ঢাকা, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৬ হিঃ

বাংলারজমিন

কমলগঞ্জে নিখোঁজ যুবকের খণ্ডিত মরদেহ মিললো রেল লাইনের পাশে

কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
২৮ এপ্রিল ২০২৫, সোমবার

কমলগঞ্জে শ্বশুর বাড়ি থেকে নিজ বাড়িতে ফেরার পথে মো. ইকবাল মিয়া নামে নিখোঁজ এক যুবকের খণ্ডিত মরদেহ উপজেলা রেলগেইটের পাশ থেকে উদ্ধার করেছে রেলওয়ে পুলিশ। এরআগে শনিবার বিকেল থেকে নিহত ইকবাল নিখোঁজ ছিলেন। এ ঘটনায় ওইদিন রাতে কমলগঞ্জ থানায় সাধারন ডায়রি করেন ইকবালের বাবা। ঘটনাটি নিছক দুর্ঘটনা না কী পরিকল্পিত হত্যা। এনিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। নিহত ইকবালের পরিবারের দাবী স্ত্রীর পরকীয়ার বলি হয়েছে ইকবাল। অপরদিকে ইকবালের শ্বশুর বাড়ির লোকজন বলছেন তাদের ফাঁসানোর জন্য পরিকল্পিত ভাবে তাদের জামাতাকে হত্যা করা হয়েছে।
জানা যায়, পাঁচ ছ’মাস আগে কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ভেড়াছড়া গ্রামের জনাব আলীর কন্যা রিমাকে বিয়ে করেন উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের বরচেগ গ্রামের ইলিয়াস মিয়ার ছেলে ইকবাল। নিহত ইকবালের পরিবারের সদস্যরা জানায় বিয়ের পর থেকে সন্তান নিতে অস্বীকৃতি জানায় স্ত্রী রিমা। এনিয়ে পারিবারিক কলহের মধ্যে বিয়ের আড়াই তিন মাসের মাথায় সন্তান নিতে রাজি হন স্ত্রী। 
নিহত ইকবালের পরিবারের সদস্যরা জানায়, শুক্রবার বিকালে ইকবাল শ্বশুর বাড়ীতে বেড়াতে যায়। শ্বশুর বাড়ীর লোকজন বলছে সেখান থেকে পরদিন শনিবার বিকেলে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হয়। এরপর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ইকবালের সন্ধান চেয়ে ছবিসহ উভয় পরিবারের লোকজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন। নিখোঁজের ঘটনায় শনিবার রাতে কমলগঞ্জ থানায় সাধারন ডায়রি করেন ইকবালের বাবা ইলিয়াস মিয়া। নিখোঁজের জিডি করার পরদিন গতকাল রোববার সকালে উপজেলা রেলগেইটের অদূরে রেললাইনের পাশে স'ানীয়রা কয়েক খন্ডিত একটি লাশ দেখতে পান। পরে ঘটনাটি জানাজানি হলে ইকবালের পরিবার এসে লাশটি শনাক্ত করেন। দুপুরে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে পুলিশের উপ-পরিদর্শক দীপক সরকারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল নিহতের হাত-পা বিচ্ছিন্ন লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঘটনার খবর পেয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাখন চন্দ্র সূত্রধর ঘটনাস'ল পরিদর্শন করেন। এছাড়া রেলওয়ে পুলিশের পাশাপাশি কমলগঞ্জ থানা পুলিশ এবং পিবিআই পৃথকভাবে ঘটনাটি তদন্ত করছে।
নিহত ইকবাল এর স্ত্রী রিমা বলেন, আমার স্বামী স্বাভাবিক ভাবে শনিবার আমাদের বাড়ি থেকে উনার বাড়ির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যান। ৬ মাস হয়েছে আমাদের বিয়ে হয়। ৩ মাসের বাচ্চা আমার পেটে। স্বামীর সাথে আমার কোনো ধরনের মন-মালিন্য ছিল না। আমরা শুধু স্বামী স্ত্রী ছিলাম না ভালো একটা বন্ধু ছিলাম। তিনি, অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বামী ট্রেনের নিচে পড়ে হত্যা করতে পারেন না। এটা পরিকল্পিত হত্যা। আমি স্বামী হত্যার বিচার চাই। নিহত ইকবালের পরিবারের দাবী-পুত্রবধূর পরকীয়ার কারণে ছেলেকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে রেললাইনে ফেলা হয়েছে। ইকবালের বাবা মো. ইলিয়াস মিয়া বলেন, আমি আমার ছেলের হত্যার বিচার চাই।
কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ ইফতেখার হোসেন বলেন, শনিবার রাতে নিহত ইকবালের বাবা থানায় এসে একটা জিডি করে গেছেন। যে বিকেল থেকে তাঁর ছেলেকে পাওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে পুলিশ। 
শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুদ হাওলাদার বলেন, নিহতের দেহ থেকে হাত-পা সহ পুরো শরীর ছিন্নভিন্ন অবস'ায় ছিল। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এটি পরিকল্পিত হত্যা নাকি আত্মহত্যা সেটি ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও তদন্তের পর জানা যাবে।

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status