বাংলারজমিন
চকরিয়ার সাবেক এমপি জাফর ঢাকায় গ্রেপ্তার
চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
২৮ এপ্রিল ২০২৫, সোমবার
কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের সাবেক এমপি জাফর আলমকে রাজধানীর ধানমণ্ডি থেকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি। গতকাল দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ খবর শুনে চকরিয়া ও পেকুয়ায় সাধারণ মানুষ মিষ্টি বিতরণ করেছেন। মানবজমিনে গত বছরের ৭ই মে চকরিয়া-পেকুয়ায় অপরাধের স্বর্গরাজ্য জাফরের শিরোনামে ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশিত হয়ছে। তিনি এ দুই উপজেলায় গড়ে তুলেছিলেন সন্ত্রাসের স্বর্গরাজ্য। তার বিরুদ্ধে রয়েছে খুন-ডাকাতিসহ ১৮ মামলা। নিজস্ব বাহিনী গঠন করে খুনসহ বিভিন্ন অপরাধ করে দাপিয়ে বেড়িয়ে ছিলেন তিনি। দুই উপজেলায় জাফরের কথাই ছিল যেন আইন। নিজস্ব বাহিনী ব্যবহার করে খুন, পাহাড় কাটা, নদী দখল, চিংড়ি ঘের দখল ও অবৈধভাবে বালু উত্তোলনসহ বিভিন্ন অপরাধ অবাধে চালিয়েছেন। ভুক্তভোগীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে তার জুলুম-অত্যাচারে এলাকার মানুষ মুখ না খুললেও আওয়ামী সরকারের পতনের পর খুলতে শুরু করেছে। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার বিরুদ্ধে ব্যাপক আলোচনায় এসেছে- সাধারণ মানুষের জমি দখল করে মার্কেট নির্মাণ, চিংড়িঘের দখল, গরু চুরি, বিভিন্ন অপরাধে উঠে এসেছে জাফরের গঠিত বাহিনীসহ তার নাম। এ ছাড়া, ২০২৩ সালের ১৫ই আগস্ট সাঈদীর গায়েবানা জানাজায় গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যার ঘটনায় জড়িত বলে খুন হওয়া পরিবারের অভিযোগ। সেসময় অস্ত্রধারীর পাশে দাঁড়িয়ে মিছিলে নেতৃত্ব দিয়ে আলোচনায় আসেন জাফর আলম। স্ত্রী শাহেদা বেগমের নামে কেনা জমি দখল নিতে সোহেল নামে এক ছাত্রলীগ নেতা নিহত হন। এ পর্যন্ত জাফর আলমের নেতৃত্বে মিছিল থেকে তার বাহিনী গুলি চালিয়ে প্রতিপক্ষের অন্তত সাতজন রাজনৈতিক কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে।
জাফর আলমের পিএস আমিন প্রকাশ বার্মমাইয়া আমিন নামে পরিচিত। তার ভাতিজা রুবেল গড়ে তুলেছেন নিজস্ব একাধিক অস্ত্রধারী ক্যাডার বাহিনী। এই বাহিনী চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলায় অপরাধ জগৎ নিয়ন্ত্রণ করছে চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছরোয়ার আলম। বাইট্টা জাফর এক সময়ে সড়ক ও চিংড়িঘের ডাকাতি ও কালোবাজারির ব্যবসা করতেন। তার কাছে অসংখ্য দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ নির্যাতনের শিকার হয়েছে। উল্লেখ্য, সম্প্রতি জাফর আলম তার অস্ত্রসজ্জিত ক্যাডার বাহিনী নিয়ে প্রকাশ্যে মানবজমিনের চকরিয়া প্রতিনিধি ও চকরিয়া প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ উল্লাহকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে গুরুতর আহত করে টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়।