ঢাকা, ২৫ জুন ২০২৫, বুধবার, ১১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৭ জিলহজ্জ ১৪৪৬ হিঃ

অনলাইন

সহযোগীদের খবর

নিয়ন্ত্রণহীন আইনশৃঙ্খলা

অনলাইন ডেস্ক

(৪ ঘন্টা আগে) ২৫ জুন ২০২৫, বুধবার, ৯:০৮ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৯:৪২ পূর্বাহ্ন

mzamin

বাংলাদেশ প্রতিদিন

দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রথম পাতার খবর ‘নিয়ন্ত্রণহীন আইনশৃঙ্খলা’। প্রতিবেদনে বলা হয়, কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। একের পর এক মব সৃষ্টির ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে সমাজের বিভিন্ন স্তরে। সঙ্গে নৃশংস হত্যাকাণ্ড, চাঁদাবাজি এবং ডাকাতির মতো ঘটনায় রীতিমতো ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন মানুষ। খোদ পুলিশের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে দিনে গড়ে ১০টি হত্যাকাণ্ড ঘটছে।

সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে সাধারণ মানুষকে বারবার আশ্বস্ত করা হলেও পরিস্থিতি ভালো হচ্ছে না। প্রশ্ন উঠছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বিভিন্ন সংস্থার সদস্যদের আন্তরিকতা নিয়ে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার সঙ্গে জড়িত সরকারের বিভাগগুলো সমন্বিতভাবে কাজ না করার কারণেই এমনটা ঘটছে। সঙ্গে রয়েছে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র।

পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীতে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত গত পাঁচ মাসে দেড় শতাধিক খুনের ঘটনা ঘটেছে। নিহতদের মধ্যে নারীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ রয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই নিহত হয়েছেন গণপিটুনিতে (মব জাস্টিস)। বিশেষ করে গত ৩১ মে মিরপুরের দারুসসালাম এলাকায় দুজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। রবিবার মাত্র ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে রাজধানীতে তিনটি নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। পল্লবী ১১ নম্বর সেকশন এলাকায় রিফাত নামের এক শিক্ষার্থী খুন হয়েছেন। খিলগাঁওয়ে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে খুন হয়েছেন মো. সাগর আহমেদ (২২) নামে এক যুবক। একই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুজন। রাত ২টার দিকে কামরাঙ্গীরচর এলাকায় মো. রকি (৩১) নামে একজন খুন হন।

তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির বিষয়টি মানতে নারাজ ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এস এন মো. নজরুল ইসলাম। তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ঢাকা শহরের জনসংখ্যার ঘনত্ব এবং আয়তনের কারণে সাধারণ মানুষের আতংকিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। উত্তরায় সাবেক সিইসির সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত ছিল। তবে পুলিশ তাৎক্ষণিক রেসপন্স না করলে পরিস্থিতি আরও বাজে হতে পারত।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বর্তমানে পুলিশের মনোবল অনেক বেড়েছে। যারা মব সৃষ্টির চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

২৫ মে দিবাগত রাতে রাজধানীর মধ্য বাড্ডার গুদারাঘাট এলাকায় সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি গুলিতে গুলশান থানা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক কামরুল আহসান সাধন খুন হয়। ওই হত্যাকাণ্ডের পর টানা তিন দিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আরও সাতটি খুনের ঘটনা ঘটে। এর আগে ১৮ মে রাতে রাজধানীর নিউমার্কেট থানাধীন সেন্ট্রাল রোডে এক যুবককে প্রকাশ্যে কোপানোর দুই মিনিট ছয় সেকেন্ডের এক ভিডিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

পুলিশ সদর দপ্তরের গত পাঁচ মাসের অপরাধসংক্রান্ত পরিসংখ্যান পর্যালোচনায় দেখা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত পাঁচ মাসে দেশের বিভিন্ন থানায় ১ হাজার ৫৮৭টি হত্যা মামলা হয়েছে। গত বছরের একই সময়ে হত্যা মামলা হয়েছিল ১ হাজার ২৬৫টি। এ হিসেবে গত বছরের চেয়ে এ বছরের প্রথম পাঁচ মাসে ৩২২টির বেশি হত্যা মামলা হয়েছে। শতকরা হিসাবে তা বেড়েছে ২০ ভাগ। তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এ বছরের প্রথম পাঁচ মাসে দিনে গড়ে ১০ জন খুন হয়েছেন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশে হত্যা মামলা হয় ২৯৪টি, ফেব্রুয়ারিতে ৩০০টি, মার্চে ৩১৬টি, এপ্রিলে ৩৩৬টি। মে মাসে তা আরও বেড়ে হয় ৩৪১টি। এ হিসাবে গড়ে প্রতি মাসে দেশে ৩১৭ জনকে হত্যা করা হয়।

সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) আশরাফুল হুদা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছতে না পারলেও আগের চেয়ে কিছুটা উন্নতি হয়েছে। এখন পুলিশ সদস্যদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা দরকার। এ জন্য প্রয়োজন ঊর্ধ্বতন কর্মকতাদের সিরিয়াস মনিটরিং।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে পুলিশে নিয়োগ অনেকটা ডিএনএ টেস্ট করেই হয়েছে। তাদের নিয়েই পথ চলতে হচ্ছে বর্তমান প্রশাসনকে। তাই প্রয়োজন দ্রুততর সময়ের মধ্যে বিভিন্ন স্তরে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া। আবার বর্তমান সরকারের উচিত হবে স্বতন্ত্র পুলিশ কমিশন সৃষ্টি করে নজির সৃষ্টি করা। কারণ এই কমিশনের ব্যাপারে অনেকেরই প্রত্যাশা রয়েছে।

গতকাল গাজীপুরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদাকে আটককালে ‘মব জাস্টিসের যে ঘটনা ঘটেছে, তা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। ডাকাতি বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, পুলিশের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি, নজরদারি ও গোয়েন্দা তৎপরতা আরও জোরদার করা হবে। ডাকাতদের কোনোভাবেই সক্রিয় হতে দেওয়া যাবে না। সম্প্রতি সচিবালয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। পুলিশ এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি সক্রিয়।

২৫ মার্চ রাজধানীর ধানমন্ডিতে অলংকার নিকেতন জুয়েলার্সে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাতিতে ব্যবহার করা হয় র‌্যাবের পোশাক, পরিচয় দেওয়া হয়েছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র। এ ছাড়া চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে ১০৩৯টি ডাকাতি ও দস্যুতার মামলা হয়েছে। এর মধ্যে জানুয়ারিতে ২৪২টি, ফেব্রুয়ারিতে ২২৭টি, মার্চে ২৩১টি ও এপ্রিলে ১৯৫টি ও মে মাসে ১৪৪টি মামলা হয়েছে। সে হিসাবে প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ২০৮ করে মামলা হয়েছে। এর আগের বছর এ পাঁচ মাসে ৬৫২টি মামলা হয়। গড়ে প্রতি মাসে প্রায় ১৩০টি মামলা হয়।

একই সময় নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলাও ব্যাপকহারে বেড়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, এই পাঁচ মাসে মোট ৯ হাজার ১০০টি মামলা হয়েছে।

মানবাধিকার সংগঠন ‘হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি-এইচআরএসএসের প্রতিবেদন বলছে, চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে রাজনৈতিক সহিংসতায় দেশে ৬৭ ব্যক্তি হত্যার শিকার হন। জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ৩২৫টি রাজনৈতিক সহিংসতায় নিহত হন ৪৭ জন। বাকি ২০ জন এপ্রিল ও মে মাসে নিহত হন।

সংগঠনটির সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষকেরা জানিয়েছেন, আধিপত্য বিস্তার, রাজনৈতিক প্রতিশোধ, চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন স্থাপনা দখলে সহিংসতা বেশি ঘটেছে। একই সঙ্গে আধিপত্য বিস্তার, রাজনৈতিক প্রতিশোধ, চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন স্থাপনা দখলে সহিংসতা বেশি ঘটেছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) ইনামুল হক বলেন, রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতার কারণে হত্যার ঘটনা ঘটছে। ঘটছে অন্য অপরাধমূলক ঘটনাও।

প্রথম আলো

দৈনিক প্রথম আলোর প্রথম পাতার খবর ‘রাজনৈতিক অনিশ্চয়তাসহ ৪ কারণে অর্থনীতি খারাপ’। খবরে বলা হয়, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তাসহ চার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি এখনো খারাপ অবস্থায় আছে বলে মনে করে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। অন্য তিনটি কারণ হলো কঠোর আর্থিক ও রাজস্ব নীতির প্রভাব, বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা বৃদ্ধি এবং ব্যাংক খাতে অব্যাহত চাপ। আইএমএফের ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ অনুমোদন দেওয়ার বিষয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে।

আইএমএফের সঙ্গে চলমান ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ কর্মসূচি থেকে দুই কিস্তির ১৩৭ কোটি মার্কিন ডলার একসঙ্গে পাচ্ছে বাংলাদেশ। আগামীকাল ২৬ জুন বাংলাদেশের হিসাবে এ অর্থ জমা হবে। গত সোমবার রাতে আইএমএফের বোর্ড সভায় দুই কিস্তির অর্থ ছাড়ের বিষয়টি অনুমোদন করা হয়। বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে আইএমএফ আরও বলেছে, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে আগের সরকারের পতন হয়।

তখন সামষ্টিক অর্থনীতি আরও চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়ে। পরবর্তী সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারের নানা উদ্যোগে রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতি হয়; যা অর্থনীতিকে স্থিতিশীলতার পথে ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জটিল রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যেও আইএমএফ কর্মসূচির অধীন তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড়ের পর্যালোচনায় বাংলাদেশের পারফরম্যান্স মোটামুটি সন্তোষজনক ছিল। সরকার প্রয়োজনীয় নীতিগুলো বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সম্প্রতি বিনিময় হার আরও নমনীয় করার পাশাপাশি কর রাজস্ব বৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার কার্যক্রম শুরু করেছে।

যুগান্তর

‘মব ভায়োলেন্স দমবে না কঠোর পদক্ষেপ ছাড়া’-এটি দৈনিক যুগান্তরের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশেই এখন আতঙ্কের নাম মব ভায়োলেন্স। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নানা ধরনের অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিলেন-এমন ব্যক্তিদের টার্গেট করা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে নিরপরাধ ব্যক্তিও মব ভায়োলেন্সের শিকার হচ্ছেন। ফ্যাসিস্টের দোসর আখ্যা দিয়ে দল বেঁধে কারও বাসাবাড়ি বা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে বিশৃঙ্খলা তৈরি, টেনেহিঁচড়ে এনে নির্যাতন করা এবং অনেক ক্ষেত্রে নির্যাতনে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। এতে ছড়াচ্ছে উদ্বেগ। এমনকি আসামিকে আদালতে তোলার সময়ও মব সৃষ্টি করে হামলার ঘটনা ঘটছে।

এদিকে সরকারের পক্ষ থেকে মবের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দেওয়া হলেও বাস্তবে কোনো কাজে আসছে না। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার এ প্রবণতা ঠেকাতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে কার্যত ব্যর্থ হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। মব ভায়োলেন্সের অসংখ্য ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ছে, যার অনেকই গা শিউরে ওঠার মতো। বেসরকারি মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য বলছে, ১০ মাসে মবের শিকার হয়ে এবং গণপিটুনিতে সারা দেশে ১৭৪ জন মারা গেছেন।

পুলিশও রেহায় পাচ্ছে না মব ভায়োলেন্স থেকে। আসামি ছাড়িয়ে নেওয়া এবং বেআইনি দাবিতে থানা ও পুলিশের যানবাহন ঘেরাও করে হামলা হচ্ছে। পুলিশ সদর দপ্তরের সূত্র বলছে, ১০ মাসে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ৪৭৭টি মামলা হয়েছে। ২০২৪ সালের আগস্টে পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে ৪১টি, সেপ্টেম্বরে ২৪, অক্টোবরে ৩৪, নভেম্বরে ৪৯, ডিসেম্বরে ৪৪, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৩৮, ফেব্রুয়ারিতে ৩৭, মার্চে ৯৬, এপ্রিলে ৫২ এবং মে মাসে ৬২টি।

কালের কণ্ঠ

দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রধান শিরোনাম ‘১২ দিন পর যুদ্ধবিরতি, বিশ্বজুড়ে স্বস্তি’। প্রতিবেদনে বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশ ইরান ও ইসরায়েল ১২ দিন ধরে চলা সংঘাতের অবসানে একটি পূর্ণ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে বলে গতকাল মঙ্গলবার হঠাৎ ঘোষণা দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ার কথা জানায় ইরান ও ইসরায়েল। তবে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরই ইরানের বিরুদ্ধে তা লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে তেহরানে ‘তীব্র’ হামলার নির্দেশ দেয় ইসরায়েল। যদিও তেহরান এই অভিযোগ নাকচ করে দেয়।

পরে নানা নাটকীয়তার পর শর্ত সাপেক্ষে যুদ্ধবিরতি মেনে চলার অঙ্গীকার করেছে দুই দেশই। ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার খবর বিশ্বজুড়ে স্বস্তি এনে দিয়েছে। এই যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে ভারত, কাতার, মিসর, লেবানন, জর্দান, সৌদি আরব, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স, জার্মানিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ।

ইরান ও ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতির খবরে বিশ্ববাজারে ইতিবাচক সাড়া পড়েছে। গতকাল তেলের দাম ৪ শতাংশ কমেছে, শেয়ার সূচকের উত্থান ঘটেছে এবং ডলার দুর্বল হয়েছে। গত সোমবারও বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমেছে। সেদিন ব্রেন্ট অপরিশোধিত তেলের দাম ৭ শতাংশ পড়ে যায়। যুদ্ধবিরতিতে বাজারসংশ্লিষ্টদের ইতিবাচক ধারণার সৃষ্টি হয় যে হরমুজ প্রণালি দিয়ে তেল সরবরাহ এখন বন্ধ হচ্ছে না।

সমকাল

‘গোল বেধেছে গবেষণায়’-এটি দৈনিক সমকালের প্রধান শিরোনাম। প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) করা আটটি গবেষণার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ছয় মাসের গবেষণাকাজ শেষ করা হয়েছে দুই মাসে। প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির টাকায় করা হলেও গবেষণার বিষয়বস্তুতে স্থান পেয়েছে মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষার বিষয়। এর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়া হয়নি। প্রশ্ন উঠেছে গবেষণার তথ্য-উপাত্ত নিয়েও।

অভিযোগ পেয়ে শুরুতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের যাচাই কমিটি বিষয়টি তদন্ত করে। কমিটির প্রতিবেদনে গবেষণায় নানা অস্বচ্ছতার কথা বলা হয়। প্রায় ছয় কোটি টাকার এ গবেষণার জন্য আইইআরকে ইতোমধ্যে ৮৭ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। তদন্তের পর বাকি ৫ কোটি ১৩ লাখ টাকা আটকে দিয়েছে অধিদপ্তর।

এখন ঘটনার বিশদ তদন্ত করতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) এ কে মোহাম্মদ সামছুল আহসানকে প্রধান করে ছয় সদস্যের পৃথক উচ্চতর কমিটি গঠন করা হয়েছে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা সমকালকে বলেন, ‘বিষয়টি নজরে আসার পর আমি পিপিআর (পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলস) অনুসারে ব্যবস্থা নিতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছি।’

ইত্তেফাক

দৈনিক ইত্তেফাকের প্রথম পাতার খবর ‘আবার পরমাণু কর্মসূচি শুরু করার ঘোষণা ইরানের’। প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরাইলের কয়েকটি পরমাণু কেন্দ্রে বড় ধরনের হামলার পর ইরান আবারও পরমাণু কর্মসূচি শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরাইলসহ তাদের পশ্চিমা মিত্ররা জানিয়েছেন, ইরান কখনো পরমাণু অস্ত্রের অধিকারী হতে পারবে না।

‘পরমাণু কর্মসূচি ফের চালু হবে’

ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে কী কী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, এখন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে কর্মসূচি চালু করার পরিকল্পনা চলছে। গতকাল মঙ্গলবার এমনটাই জানিয়েছেন ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থার প্রধান মোহাম্মদ ইসলামি। ইরান দাবি করেছিল, ইসরাইল বা আমেরিকার হামলায় তাদের পরমাণু কেন্দ্রের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তেজস্ক্রিয় বিকিরণও হচ্ছে না। এবার তারা তাদের পরমাণু কর্মসূচি আবার চালু করারই ইঙ্গিত দিয়ে রাখল, যা নিয়ে এই সংঘাতের সূত্রপাত। তারা আরো স্পষ্ট করেছে যে, এই কর্মসূচিতে কোনো বাধা এলে তা প্রতিহতও করবে তারা। অন্যদিকে, ইরানকে সহযোগিতা করার আবেদন জানিয়েছে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)।

ইরানে সরকার পরিবর্তন চান না ট্রাম্প

ন্যাটো সম্মেলনে যোগ দিতে যাওয়ায়র সময় ইরানে সরকার পরিবর্তন চান কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, ‘না। আমি এটা চাই না। আমি চাই যত দ্রুত সম্ভব সবকিছু শান্ত হয়ে আসুক’। তিনি বলেন, ‘সরকার পরিবর্তন নৈরাজ্যের দিকে নিয়ে যায় এবং আদর্শিকভাবে আমরা অনেক নৈরাজ্য দেখতে চাই না’। যদিও তিনি এর আগে কয়েক বার বলেছেন, ইরান কখনো পরমাণু অস্ত্রের অধিকারী হতে পারবে না।

বণিক বার্তা

‘বছরের পর বছর অলস বসে আছে পুলিশের এভিয়েশন উইং’-এটি দৈনিক বণিক বার্তার প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্গম অঞ্চলে দ্রুত যোগাযোগ, গুরুত্বপূর্ণ অভিযান পরিচালনা, তল্লাশি এবং উদ্ধার কার্যক্রমে বিশেষ ভূমিকার জন্য এভিয়েশন উইং প্রতিষ্ঠা করে বাংলাদেশ পুলিশ। পাইলটের প্রশিক্ষণ দেয়া হয় চার পুলিশ কর্মকর্তাকে। হেলিকপ্টার কিংবা উড়োজাহাজ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রস্তুত করা হয় প্রশিক্ষিত জনবল। পাশাপাশি পুলিশের উইংটির জন্য দুটি হেলিকপ্টার কিনতে বছর পাঁচেক আগে রুশ প্রতিষ্ঠান ‘জেএসসি রাশিয়ান হেলিকপ্টারস’-এর সঙ্গে চুক্তি করে সরকার। যদিও রাশিয়ার কাছ থেকে সেগুলো নেয়া সম্ভব হচ্ছে না দেশটির ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা থাকায়।

এদিকে সব ধরনের প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও হেলিকপ্টারের কারণে অভিযানে যুক্ত হতে পারেনি পুলিশের এভিয়েশন উইং। বছরের পর বছর অলস বসে আছেন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মকর্তারাও। এতে বাড়ছে দক্ষতা লোপ পাওয়ার শঙ্কা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রয়োজনে পুরনো চুক্তি বাতিল করে নতুন চুক্তির মাধ্যমে হেলিকপ্টার সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অন্যথায় বিশেষ উইংটির পেছনে ব্যয় করা অর্থ ও শ্রম দুটোই জলে যাবে।

পুলিশের ডিআইজি পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, দাঙ্গা-হাঙ্গামা দমন করতে গিয়ে প্রায়ই পুলিশ সদস্যরা আহত হন। দুর্গম এলাকায় আহত পুলিশ সদস্যদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা বা অন্য কোনো স্থানে আনা-নেয়ার জন্য বাহিনীতে কোনো হেলিকপ্টার নেই। ফলে অনেকেই উন্নত চিকিৎসার অভাবে পথেই মারা যান। এছাড়া অভিযান ও ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম মোকাবেলায় হেলিকপ্টারের প্রয়োজন হয়। সেই সঙ্গে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক সেবা দেয়ার জন্যই মূলত প্রতিষ্ঠা করা হয় পুলিশের এভিয়েশন উইং।

আজকের পত্রিকা

দৈনিক আজকের পত্রিকার প্রথম পাতার খবর রাষ্ট্রের মূলনীতিতে ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতি’ যুক্ত করার প্রস্তাব। প্রতিবেদনে বলা হয়, সংবিধানে রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার ও গণতন্ত্র যুক্ত করার প্রস্তাব করেছিল সংবিধান সংস্কার কমিশন। সংলাপে এর প্রতি সমর্থন জানিয়েছে প্রায় সব রাজনৈতিক দল। তবে বিদ্যমান সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতার নীতিটি বাদ দিলে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার ক্ষুণ্ন হওয়ার আশঙ্কা করছে বামপন্থী দলগুলো। এমন পরিস্থিতিতে সংস্কার কমিশন নতুন করে ‘ধর্মীয় সম্প্রীতি ও স্বাধীনতা’ নীতিটি যুক্ত করার প্রস্তাব করবে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের গত রোববারের সংলাপে সংবিধান ও রাষ্ট্রের মূলনীতি নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে কমিশনের প্রস্তাবিত মূলনীতি যুক্ত করার বিষয়ে প্রায় সব দল একমত প্রকাশ করে। এর বাইরে বিএনপি, জামায়াতসহ ডান ও মধ্যপন্থী দলগুলো সংস্কার কমিশন প্রস্তাবিত মূলনীতির সঙ্গে জিয়াউর রহমানের আমলের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ দিয়ে যোগ করা ‘আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস’ যুক্ত করার কথা বলে। তবে সিপিবি, বাসদ, গণফোরামসহ বামপন্থী কয়েকটি দল বিদ্যমান চার রাষ্ট্রীয় মূলনীতি বাঙালি জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার সঙ্গে কমিশনের প্রস্তাবিত মূলনীতি যুক্ত করার প্রস্তাব করে। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত না নিয়েই আলোচনা মুলতবি করা হয়। একই সঙ্গে কমিশন থেকে বলা হয়, তারা নতুন একটি প্রস্তাব হাজির করবে।

আজ বুধবার অনুষ্ঠেয় আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ইতিমধ্যে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে এবং আলোচনার যে সেন্টিমেন্ট, সে দুটোকে ধারণ করে একটা প্রস্তাব হাজির করব। কারণ, আমাদের প্রস্তাবিত সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার ও গণতন্ত্র নিয়ে দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য আছে।’

দেশ রূপান্তর

‘রোহিঙ্গা’ পুশইনে বাড়ছে উদ্বেগ-এটি দৈনিক দেশ রূপান্তরের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, আক্কাসুর রহমান প্রায় এক বছর আগে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে যান ভারতের ত্রিপুরায়। দুদিন আগে আক্কাসের পরিবারসহ ১২ রোহিঙ্গাকে মৌলভীবাজারের কুমারশাইল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশি বলে পুশইন করে ভারতীয় সীমান্ত বাহিনী (বিএসএফ)। তাছাড়া চারজন বাংলাদেশিকেও একই সময় ঠেলে পাঠানো হয়। এর আগেও দেশের বিভিন্ন স্থানে সীমান্ত এলাকা দিয়ে বাংলাদেশি নাগরিক আখ্যা দিয়ে পুশইন করেছে ভারত।

গত তিন মাসে দেড় হাজারের বেশি নারী-পুরুষ ও শিশুকে পুশইন করা হয়েছে। তার মধ্যে একশর বেশি রোহিঙ্গা নাগরিক রয়েছে বলে পুলিশের একটি গোপন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। মিয়ানমার থেকে এক লাখের বেশি রোহিঙ্গা ভারতের বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে গেছে বলে তথ্য এসেছে।

জানা গেছে, পুশইন বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, বাংলাদেশের শান্ত পরিবেশকে উত্তপ্ত করার চেষ্টা করছে প্রতিবেশী দেশটি। বাংলাদেশ থেকে বারবার বলা হচ্ছে, আলোচনা ছাড়া কাউকে পুশইন না করাতে। কিন্তু এসব অনুরোধ পাত্তাই দিচ্ছে না তারা। তাছাড়া উত্তপ্তের শঙ্কার পেছনে কাজ করছে আওয়ামী লীগের পলাতক নেতারা। ইতিমধ্যে একটি গোয়েন্দা সংস্থা তাদের প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছে, আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা বড় ধরনের নাশকতা চালানোর চেষ্টা চালাচ্ছে।

অনলাইন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

অনলাইন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status