ঢাকা, ২৫ জুন ২০২৫, বুধবার, ১১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৭ জিলহজ্জ ১৪৪৬ হিঃ

অনলাইন

‘মব জাস্টিস’ নামে এক হিংস্র উন্মাদনা মানবতার শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে: তারেক রহমান

স্টাফ রিপোর্টার

(৫ ঘন্টা আগে) ২৫ জুন ২০২৫, বুধবার, ১:২০ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১:৩৯ অপরাহ্ন

mzamin

‘মব জাস্টিস’ নামে এক হিংস্র উন্মাদনা মানবতার শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বুধবার ‘নির্যাতিতদের সমর্থনে জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক দিবস’ উপলক্ষে এক বাণীতে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘রক্ত উন্মাদনা যেন দেশে দেশে এক ভয়ংকর হানাহানি ও রক্তারক্তিকে অব্যাহত রেখেছে। এই কারণে বিশ্বের অসংখ্য মানুষ নিহত ও আহত হয়ে পঙ্গুত্ববরণ করছে। বিভিন্ন রাষ্ট্রে স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠী তাদের বিরোধীদের ওপর সীমাহীন ক্রোধে ভয়ানক দমন-পীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। সেইসব দেশে নাগরিকদের জীবন ও সম্পদ মারাত্মক হুমকির মুখে। একনায়কদের দোর্দণ্ড প্রতাপে বিরোধী মতের মানুষদের গুম ও খুনসহ মিথ্যা মামলায় এক অবর্ণনীয় বন্দীজীবন কাটাতে হয় বছরের পর বছর।’

বাংলাদেশে প্রায় ১৬ বছর ধরে চলেছে গণতন্ত্রকে বন্দী করে ভয়াবহ আওয়ামী ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী ফ্যাসিবাদী আমলে বাংলাদেশকে সর্বগ্রাসী রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছিল। মত প্রকাশের স্বাধীনতাসহ সকল প্রকার নাগরিক স্বাধীনতাকে হরণ করা হয়েছিল। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নানা কালাকানুন দ্বারা ছিল শৃঙ্খলে বন্দী। এ দেশের গণতন্ত্রের প্রতীক বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে বন্দী করে রাখা হয়েছিল। চিকিৎসাধীন মুমূর্ষু দেশনেত্রীর সুচিকিৎসাকেও বর্বর আওয়ামী সরকার নির্দয়ভাবে বাধা প্রদান করেছিল। গোটা দেশটাই ছিল বাকরুদ্ধ, ভীতি ও শঙ্কার মধ্যে আবদ্ধ।’

তারেক রহমান বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী সরকারের অগণতান্ত্রিক ও অসহিষ্ণু আচরণের প্রতিবাদ করলেই লেলিয়ে দেয়া হতো পেটোয়া বাহিনী। মানবতাকে উচ্ছেদ করে আওয়ামী সরকারের পোষ্য সন্ত্রাসীরা বিচারহীনতার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করে বলেই নারী শিশুসহ সাধারণ মানুষের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছিল। একমাত্র গণতান্ত্রিক সমাজেই মানুষের সার্বিক অধিকার নিশ্চিত হয়। আমরা ফ্যাসিবাদ মুক্ত হলেও গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠান নির্মাণ ও সুষ্ঠু চর্চার কর্মপ্রক্রিয়া এখনও শুরু হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘‘এখন ‘মব জাস্টিস’ নামে এক হিংস্র উন্মাদনা মানবতার শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি গড়ে তোলার পরিবেশকে বিপন্ন করবে। আর যেন একমাত্রিক রাষ্ট্রের পুনঃপ্রবর্তন না হয় সেজন্য গণতন্ত্রকে গতিশীল ও এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হবে। মানবতা, ন্যায়বিচার, আইনের শাসন এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের সুমহান ঐতিহ্য আমাদের গড়ে তুলতে হবে। সেজন্য গণতান্ত্রিক শক্তির অটুট ঐক্য বজায় রাখা অতীব জরুরি।’’  

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘নির্যাতিতদের সমর্থনে জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক দিবসটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই দিবসটি’র তাৎপর্য অপরিসীম। প্রতি বছর ২৬ জুন জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক এই দিবসটি পালিত হয়। এই দিবসটি নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সংহতি জানানোর জন্য পালিত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অব্যবহিত পরে অধীন জাতিসমূহ ক্রমান্বয়ে স্বাধীনতা অর্জন করলেও সারাবিশ্বে সহিংসতা ও সংঘাত বন্ধ হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘আমি তাই নির্যাতিতদের সমর্থনে জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক দিবসে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল নির্যাতিত মানুষকে সহমর্মিতা জ্ঞাপন করছি। নির্যাতিতদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির পথে নানা প্রতিকূলতা বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি। মানবিকবোধে উদ্বুদ্ধ বিশ্বের সকল গণতন্ত্রকামী মানুষের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের মাধ্যমেই নিষ্ঠুর নির্যাতনকারী গোষ্ঠী ও স্বৈরশাসককে পরাস্ত করা সম্ভব।’

অপর এক বাণীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘জাতিসংঘ ঘোষিত নির্যাতনের শিকারদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক দিবসটি পালিত হয় ২৬ জুন। এই দিবসটি নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের সমর্থনে এবং নির্যাতনের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য পালিত হয়। আমি এই আন্তর্জাতিক দিবসে বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বের নিপীড়িত-নির্যাতিত মজলুম ব্যক্তি, জাতি, গোষ্ঠী, বর্ণ ও ভাষাগত সম্প্রদায়ের প্রতি জানাই গভীর সমবেদনা ও সহমর্মিতা।’

তিনি বলেন, ‘গত বছর জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকারের বীভৎস দমন নীতির কারণে অসংখ্য প্রাণ ঝরে গেছে এবং হাজার হাজার ছাত্র-জনতা পঙ্গুত্ববরণ করেছে। বিগত নিষ্ঠুর ও কর্তৃত্ববাদী আওয়ামী সরকারের উৎপীড়নের বিকট রূপ দেখে সারাবিশ্ব হতভম্ব হয়েছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘১৬ বছর ধরে তাদের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের কারণে গুম, কথিত বন্দুকযুদ্ধে হত্যা, শারীরিক নির্যাতনে মৃত্যুর শিকার হয়েছে অসংখ্য মানুষ। ফ্যাসিস্ট সরকারের জনগণের নিকট কোন জবাবদিহিতা ছিল না, সকল প্রতিষ্ঠানকে হাতের মুঠোয় নিয়ে একদলীয় দুঃশাসনের জগদ্দল পাথর জনগণের বুকের ওপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল। গণমাধ্যমকে হুমকি, ভয় ও নির্যাতন চালিয়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে নির্মমভাবে মাটিচাপা দেয়া হয়েছিল। আর বিএনপিসহ গণতন্ত্রকামী নেতা-কর্মীদের ওপর চালানো হয়েছে বেপরোয়া জুলুম-নির্যাতন। সারাদেশের মানুষ যেন ভয়াবহ নৈরাজ্যের অন্ধকারে বাস করেছে।’

পাঠকের মতামত

কোন যুক্তিতেই মব জাষ্টিস কাম্য নয়। আগের সরকার করেছে জন্য এর প্রতিশোধ হিসাবে মব জাষ্টিস করতে হবে এটা ঠিক না। সকলের মধ্যে মানবিক আচরণ বোধ ফিরে আসতে হবে।

SM. Rafiqul Islam
২৫ জুন ২০২৫, বুধবার, ৬:১৬ অপরাহ্ন

বিবৃতি সর্বস্ব রাজনীতি কাম্য নয়। বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ( যারা মব সৃষ্টি করছে) মব ভায়োলেন্স রোধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করা জরুরী। কিন্তু এক্ষেত্রে দল হিসাবে বিএনপির ভৃমিকা প্রশ্নবিদ্ধ।

প্রকাশে অনিচ্ছুক
২৫ জুন ২০২৫, বুধবার, ৪:৫৩ অপরাহ্ন

অনলাইন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

অনলাইন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status