শেষের পাতা
তারুণ্যের সমাবেশ থেকে যে বার্তা দিতে চায় বিএনপি’র ৩ সংগঠন
কিরণ শেখ
৫ মে ২০২৫, সোমবার
তারুণ্যের সেমিনার ও সমাবেশে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা, তরুণদের মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলা এবং তাদের জাতীয়তাবাদী রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত করাসহ বিভিন্ন বার্তা দেবে বিএনপি’র তিন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন। কর্মসূচি বাস্তবায়নে ইতিমধ্যে বিভাগীয় শহর, জেলা ও থানা পর্যায়ে যৌথসভা ও প্রস্তুতি সভা করছে। একইসঙ্গে অনলাইন ক্যাম্পিং শুরু করেছে বিএনপি’র এ তিন সংগঠন। এ ছাড়া সেমিনারে কর্মসংস্থান, বহুমাত্রিক শিল্পায়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, মৌলিক অধিকার, কৃষি উন্নয়ন, পরিবেশ রক্ষা এবং নাগরিক সমস্যা নিয়ে তারুণদের বক্তব্য ও মতামত শুনবেন নেতারা। মতামতগুলো বিচার-বিশ্লেষণ করে তার ভিত্তিতেই আগামীতে পথ চলবে বিএনপি। ওদিকে একটি বার্তা নিয়েই তারুণ্যের সমাবেশ করবে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। সংগঠন তিনটি বলছে, ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ’। এর মধ্যদিয়ে তরুণদের জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি’র রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করবে তারা। মূলত তরুণদের একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফরম গড়ে তুলতেই এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলেও বিএনপি’র সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলসহ বিএনপি’র অঙ্গসংগঠনের বাইরে যেসব তরুণ রয়েছেন, যারা বিএনপি’র কিংবা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়- তাদের সেমিনারে আনার ওপর বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। অন্য যেকোনো প্ল্যাটফরমে যারা ভালো করছে, তাদেরও এই সেমিনারে আনা হবে। এরমধ্যে সাংবাদিক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারসহ বিভিন্ন পেশার তরুণদের সম্পৃক্ত করার জন্য বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে সংগঠন তিনটি। শুধু শিক্ষিত তরুণ নয়, যেসব তরুণ বিদ্যালয়ে যেতে পারেনি, তাদেরও এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য গুরুত্ব আরোপ করেছেন বিএনপি’র হাইকমান্ড।
ওদিকে সেমিনার ও সমাবেশকে ঘিরে সর্বস্তরের তরুণদের ‘সেমিনার ও সমাবেশ’ করার জন্য কাজ করছে বিএনপি’র তিন সংগঠন। ব্যানারে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলের উদ্যোগে লেখা থাকলেও সর্বস্তরের তরুণদের এক কাতারে আনার জন্য চেষ্টা করছে এই তিন সংগঠনের নেতারা। বিএনপি’র কাছে তরুণদের প্রত্যাশা কী তা এসব সেমিনারে শুনবেন নেতারা। সেই মতামত নিয়ে আগামী দিনে বিএনপি জনগণের ভোটে রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে সেসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করবে দলটি।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপি’র তিন সংগঠনের দু’জন শীর্ষ নেতা মানবজমিনকে বলেন, দেশের তরুণদের নিয়ে ব্লেইম গেইম চলছে। মেধাবী তরুণরা কর্মসংস্থান না পেয়ে বিদেশে পাড়ি দিচ্ছে। আর দেশে ফিরছে না। দেশ হারাচ্ছে তার মেধাবী সন্তানকে। যা উন্নয়নের ক্ষেত্রেও বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বিএনপি তরুণদের এই মেধা, জ্ঞান এবং তাদের স্বপ্নকে ধারণ করতে চায়। তাদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে তরুণদের দেশের উন্নয়নে কাজে লাগাতে চায় বিএনপি।
গত ২৮শে এপ্রিল ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বগুড়ায় ‘তারুণ্যের সেমিনার এবং সমাবেশ’-এর ৮ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি’র তিন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন। এরমধ্যে ৯ই মে চট্টগ্রামে সেমিনার এবং ১০ই মে সমাবেশ, ১৬ই মে খুলনায় সেমিনার ও ১৭ই মে সমাবেশ, ২৩শে মে বগুড়ায় সেমিনার ও ২৪শে মে সমাবেশ এবং ২৭শে মে ঢাকায় সেমিনার ও ২৮শে মে সমাবেশ। এরমধ্যে চট্টগ্রাম, খুলনা এবং বগুড়ায় সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের থাকার কথা রয়েছে। সর্বশেষ ২৮শে মে ঢাকায় সমাবেশে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে প্রধান হিসেবে রাখতে চায় যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। তবে এবিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি বলে সূত্রটি জানিয়েছে।
স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান মানবজমিনকে বলেন, সেমিনার এবং সমাবেশে দেশের সব তরুণদের আমরা আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আমরা তাদের কথা শুনবো। সেমিনার এবং সমাবেশ হবে সব তরুণদের।
যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন মানবজমিনকে বলেন, দেশের তরুণদের স্বপ্ন, মেধা, জ্ঞান, শক্তি এবং সাহসকে ধারণ করার সক্ষমতা বিএনপি’র রয়েছে। তাদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে দেশের উন্নয়নে আমরা কাজে লাগাতে চাই।
ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির মানবজমিনকে বলেন, এই সমাবেশ হবে ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ’। আর সেমিনারে কর্মসংস্থান, বহুমাত্রিক শিল্পায়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, মৌলিক অধিকার, কৃষি উন্নয়ন, পরিবেশ রক্ষা এবং নাগরিক সমস্যা নিয়ে তারুণদের বক্তব্য এবং মতামত শুনবো আমরা।