ঢাকা, ১৮ মে ২০২৫, রবিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৯ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

বিশ্বজমিন

ত্রিপোলিতে ব্যাপক গোলাগুলি, মিলিশিয়া নেতা নিহত, শহরজুড়ে সহিংসতা

মানবজমিন ডেস্ক

(১০ ঘন্টা আগে) ১৮ মে ২০২৫, রবিবার, ১২:১৭ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৯:২২ অপরাহ্ন

mzamin

লিবিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী মিলিশিয়া নেতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত আবদেল ঘানি আল-কিকলি নিহত হওয়ার পর রাজধানী ত্রিপোলিতে তীব্র সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে। সংঘর্ষে অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে লিবিয়ার জরুরি চিকিৎসা ও সহায়তা কেন্দ্র। 

আবদেল ঘানি আল কিকলি ব্যাপকভাবে ঘেনিওয়া নামে পরিচিত। তিনি ত্রিপোলির প্রভাবশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী ‘স্ট্যাবিলিটি সাপোর্ট অ্যাপারেটাস’ (এসএসএ)-এর প্রধান ছিলেন। আশ্রয়প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধে অভিযুক্ত তিনি। সোমবার রাতে তিনি লিবিয়ান সেনাবাহিনীর ৪৪৪তম কমব্যাট ব্রিগেডের সদর দপ্তরে নিহত হন। এ তথ্য একটি নিরাপত্তা সূত্র আল-ওয়াসাত টেলিভিশনকে জানায়। 

অনলাইন গার্ডিয়ান বলছে, ঘেনিওয়া সম্প্রতি প্রতিদ্বন্দ্বী মিলিশিয়াদের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন, বিশেষ করে মিসরাতা-ভিত্তিক গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে। এসএসএ ২০২১ সালে জাতিসংঘ সমর্থিত প্রক্রিয়ায় ক্ষমতায় আসা আবদুল হামিদ দাবাইবাহর নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্য সরকারের অধীনে পরিচালিত হচ্ছিল। ঘেনিওয়ার মৃত্যুর পরপরই ত্রিপোলির আবু সালিম ও সালাহ উদ্দিন এলাকায় রাতভর ভারী গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। শহরের কেন্দ্রেও সংঘর্ষের আওয়াজ ছড়িয়ে পড়ে। এঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নাগরিকদের নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করার আহ্বান জানিয়েছে। এর পর শহরের বিভিন্ন রাস্তায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেক চালক দ্রুতগতিতে গাড়ি চালাতে শুরু করেন এবং হর্ন বাজাতে থাকেন।

একজন স্থানীয় বাসিন্দা রয়টার্সকে বলেন, আমি প্রচণ্ড গুলির শব্দ শুনেছি এবং আকাশে লাল আলো দেখেছি। আরও অনেকেই জানিয়েছেন, তাদের এলাকায় টানা গুলির আওয়াজ শোনা গেছে। ঘেনিওয়ার নেতৃত্বাধীন এসএসএ’র বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে আশ্রয়প্রার্থীদের উপর নির্যাতন, অবৈধ আটক ও নিখোঁজ হওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। কিছু মানবাধিকার সংস্থা এ গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগও তুলেছে।
এই হত্যাকাণ্ড এবং পরবর্তী সহিংসতা লিবিয়ার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক ও সামরিক অস্থিরতাকে আরও গভীর করছে।

জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে গঠিত বর্তমান সরকার এখনও দেশের মিলিশিয়া-নির্ভর বাস্তবতার মধ্যে জর্জরিত। ঘেনিওয়ার মৃত্যু লিবিয়ার সামরিক ভারসাম্যে বড় ধাক্কা হতে পারে। ত্রিপোলির সহিংসতা ঘনীভূত হবার পর, জাতিসংঘের লিবিয়া মিশন সকল পক্ষকে যুদ্ধবিরতি ও শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছে। তারা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে, নাগরিক ও বেসামরিক অবকাঠামোর উপর হামলা যুদ্ধাপরাধের শামিল। ঘটনার কেন্দ্রে থাকা আবদেল ঘানি আল-কিকলি ওরফে ঘেনিওয়া ছিলেন লিবিয়ার অন্যতম আলোচিত এবং বিতর্কিত মিলিশিয়া নেতা। তার মৃত্যুর প্রতিক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো দীর্ঘদিনের অভিযোগ ও তথ্য সামনে এনেছে, যা ঘেনিওয়ার বিরুদ্ধে গুরুতর আন্তর্জাতিক অপরাধের চিত্র তুলে ধরে।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের একজন বিশেষজ্ঞ জানান, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে প্রকাশিত রিপোর্টে ঘেনিওয়াকে লিবিয়ার ক্ষমতার ভারসাম্যের কেন্দ্রীয় চরিত্র হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, যিনি দুর্নীতির মাধ্যমে মিলিশিয়া অর্থায়নে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন।

অ্যামনেস্টির মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার উপ-পরিচালক ডায়ানা এলতাহাওয়ি বলেন, আল-কিকলির মিলিশিয়া ভয়াবহ অপরাধে জড়িত। সেটা অভিবাসী, শরণার্থী বা লিবিয়ানদের বিরুদ্ধেই হোক না কেন। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে তারা আবু সালিম এলাকায় জনগণকে আতঙ্কিত করে রেখেছে। তিনি আরও বলেন, ঘেনিওয়ার বিরুদ্ধে যদি পর্যাপ্ত প্রহণযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে তাকে অবশ্যই নিরপেক্ষ বিচারপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে শাস্তির আওতায় আনা উচিত ছিল।

 

পাঠকের মতামত

Let them annihilate each other.

Muhammad Nurul Islam
১৮ মে ২০২৫, রবিবার, ১২:৪৮ অপরাহ্ন

বিশ্বজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বিশ্বজমিন সর্বাধিক পঠিত

ডনের সম্পাদকীয় / ক্রসরোডে বাংলাদেশ

ক্রাউন প্রিন্সকে ট্রাম্প/ রাতে আপনি ঘুমান কিভাবে?

১০

‘অপারেশন বুনিয়ানুম-মারসুস’ শুরু/ ‘আত্মরক্ষা ছাড়া উপায় ছিল না পাকিস্তানের’

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status