বাংলারজমিন
মরদেহ আনতেও হয়েছেন প্রতারিত
চার মাস পর মিললো সৌদি প্রবাসীর লাশ, পরিবারের আহাজারি
বেতাগী (বরগুনা) প্রতিনিধি
২৮ এপ্রিল ২০২৫, সোমবার‘আরে আমার ভাই, মোগো ভালো রাখতে দালাল ধইরা গেছিল বিদেশ। ৪ মাস আগে ভাই আমার মারা গেছে। এতদিন পরে কইলজার ভাইটা জীবিত না, মরা লাশ হইয়া আইলো। কে মোগো দেখবে। মায় বাপে কেমনে বাঁচবে। ওরে আল্লাহ এ কোন পরীক্ষায় ফালাইলা মোগো’ এভাবেই সৌদি প্রবাসী রুহুল আমিনের (৩৬) মরদেহের বাক্স জড়িয়ে ধরে কান্নারত অবস্থায় বলছিলেন তার বোন। দীর্ঘ ৪ মাস পর গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার মরদেহ নিজ বাড়িতে আসে। জানা যায়, উত্তর করুণা গ্রামের মো. মোশারেফ খানের ছেলে জসিম খান দীর্ঘদিন ধরে সৌদিতে আছেন। সে সুবাদে একই আঙ্গিনায় বসবাসরত রুহুল আমিনকে সৌদি নেয়ার কথা বললে তার পরিবার রাজি হয়। পরবর্তীতে জমি বিক্রি ও বিভিন্ন ধার-দেনা করে ৫ লাখ টাকা খরচ করে জসিমের মাধ্যমে ২০২৩ সালে সৌদি আরব যান রুহুল আমিন।
চুক্তি মোতাবেক কাজ ও পারিশ্রমিক পাওয়ায় জসিমের প্রতি রুহুলের পরিবারের আস্থা আরও বেড়ে যায়। গত ২রা জানুয়ারি জসিম খান, শুভ খান ও রেহানা বেগম রুহুলের মাকে জানান, তার ছেলে আত্মহত্যা করেছে। লাশ সৌদির একটা হাসপাতালে সংরক্ষিত আছে। লাশ আনতে হলে সাড়ে ৩ লাখ টাকা প্রয়োজন। শোকে কাতর মা বিভিন্নভাবে পুনরায় ধার-দেনা করে ৭ই ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টায় শুভ ও রেহানাকে ৩ লাখ টাকা তুলে দেন। লাশ এনে দেয়ার কথা বলে টাকাগুলো হাতিয়ে নেয় তারা। এ বিষয়ে জসিমসহ ৪ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা করেছেন একই বাড়িতে বসবাসরত সৌদি প্রবাসী মৃত রুহুল আমিনের মাতা রোশনা বেগম। আসামিরা হলো- জসিম খান (৩৫), শুভ খান (৩০), রেহানা বেগম (৫০) ও আমজেদ আলী খানের ছেলে মো. মোশারেফ খান (৬০)। দীর্ঘ ৪ মাস পর গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে অন্য একজনের মাধ্যমে রুহুলের মরদেহ নিজ বাড়িতে আসে। তবে রুহুল আমিনের মৃত্যু রহস্যটি রহস্যই রয়ে গেছে। প্রতারক জসিম মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলে রুহুলের মা-সহ স্বজনরা মনে করছেন।
তারা টাকা ফেরত পাওয়াসহ প্রতারকদের শাস্তি দাবি করছেন। এ বিষয়ে বেতাগী থানার অফিসার ইনচার্জ মনিরুজ্জামান মনির বলেন, এখন পর্যন্ত্ত এ বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ থানায় জমা পড়েনি। লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।