শেষের পাতা
সিলেটে রথে এক মঞ্চে মুক্তাদির-আরিফ
ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে
২৮ জুন ২০২৫, শনিবার
সিলেটে রথযাত্রায় একমঞ্চে বিএনপি’র চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির ও আরিফুল হক চৌধুরী। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন খন্দকার মুক্তাদির। আর রথযাত্রার উদ্বোধক ছিলেন আরিফুল হক চৌধুরী। রথে দু’জনের একসঙ্গে উপস্থিতি দৃষ্টি কাড়ে সবার। আয়োজক সংগঠন ইসকনের নেতারাও পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন খুব কৌশলে। সিলেটে দলীয় প্ল্যাটফরম ছাড়া আর কোথাও একসঙ্গে মুক্তাদির ও আরিফকে কমই দেখা যায়। রথ উৎসবের উদ্বোধনী দিনে তারা দু’জন একমঞ্চে উপস্থিত থেকেছেন। সিলেট সিটি করপোরেশনের দু’বারের মেয়র ছিলেন আরিফুল হক চৌধুরী। মেয়র থাকাকালে তাকে প্রতি বছরই রথযাত্রায় উপস্থিত থাকতে হয়েছে। মেয়র পদ ছাড়ার পরও রথ উৎসবে ডাক পড়ে তার। এবারো তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে, খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির এবারই প্রথম হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বড় এই উৎসবে শরিক হলেন।
প্রধান অতিথি হয়ে বক্তব্য রাখলেন। সিলেটের ইসকন নেতারা জানিয়েছেন, সিলেটের এত বড় কোনো ধর্মীয় উৎসবে খন্দকার আব্দুল মুক্তাদিরকে অতিথি করার সুযোগ হয়নি। এ কারণে এবার তাকে প্রধান অতিথি করা হয়েছে। আর রীতি অনুযায়ী সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী হচ্ছেন র্যালির উদ্বোধক। তবে, দু’টি অনুষ্ঠানেই তারা দু’জন একসঙ্গে উপস্থিত থেকে আয়োজনকে বর্ণিল করেছেন। এদিকে, ইসকনের আয়োজনের রথযাত্রা শেষ করে মনিপুরী সম্প্রদায়ের আয়োজনে রথযাত্রায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আরিফুল হক চৌধুরী। রথ উৎসব সিলেটের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বড় উৎসব। প্রতি বছর রথযাত্রার দিনে মেলার আয়োজন করা হয়। রীতি অনুযায়ী মেলা করার অনুমতি দিয়ে রিকাবীবাজার রথ মেলাকে ইজারা দিয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশন। বসেছে রথের মেলাও। এতে করে জমজমাট এখন সিলেট নগরের রিকাবীবাজার।
এদিকে, ইসকনের আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যকালে বিএনপি’র চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির সিলেটের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধনের কথা তুলে ধরেছেন। বলেন, ‘আমি সব সময় মানবতার সেবায় পাশে ছিলাম এবং থাকবো। ইসকনের মতো সেবামূলক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে সহযোগিতা করতে পারা আমার জন্য সৌভাগ্যের’। আলোচনা সভা শেষে রথযাত্রার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এ সময় তিনি বলেন, ‘রথযাত্রার মতো উৎসব আমাদের ধর্মীয় ও সামাজিক ঐক্যকে দৃঢ় করে। ইসকন মন্দির শুধু ধর্মীয় কাজেই নয়, সমাজের কল্যাণেও অগ্রণী ভূমিকা রাখছে।’ মনিপুরী সম্প্রদায়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে তিনি বলেন, সিলেটে শান্তিপূর্ণভাবে রথ উৎসব পালন এ অঞ্চলের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
আগামীতেও তিনি হিন্দু ও মনিপুরী সম্প্রদায়ের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেন। রথযাত্রার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ইসকন বাংলাদেশের সহ-সভাপতি ও ইসকন সিলেট মন্দিরের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ ভক্তি অদ্বৈত নবদ্বীপ স্বামী মহারাজ। এতে উপস্থিত ছিলেন- সিলেটের মহানগর বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সিটি করপোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, সিলেট মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এমদাদ আহমদ চৌধুরী, সিলেটের হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টি সুদীপ রঞ্জন সেন বাপ্পু, ইসকন সিলেটের সাধারণ সম্পাদক ভাগবত করুনা দাস ব্রহ্মচারী, ইসকন সিলেটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বলদেব কৃপা দাস অধিকারী, বুদ্ধি গৌর দাস অধিকারী সহ অন্যান্য ভক্তবৃন্দ। বেলা ৩টায় রথযাত্রা মন্দির প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় মন্দিরে এসে শেষ হয়। শোভাযাত্রা চলাকালে ভক্তরা শঙ্খ, ঢোল ও কীর্তনের মাধ্যমে পরিবেশ মাতিয়ে তোলেন। সড়কের দুইপাশে হাজার হাজার মানুষ দাঁড়িয়ে ছিলেন জগন্নাথ দেব, বলরাম ও সুভদ্রার রথের দর্শনের আশায়। ইসকন মন্দিরে এই রথযাত্রা উপলক্ষে ৯ দিনব্যাপী বিভিন্ন ধর্মীয় কর্মসূচি, আলোচনা সভা, প্রসাদ বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলবে বলে জানিয়েছেন ইসকন সংশ্লিষ্টরা।
পাঠকের মতামত
Iskan Islam biddasi group orA Islam against odar sata jogdila eman taka na