শেষের পাতা
শপথ নিতে চান ইশরাক তবে...
কিরণ শেখ
১ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ নিতে চান ধানের শীষের প্রার্থী ও বিএনপি’র আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। তবে এখন পর্যন্ত সরকারের তরফে তাকে শপথ পড়ানোর কোনো উদ্যোগ নেই। এ বিষয়ে তিনি মানবজমিনকে জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চাইলে শপথ নেবেন তিনি। আদালতের রায় সরকার অনুসরণ করবে বলেও তিনি আশাবাদী। এ বিষয়ে সরকারের সদিচ্ছার অভাব দেখতে পাচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন ইশরাক। আদালতের রায়ের পরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ এবং মেয়র হিসেবে শপথগ্রহণের বিষয়ে মঙ্গলবার মানবজমিন-এর সঙ্গে আলাপচারিতায় ইশরাক হোসেন এসব কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে শপথগ্রহণের জন্য অপেক্ষা করছি। কিন্তু এক্ষেত্রে সরকারের অনীহা দেখতে পাচ্ছি। ওদিকে মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেন যাতে শপথ নিতে না পারেন এজন্য বিভিন্নভাবে সরকারের দু’জন দায়িত্বশীল ব্যক্তি বাধা সৃষ্টি ও চাপ প্রয়োগ করছেন বলে বিএনপি’র সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
শপথগ্রহণের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ তার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি বলে জানিয়েছেন ইশরাক হোসেন। বলেন, সরকার চাইলে মেয়র হিসেবে তিনি শপথ নেবেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২০২০ সালের নির্বাচনে ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণার ফল বাতিল করে গত ২৭শে মার্চ ধানের শীষের প্রার্থী ও প্রয়াত বিএনপি নেতা অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করেন ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম। পরে ২৭শে এপ্রিল আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি’র নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ওদিন রাতেই এ সংক্রান্ত গেজেট সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। ২০২০ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়। ওই নির্বাচনে দক্ষিণে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফজলে নূর তাপস মেয়র নির্বাচিত হন। ওই নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত তাপসকে মেয়র ঘোষণা করে সরকারের জারি করা গেজেটও বাতিল করা হয়েছে। পরে ২০২০ সালের ৩ মার্চ নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফল বাতিল চেয়ে মামলা করেছিলেন ইশরাক। মামলায় তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা, রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবদুল বাতেন এবং ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসসহ মোট ৮ জনকে বিবাদী করা হয়েছিল।
ওদিকে ৫ই আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী সরকারের পতনের পর দেশের সব সিটি করপোরেশনের মতো ঢাকার দুই মেয়রের পদও শূন্য ঘোষণা করা হয়।
‘মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার জন্য ইশরাক হোসেন নির্বাচন কমিশনের ওপর চাপ প্রয়োগ করছেন’- এমন অভিযোগকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আখ্যায়িত করেছেন ইশরাক। বলেন, অনেকে বলছেন যে- আমি না কি নির্বাচন কমিশনের ওপর চাপ প্রয়োগ করছি। এখানে তো চাপ প্রয়োগের কিছু নেই। আমি মামলা করেছি, রায় পেয়েছি। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের কেউ আমাকে চেনেন না। আমিও তাদেরকে চিনি না। পরিচয়েরও তো একটা বিষয় থাকে। আমি পরিচয় হতেই নির্বাচনে কমিশনে গিয়েছিলাম।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ব্যাপক দুর্নীতি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ইশরাক হোসেন। তিনি বলেন, ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্রশাসক নিয়োগে ৫০ লাখ করে টাকা নেয়া হচ্ছে। জানতে পেরে এসব দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে আমি দু’দফা বাধা দিয়েছি।
ওদিকে ‘মেয়র হিসেবে শপথ নিয়ে কতদিন এই পদে থাকতে পারবেন ইশরাক হোসেন’- এই প্রশ্নও সামনে এসেছে। এ বিষয়ে ইশরাক বলেন, আমি ৫ বছরের জন্য মেয়র হয়েছি। আমি রায় পেয়েছি। রায় কার্যকর করতে হবে। আর শপথ নেয়ার পরে আমি পরিষ্কার করতে পারবো যে, আমি কতদিন কিংবা কত বছর থাকতে পারবো।
পাঠকের মতামত
ইশরাক আদালত কতৃক বৈধ মেয়র। আমরা চাই শপথের মাধ্যমে ইশরাক হোসেন তার মেয়র পদ ফিরে পাবেন।
যেখানে লীগের সকল নির্বাচন ছিল অবৈধ, সেখানে রায় পেয়ে ইশরাক কিভাবে মেয়র হয়? জনগণ জন্য নির্বাচন নাকি ক্ষমতার জন্য নির্বাচন?
আমরা হলেই বৈধ। ইসরাক সাহেবের দলের নির্বাচন একটি হলেই হল। কারণ ১ লা সেপ্টেম্বর ১৯৭৮ সালে বিএনপি গঠিত হওয়া পর আজ পর্যন্ত বিএনপি কোনদিন শান্তিপূর্ণ ভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নাই। যতবার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গিয়েছে ততবার ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য নানা রকম তালবাহান করেছে। সুতরাং তাদের সুষ্ঠ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দরকার নাই।
সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভাগুলোতে ও ওয়ার্ড গুলোতে প্রশাসন নিয়োগে বানিজ্য হচ্ছে, এমন একটি ধারণা তৈরি হয়েছে! এমতাবস্থায় মেয়র পদে শপথ নিতে ইশরাত বাধার সম্মুখীন হতে পারেন!
অবৈধ নির্বাচনকে বৈধতা দেয়া।
স্বৈরাচারের কোন নির্বাচনকে বৈধতা দেয়া ঠিক হবে না। ইশরাক অবিভক্ত সিটি করপোরেশন এর মেয়র হউক। এটা ভাংগলো কেন, এটার ব্যাখ্যা চাওয়া উচিত।
অবৈধ ফ্যাসিস্ট সরকারের অবৈধ নির্বাচন কমিশনের অধীনে অনুষ্ঠিত বৈধ নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন ধানের শীষের প্রার্থী ও প্রয়াত বিএনপি নেতা অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন !