বিশ্বজমিন
হামাসের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব, জবাব নেই ইসরাইলের
মানবজমিন ডেস্ক
(১০ ঘন্টা আগে) ১৮ মে ২০২৫, রবিবার, ১১:৩৯ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৭:৫৬ অপরাহ্ন

ইসরাইলের নতুন করে ভয়াবহ হামলার মধ্যেই হামাস গাজায় নতুন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে আরও জিম্মি মুক্তি দিতে চেয়েছে। শনিবার কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দোহা’য় এ নিয়ে আলোচনা হয়। এতে বলা হয়, ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে ৯ জন জিম্মিকে মুক্তি দিতে রাজি হয়েছে হামাস। বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে ইসরাইলকে। ওদিকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গাজায় ভয়াবহ হামলায় ২৪ ঘন্টায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৪০ ফিলিস্তিনি। একে জাতিনিধন হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার থেকে এ পর্যন্ত গাজায় হত্যা করা হয়েছে কমপক্ষে ৩০০ মানুষকে।
ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালের পরিচালক মারওয়ান আল সুলতান বলেছেন, শনিবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে আমরা ৫৮ জন শহীদের দেহ পেয়েছি। ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন অসংখ্য মানুষ। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি, গার্ডিয়ান।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, নতুন প্রস্তাবে প্রতিদিন ত্রাণবাহী ৪০০ ট্রাককে গাজায় প্রবেশ করতে দিতে হবে। একই সঙ্গে গাজায় যেসব মানুষ মারাত্মক অসুস্থ তাদেরকে উদ্ধার করতে দিতে হবে। বিনিময়ে বাকি সব জিম্মি যে বেঁচে আছেন সে বিষয়ে প্রমাণ ও বিস্তারিত জানাতে বলেছে ইসরাইল। এ দেশটি গাজায় নতুন করে দখল করে নিতে আক্রমণ শুরু করেছে। এমন সময় শনিবার বিকেলে দোহায় ওই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু হামাসের প্রস্তাবে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেনি ইসরাইল। তবে আলোচনার আগে তারা জানিয়ে দিয়েছে, গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে না অথবা যুদ্ধের ইতি টানবে না। প্রস্তাবের মধ্যে এসব বিষয় থাকতে পারবে না।
উল্লেখ্য, শনিবার থেকেই গাজায় ভয়াবহ ‘অপারেশন গিডিওনস চ্যারিয়ট’ শুরুর ঘোষণা দিয়েছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। এদিন গাজা সীমান্তে বিপুল পরিমাণ ট্যাংক মোতায়েন করতে দেখা গেছে তাদেরকে। বোঝা যায়, এসব ট্যাংক ওই অভিযানে ব্যবহার করা হবে। দীর্ঘদিন ধরে গাজাকে দখল করে নেয়ার হুমকি দিচ্ছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।
সম্প্রতি একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, গাজার দশ লাখ মানুষকে লিবিয়ায় স্থানান্তরের পরিকল্পনা আছে ট্রাম্প প্রশাসনের। ফলে আন্তর্জাতিক এই চাপে গাজাবাসী নাস্তানাবুদ। তার ওপর গত বৃহস্পতিবার থেকে কমপক্ষে ৩০০ মানুষকে সেখানে হত্যা করেছে ইসরাইল। উদ্ধারকর্মীরা বলছেন, গাজার উত্তর ও দক্ষিণে হাসপাতাল ও শরণার্থী শিবিরগুলোতে হামলা চালানো হয়েছে। প্রথম দফা যুদ্ধবিরতির পর ১৮ই মার্চ থেকে নতুন করে হামলা শুরু করে ইসরাইল। এতে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
ওদিকে দাতা সংস্থাগুলো বলছে, গাজার মানবিক পরিস্থিতি ভয়াবহ। এর দ্রুত অবনতি হচ্ছে। কারণ, ১০ সপ্তাহ ধরে সেখানে কোনো প্রকার ত্রাণ যেতে দিচ্ছে না ইসরাইল। এর ফলে ভয়াবহ খাদ্য, পানি, ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। দিনে একবেলা কেউ খাবার পাচ্ছে। কেউ পাচ্ছে না। বিশেষ করে শিশুদের অবস্থা বেশি শোচনীয়। কিন্তু কিছুতেই নেতানিয়াহুর দম্ভ থামছে না। তিনি গাজাকে দখল করে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। ফিলিস্তিনিদের গাজার দক্ষিণে চলে যেতে বলেছেন। নির্দেশ দিয়েছেন হামাসকে ধ্বংস করতে।
গাজা থেকে সাংবাদিক গাদা আল কুর্দ বিবিসিকে বলেছেন, গাজার উত্তর ও পূর্বদিকে ভয়াবহভাবে আকাশ থেকে হামলা করা হচ্ছে। গোলা নিক্ষেপ করা হচ্ছে। ড্রোন থেকে হামলা চালানো হচ্ছে। গুলি করা হচ্ছে। এমনকি বিস্ফোরণ ঘটানো হচ্ছে। পরিস্থিতি ভয়াবহত ও আতঙ্কজনক। তিনি জানিয়েছেন, তার পরিবার দিনে একবেলা খাবার খেয়ে বেঁচে আছে। সাহায্য বিষয়ক সংস্থাগুলো বলছে, গাজার কমপক্ষে ২১ লাগ মানুষ ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের মুখে।
পাঠকের মতামত
Already দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে - আজ ৩ সপ্তাহ ধরে বলছেন দুর্ভিক্ষের মুখে
হামাসের লক্ষ্য পূরন হয়েছে বলা যায়।এ অবস্থায় ইস্রাইলের শেষ সৈন্য খতম না হওয়া পর্যন্ত হামাসের যুদ্ধ বিরতি প্রস্তাব দেওয়া ঠিক হবেনা।