অনলাইন
মোদির তীব্র সমালোচনা করলেন নিউ ইয়র্কের মেয়র পদপ্রার্থী মামদানি
মানবজমিন ডিজিটাল
(৭ ঘন্টা আগে) ২৮ জুন ২০২৫, শনিবার, ৩:৩১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৯:৪৮ অপরাহ্ন

নিউইয়র্কের মেয়র পদে ডেমোক্র্যাটিক প্রাইমারিতে জোহরান মামদানির দুর্দান্ত সাফল্যের পর থেকে তার একটি ভিডিও ভারতে ব্যাপক মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। যেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ‘যুদ্ধাপরাধী’ এবং ‘মুসলিমদের গণহত্যার’ সূচনাকারী বলে উল্লেখ করেছেন মামদানি। উগান্ডায় জন্মগ্রহণকারী ৩৩ বছর বয়সী মামদানি ভারতীয় বংশোদ্ভূত। তিনি নিউ ইয়র্ক সিটির প্রথম দক্ষিণ এশীয় মেয়র হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন, যেখানে প্রায় ২০০,০০০ ভারতীয় আমেরিকান বাস করেন। সেইসঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে একটি।
গত মাসে একটি প্রার্থী ফোরামে, মেয়র পদপ্রার্থীদের জিজ্ঞেস করা হয়েছিল মোদি নিউ ইয়র্ক সফরে গেলে তার সাথে দেখা করতে ইচ্ছুক কিনা। এই প্রশ্নের জবাবে, মামদানি এবং উপস্থিত অন্যান্য প্রার্থীরা বলেছিলেন যে, তারা তা করবেন না। কেবল মামদানিকেই আরো একধাপ এগিয়ে বলতে শোনা গেছে, মোদিকে একজন ‘যুদ্ধাপরাধী’ হিসেবে দেখা উচিত, ঠিক ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মতো। গাজা যুদ্ধে নেতানিয়াহুর ভূমিকার জন্য তারও সমালোচনা করেছেন মামদানি। মোদি যখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, তখন ভারতের গুজরাট রাজ্যে দাঙ্গায় ১,০০০ এরও বেশি মুসলিমের মৃত্যুর জন্য মামদানি ভারতীয় বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে দায়ী করেছেন। মোদি সহিংসতা উস্কে দিয়েছিলেন এবং তা বন্ধে কোনও হস্তক্ষেপ করেননি বলেও অভিযোগ মামদানির। যার ফলে এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে তার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের ভিসা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল।
মামদানি মুসলিম পরিবারের ছেলে। তার বাবা গুজরাটের বাসিন্দা ছিলেন। সেই সূত্রে মামদানি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে গুজরাটে খুব কম মুসলিমই রয়ে গেছেন। এক্সে পোস্ট করা মামদানির মন্তব্যের সারসংক্ষেপ লাখ লাখ ভিউ এবং হাজার হাজার প্রতিক্রিয়া পেয়েছে। যার মধ্যে ভারতীয় রাজনীতিবিদরাও রয়েছেন।
হিন্দু-সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারত এবং মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ পাকিস্তানের মধ্যে কয়েক দশক ধরে চলে আসা শত্রুতার কথা উল্লেখ করে ভারতীয় সংসদ সদস্য অভিষেক সিংভি এক্সে লিখেছেন, জোহরান মামদানি পাকিস্তানের জনসংযোগ টিমের মতো কথা বলছেন । নিউ ইয়র্কে বসে তিনি কাল্পনিক কথা বলছেন।'
মামদানির প্রাথমিক জয়ের পর একজন এক্স ব্যবহারকারী লিখেছেন, গুজরাটে কোনো মুসলিম অবশিষ্ট নেই, এই ধরনের মিথ্যা প্রচার করার জন্য মামদানিকে সমর্থন করা উচিত না।'
মোদি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী ভারতীয় প্রবাসীদের সাথে দৃঢ় সম্পর্ক বজায় রেখেছেন। সেপ্টেম্বরে নিউ ইয়র্ক সিটিসহ একাধিক সফরে তিনি বড় আকারের জনসমাগমে ভাষণ দিয়েছেন। ২০১৯ সালে ‘হাউডি মোদি’ নামে একটি সমাবেশে তিনি টেক্সাসের প্রায় ৫০,০০০ দর্শকের সামনে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সাথে মার্কিন-ভারত সম্পর্ক উদযাপন করেছিলেন।
মামদানি দীর্ঘদিন ধরে মোদি এবং তার হিন্দু জাতীয়তাবাদের সমালোচনা করে আসছেন। ২০২০ সালে সোশ্যাল মিডিয়ায় মোদিপন্থী ব্যক্তিত্বদের কাছ থেকে অনুদান গ্রহণের জন্য তার কংগ্রেস সদস্যের সমালোচনা করে মামদানি লিখেছিলেন, ভারতের ডানপন্থী সরকার মুসলিম ভারতীয়দের বিরুদ্ধে নৃশংস সহিংসতার প্রচারণা চালাচ্ছে। আমাদের নেতাদের এই নৃশংসতার তীব্র নিন্দা করা উচিত।
মামদানির মোদি-বিরোধী মন্তব্য বা তাদের প্রাপ্ত প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে মন্তব্যের অনুরোধের জবাব দেয়নি তার প্রচারণা দল।
সূত্র : ওয়াশিংটন পোস্ট
পাঠকের মতামত
শুভকামনা মামদানি।