ঢাকা, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৬ হিঃ

বাংলারজমিন

পদ্মা সেতুর প্রকল্প এলাকায় ভাঙন

শরীয়তপুরে ঝুঁকিতে বাঁধ, বড় ক্ষতির আশঙ্কা

শরীয়তপুর প্রতিনিধি
২৯ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার
mzamin

পদ্মা সেতুর প্রকল্প এলাকায় নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে ঝুঁকিতে পড়েছে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তের নাওডোবা এলাকার পদ্মা সেতু রক্ষার মূল বাঁধ। আসন্ন বর্ষা মৌসুমের আগে জরুরি ব্যবস্থা না নিলে ক্ষতির মুখে পড়তে পারে ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রায় ২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই বাঁধ। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, পদ্মা সেতুর এলাকায় বালুচর গড়ে ওঠা এবং বাঁধের নিকটবর্তী স্থানে নদীর গভীরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাঙন শুরু হয়েছে। বর্ষায় পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙনের তীব্রতাও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর আগে গত বছরের নভেম্বর মাসে জাজিরা প্রান্তের নাওডোবা জিরো পয়েন্ট এলাকায় রক্ষাবাঁধের প্রায় ১০০ মিটার অংশ নদীতে বিলীন হয়। তবে শরীয়তপুর পাউবো তাৎক্ষণিকভাবে মেরামত কাজ শুরু করতে পারেনি। চার মাস পর, চলতি বছরের ২৫শে এপ্রিল থেকে প্রায় ২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ব্যয়ে বালুভর্তি জিওব্যাগ ও সিসি ব্লক ফেলে মেরামত কাজ শুরু করেছে। এ ছাড়া, ভাঙনের আশপাশের অন্যান্য স্থানও ঝুঁকিতে রয়েছে। এ অবস্থায়, পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকা রক্ষায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠিয়েছে পাউবো। মন্ত্রণালয় থেকে প্রকল্প অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু হবে। অনুমোদন না হলে বর্ষার আগে মেরামত কাজ শুরু করা সম্ভব হবে না। পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকায় ভাঙনের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তারেক এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, প্রায় ১২-১৩ বছর আগে সেতু বিভাগ পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকা রক্ষার জন্য এ বাঁধ নির্মাণ করেছিল। বর্তমানে জাজিরার নাওডোবা জিরো পয়েন্ট এলাকায় ১০০ মিটার অংশ ভেঙে পড়ায় পাউবো ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ) যৌথভাবে সমীক্ষা চালায়। তাতে দেখা গেছে, প্রায় ১ কিলোমিটার অংশে বাঁধের নিকটে নদীর গভীরতা বেড়েছে এবং তলদেশ থেকে মাটি সরে যাচ্ছে। বাকি ১ কিলোমিটার অংশেও নদী বাঁধের কাছাকাছি চলে এসেছে এবং মাটির ক্ষয় অব্যাহত রয়েছে। ফলে পুরো বাঁধ এখন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। তিনি জানান, বাঁধ মজবুতকরণের জন্য একটি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল (ডিপিপি) প্রস্তুত করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বাঁধটি মজবুত করা না হলে পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের ৫০০ মিটারের মধ্যে থাকা সার্ভিস এরিয়া-২, সেনানিবাস, পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানা, একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নাওডোবা-পালেরচর সড়ক, মঙ্গল মাঝি ও সাত্তার মাদবর বাজারসহ চারটি গ্রামের কয়েকশ’ পরিবার ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়বে।
সরজমিন দেখা যায়, পদ্মা নদীর পানির প্রবল ধাক্কায় বাঁধ সংলগ্ন নদীশাসনের সংযুক্ত বাঁধের বালু মাটি ভেঙে নদীতে পড়ছে। আর একটির ওপর আরেকটি সারি করে রাখা বাঁধের সুরক্ষার জন্য ব্যবহৃত জিওব্যাগগুলো বালু থেকে বের হয়ে পানিতে পড়ছে। অন্তত ৫-৬টি স্থানে এ ধরনের ভাঙনের চিত্র দেখা গেছে। এদিকে, নদী ভাঙনের কারণে বাঁধের কাছাকাছি বসবাসকারী মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। কয়েকশ’ বসতবাড়ি এখন ভাঙনের হুমকিতে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সুমন কুমার বণিক বলেন, ভাঙন রোধে মন্ত্রণালয়ে প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। আমরা আশা করছি, এটি দ্রুত পাস হবে। পাস হলে আমরা কাজ শুরু করতে পারবো। তবে এই বর্ষায় পুরো কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না। চেষ্টা করবো আগামী বর্ষার মধ্যে কাজটি সম্পন্ন করতে।

 

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status