসের জন্য এই কার্যক্রম থেকে পিছিয়ে দিয়েছে।  কারণ গবেষণার বেশিরভাগ অংশই ফরদোর মতো ঘাঁটিতে মাটির গভীরে থেকে পরিচালিত হচ্ছিলো।  সেখানে ইসরাইলি ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ক্ষতি করতে পারে না।  একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেন, তেহরানের কাছে প্রয়োজনীয় সকল উপকরণ রয়েছে। মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা বিভাগের পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ড কয়েক মাস আগে কংগ্রেসে বলেছিলেন, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে না। তাকেই গত শনিবার বলতে শোনা গেছে ইরান কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এগুলো তৈরি করতে পারবে। ফলে গ্যাবার্ড-এর বিবৃতি ঘিরে বিভ্রান্তি  তৈরী হয়েছে। ট্রাম্প এর আগে ইরানকে নতুন পারমাণবিক সুরক্ষা চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য দুই সপ্তাহের সময়সীমা দিয়েছিলেন, কিন্তু গোয়েন্দা সংস্থা নিশ্চিত করে যে, মার্কিন সহায়তা ছাড়া ইসরাইল ইরানি স্থাপনাগুলোকে নিষ্ক্রিয় পারবে না। রোববার মার্কিন হামলার কয়েক ঘন্টা আগে ট্রাম্প ইরান ও ইসরাইলকে বেশি দেরি হওয়ার আগেই নিজেদের মধ্যে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর আহ্বান জানান। হামলার পর ট্রাম্প ঘোষণা করেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি  সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। 
সূত্র : এনডিটিভি

অনলাইন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

অনলাইন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status