শেষের পাতা
জুলাই মাসে জ্বালানি তেলের দাম অপরিবর্তিত
হঠাৎ পাম্পে সংকট সৃষ্টিতে ভোগান্তি
স্টাফ রিপোর্টার
৩০ জুন ২০২৫, সোমবার
ভোক্তা পর্যায়ে ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রোল ও অকটেনের দাম জুলাই মাসে অপরিবর্তিত থাকবে। চলতি মাসের দামেই আগামী মাসে মিলবে এসব জ্বালানি তেল। গতকাল জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে।
এদিকে, রাজধানীতে গতকাল হঠাৎ করে পেট্রোল ও অকটেনের তীব্র সংকট দেখা দেয়। নগরীর অধিকাংশ পাম্পে জ্বালানি না থাকায় দুর্ভোগে পড়েন প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল ও গণপরিবহনের চালকরা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও জ্বালানি না পেয়ে অনেকে হতাশ হয়ে ফিরে যান। পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতি ও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) বলছে, ইরান-ইসরাইল সংঘাতের প্রভাবে তেলবাহী জাহাজ সময়মতো দেশে আসতে না পারায় এ সংকট তৈরি হয়েছে। তবে কেউ কেউ অভিযোগ করেন, তেলের দাম বাড়ানো হতে পারে-এমন খবরে তেল মজুত করে রেখে সংকট দেখান পাম্প মালিকরা।
এর আগে চলতি (জুন) মাসের জন্য গরিবের জ্বালানি হিসেবে পরিচিত কেরোসিনের দাম লিটার প্রতি ১০ টাকা বাড়িয়ে ১১৪ টাকা, ডিজেলের দাম লিটার প্রতি ২ টাকা কমিয়ে ১০২ টাকা এবং অকটেন ও পেট্রোলের দাম ৩ টাকা করে কমিয়ে যথাক্রমে ১২২ টাকা ও ১১৮ টাকা নির্ধারণ করে সরকার। বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গত বছরের মার্চ থেকে জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ করে আসছে সরকার। এই হিসেবে প্রতি মাসে নতুন দাম ঘোষণা করা হয়। অবশ্য অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর জ্বালানি তেলের দাম কমানোর পাশাপাশি কোনো কোনো মাসে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। আবার কোনো কোনো মাসে বেড়েছে। গত ফেব্রুয়ারির প্রথমদিনে প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ১০৪ টাকা থেকে এক টাকা বাড়িয়ে ১০৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এক টাকা বাড়িয়ে প্রতি লিটার অকটেন ১২৬ টাকা এবং পেট্রোল ১২২ টাকা নির্ধারণ করেছিল সরকার। পরের দুই মাস অর্থাৎ মার্চ ও এপ্রিলে তেলের দাম ছিল অপরিবর্তিত। মে মাসে সেই দাম লিটার প্রতি ১ টাকা করে কমানো হয়।
দিনভর পেট্রোল-অকটেন সংকট: এদিকে রাজধানীতে গককাল হঠাৎ করে পেট্রোল ও অকটেনের তীব্র সংকট দেখা দেয়। নগরীর অধিকাংশ পাম্পে জ্বালানি না থাকায় দুর্ভোগে পড়েন প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল ও গণপরিবহনের চালকরা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও জ্বালানি না পেয়ে অনেকে হতাশ হয়ে ফিরে যান। পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতি ও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) বলছে, ইরান-ইসরাইল সংঘাতের প্রভাবে তেলবাহী জাহাজ সময়মতো দেশে আসতে না পারায় এ সংকট তৈরি হয়েছে। তবে কেউ কেউ অভিযোগ করেন, তেলের দাম বাড়ানো হতে পারে-এমন খবরে তেল মজুত করে রেখে সংকট দেখান পাম্প মালিকরা।
বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংক-লরি মালিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মো. নাজমুল হক বলেন, ইরান-ইসরাইল যুদ্ধের ফলে তেলবাহী জাহাজ সময়মতো দেশে আসতে পারেনি। তাই তেল সরবরাহে কিছুটা বিঘ্ন ঘটেছে। তবে এটা সাময়িক সমস্যা, দ্রুত ঠিক হয়ে যাবে।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের পরিচালক (অপারেশন ও বিপণন) এ কে এম আজাদুর রহমান বলেন, মূলত ইরান-ইসরাইল যুদ্ধের ফলে আমাদের রেগুলার যে পার্সেল এসে থাকে, সেটা ব্যাহত হয়েছে। তবে ৩০শে জুন একটি পার্সেল আসবে। ফলে এ সমস্যা আর থাকবে না। তিনি আরও বলেন, অনেকেই বলছেন তেলের দাম বাড়বে বলে পাম্প মালিকরা তেল মজুত করে রেখেছেন। আমরাও এমন খবর পেয়েছি। এ বিষয়ে আমাদের টিম রেডি আছে। যেখানেই এমন খবর পাচ্ছি সেখানে লোক পাঠানো হচ্ছে। পাম্প মালিকরা যারা ভাবছেন এবারে তেলের দাম অনেক বাড়বে তারা ভুল ভাবছেন। এবার আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম খুব একটা বাড়েনি। তাই দেশের বাজারেও তেলের দাম বাড়ানোর সম্ভাবনা নেই।