ঘরের মাটিতে সম্ভাব্য যুদ্ধের জন্য যুক্তরাজ্যকে 'সক্রিয়ভাবে প্রস্তুত' থাকতে হবে

"যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির" সম্ভাব্যতার মধ্যে যুক্তরাজ্যকে তার নিজের মাটিতে "সক্রিয়ভাবে প্রস্তুত" থাকতে হবে।  একটি জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলে এবিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে ।আজ প্রকাশিত, জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক এই সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে যে , অনেক বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো  এই ধরণের ঘটনা বিবেচনা করতে হয়েছে। সম্প্রতি স্কাই নিউজ 'দ্য ওয়ারগেম' পডকাস্টে বৃটেনের উপর রাশিয়ার আক্রমণ পর্যালোচনা   করার সময় এই তথ্য হাতে এসেছে। পর্যালোচনায় রাশিয়া এবং ইরানকে সম্ভাব্য হুমকি হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে যে বৃটিশ মাটিতে রাশিয়ার  শত্রুতাপূর্ণ কার্যকলাপের  পাশাপাশি  যুক্তরাজ্যকে সরাসরি হুমকি দেওয়ার  প্রচেষ্টা  বৃদ্ধি পাচ্ছে।এতে আরও বলা হয়েছে: "  কিছু প্রতিপক্ষ ভবিষ্যতের সংঘাতের ভিত্তি স্থাপন করছে, আমাদের শক্তি  অথবা সরবরাহ শৃঙ্খলে বড় ধরনের ব্যাঘাত ঘটাতে  নিজেদের প্রস্তুতি নিচ্ছে  , যাতে আমরা তাদের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে না পারি।"প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী স্যার কেয়ার স্টারমার বলেন, যুক্তরাজ্য  নিজভূমেই প্রতিদিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে"।প্রধানমন্ত্রী স্কাই নিউজের রাজনৈতিক সম্পাদক বেথ রিগবিকে বলেন যে 'বৃটেন খুব  ঘন ঘন এবং খুব গুরুতর  সাইবার আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছে। 'ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর জ্বালানি নিরাপত্তাও একটি উদ্বেগের বিষয়, অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী ইরানের হুমকির কথাও উল্লেখ করেছেন। স্টারমার বলেন, "আমাদের এই হুমকির বিরুদ্ধে  সতর্ক থাকতে হবে  এবং আমরা তা করব'। জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে যে  নতুন কৌশলে নেয়া হয়েছে সেখানে  স্থিতিস্থাপকতা পুনর্গঠনের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সরকার   সমাজের সকল স্তরের প্রস্তুতি পরীক্ষা করার জন্য বার্ষিক মহড়া পরিচালনা করবে।"হোম ডিফেন্স" নামে পরিচিত এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং পানি  সরবরাহের মতো গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় অবকাঠামোর আশেপাশে নিরাপত্তা উন্নত করার পদক্ষেপও নেওয়া হবে।তবে, পর্যালোচনায়  স্বীকার করা হয়েছে  যে "আমরা প্রতিটি শত্রু পক্ষকে থামাতে পারবো  না ।পরিবর্তে  যুক্তরাজ্যকে  প্রতিপক্ষ এবং অপরাধীদের সামনে  কঠিন লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করার  চেষ্টা করবো' ।

ওয়ারগেমের ভিতরে স্কাই নিউজ এবং টর্টোইজের নতুন পডকাস্ট সিরিজে যুক্তরাজ্যের উপর সশস্ত্র আক্রমণের মতো পরিস্থিতির উপর আলোকপাত করা হয়েছে।যার মধ্যে  রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা নিয়ে যেমন আলোচনা করা হয়েছে তেমনি যুক্তরাজ্যের শীতল যুদ্ধের অতীত নিয়েও অনুসন্ধান করা হয়েছে। সোভিয়েত ইউনিয়নের সময়, ন্যাটোর  মতো, বৃটেনও অনেক বৃহৎ পেশাদার সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনীর অধিকারী ছিল।  যার মধ্যে ছিল আরও বেশি যুদ্ধাস্ত্রের মজুদ, একটি বৃহত্তর রিজার্ভ বাহিনী এবং  অনেক বেশি বিস্তৃত বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। এই সবকিছুই এমনভাবে প্রস্তুত রাখা হয়েছিল যাতে  যুদ্ধ শুরু হলে যুক্তরাজ্য তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে।একই সময়ে, বৃহত্তর সমাজ পারমাণবিক যুদ্ধ সহ সংঘাতের জন্য আরও ভালভাবে প্রস্তুত ছিল।তারা প্রতিরক্ষা তহবিলে আরও করদাতাদের নগদ বরাদ্দের প্রয়োজনীয়তাও বুঝতে পেরেছিল।যদিও শীতল যুদ্ধের অবসান ঘটলে, পরবর্তী সরকারগুলো  শান্তির লভ্যাংশ হিসেবে বিবেচিত বিষয়গুলোকে গ্রহণ করে। প্রতিরক্ষা থেকে বিনিয়োগকে সরিয়ে স্বাস্থ্য, কল্যাণ এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মতো অন্যান্য অগ্রাধিকারের দিকে মনোনিবেশ করে। কিন্তু বৃটেন এখন ঘরের মাঠেই  নতুন করে হুমকির সম্মুখীন ।

সূত্র : স্কাই নিউজ