বিশ্বজমিন
তাইওয়ান
পূর্ণ মাত্রার সংকটের জন্ম দেবে চীনের সামরিক মহড়া
মানবজমিন ডেস্ক
(২ বছর আগে) ৩ আগস্ট ২০২২, বুধবার, ২:৫৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১০:৪৪ পূর্বাহ্ন

এখন এটি স্পষ্ট যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরকে কেন্দ্র করে সর্বোচ্চ প্রতিক্রিয়া দেখাতে চায় চীন। শুধুমাত্র কিছু নিন্দা বার্তা কিংবা তাইওয়ানের কয়েকটা কোম্পানিকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েই তারা সন্তুষ্ট নয়। এরইমধ্যে তারা বৃহস্পতিবার থেকে তাইওয়ানের চারদিকে বড় পর্যায়ের সামরিক মহড়ার ঘোষণা দিয়েছে। চার দিন ধরে চলবে এই মহড়া। এতে যে ৬টি জোন ঘোষণা করা হয়েছে তা সহজেই এই পরিস্থিতিকে পূর্ণ মাত্রার সংকটে পরিণত করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
বিবিসি জানিয়েছে, ১৯৯৬ সালেও একই ধরণের পদক্ষেপ নিয়েছিল বেইজিং। সেবার এর নাম দেয়া হয়েছিল ‘তাইওয়ান স্ট্রেইটস ক্রাইসিস’। তবে তখনও তাইওয়ানের জলসীমার বাইরেই ছিল চীনের আনাগোনা। এবার আর সেটুকু সুযোগও রাখেনি চীন। তাদের ঘোষিত ৬টি জোনের ৩টিই তাইওয়ানের ১২ মাইল সীমানার মধ্যে পড়েছে। এই ঘটনা অভূতপূর্ব।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এরইমধ্যে এই ঘটনাকে জাতিসংঘ কনভেনশনের লঙ্ঘন বলে আখ্যায়িত করেছে। দেশটির দাবি, চীন তাদেরকে ভূমি, সমুদ্র ও আকাশে অবরুদ্ধ করে ফেলতে চাইছে। যদি চীন ওই এলাকায় যুদ্ধজাহাজ কিংবা যুদ্ধবিমান পাঠায় তাহলে তা তাইওয়ানের মধ্যে ঢুকে আগ্রাসন চালানোর সমান হবে। তখন তাইওয়ান হয়তো নিজের সীমানা রক্ষার্থে চীনের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা চালাবে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস রোনাল্ড রিগ্যান ফিলিপাইন সাগরে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। ১৯৯৬ সালের সংকটের সময় সেসময়কার মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টন দুটি ক্যারিয়ার ব্যাটেল গ্রুপকে তাইওয়ানের কাছাকাছি মোতায়েন করেছিল। সেসময় দেশটি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছিল যে, যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের উপরে যে কোনো আঘাতের জবাব দিতে প্রস্তুত।
কিন্তু এখনকার দিনে সামরিক শক্তিতে অনেক পার্থক্য সৃষ্টি হয়েছে। ১৯৯৬ সালে চীন সামরিক দিক থেকে ছিল দুর্বল। কিন্তু আজ চীন নিজেও সামরিক পরাশক্তি। চীনের নিজেরই বিমানবাহী রণতরী রয়েছে এবং এই এলাকা চীনের উঠানেই। তাই যুক্তরাষ্ট্র কোনো সামরিক পদক্ষেপ নিলে চীনও পাল্টা জবাব দেবে তাতে সন্দেহ নেই। বর্তমানে তাইওয়ানের দিকেই মোতায়েন করা হচ্ছে চীনের রণতরী দুটো। ফলে বৃহস্পতিবার যে সামরিক মহড়া শুরু হচ্ছে তা শুধু আর দশটা সাধারণ মহড়াই নয়। এটি থেকেই নির্ধারিত হতে পারে তাইওয়ানের ভাগ্য।