বাংলারজমিন
ময়মনসিংহে এএসপি-ওসির বিরুদ্ধে মামলা, জুডিশিয়াল তদন্তের নির্দেশ
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
২৮ এপ্রিল ২০২৫, সোমবারময়মনসিংহে প্রধান আসামীর নাম না দিয়ে মামলা নথিভুক্ত করায় জেলার ঈশ্বরগঞ্জ থানার সাবেক ওসি ও এসআইয়ের বিরুদ্ধে করা মামলাটি জুডিশিয়াল তদন্তের আদেশ দিয়েছেন বিচারক। আসামিরা হলেন, তৎকালীন ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাবেক ওসি মো. মিজানুর রহমান, তিনি পদোন্নতি পেয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হয়েছেন। বর্তমানে ঢাকায় কর্মরত রয়েছেন। সাবেক উপ-পরিদর্শক মো. মাজহারুল ইসলাম পদোন্নতি পেয়ে পরিদর্শক হয়েছেন বলে জানা গেছে। তিনি কোথায় কর্মরত তা জানা যায়নি।
রবিবার (২৭ এপ্রিল) বিকালে ময়মনসিংহ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৪ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক একেএম ছিফাতুল্লাহ্ এ আদেশ দেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. আজহারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মামলাটির তদন্ত করবেন ময়মনসিংহ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৭ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক মো. ইকবাল হোসাইন। কতদিন তদন্ত হবে তা বিচারকের ওপর নির্ভর করবে।
মামলা সূত্র জানায়, গিয়াস উদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে প্রতিবেশী নজরুল ইসলামের পরিবারের পূর্ব বিরোধ ছিল। ২০১০ সালের ২৭ নভেম্বর দুই পক্ষের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মারামারির ঘটনা ঘটে। এসময় প্রতিপক্ষের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে শফিকুল ইসলামের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স'ানে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। এমতাবস'ায় পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরলে কিছুদিন পর আবারও অসুস' হয়ে যান। এমতাবস'ায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে দশ দিন চিকিৎসা শেষে আবারও বাসায় নিয়ে আসা হয়। বাসায় কয়েক বছর স'ানীয়ভাবে চিকিৎসা চলছিল। ২০১৫ সালে গুরুতর অসুস' হলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কয়েকদিন চিকিৎসা শেষে বাসায় নিয়ে আসার পরদিন (ওই বছরের ২ জানুয়ারি) মারা যান শফিকুল ইসলাম।
এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই গিয়াস উদ্দিন বাদী হয়ে থানায় মামলা করতে গেলে ওসি মো. মিজানুর রহমান মামলা নেননি। এমতাবস'ায় ২০১০ সালের ৭ ডিসেম্বর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নালিশি অভিযোগ দায়ের করা হয়।
ওই দিনই অভিযোগ থানায় এজাহার হিসেবে নথিবদ্ধ করতে থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন বিচারক। ওসি মো. মিজানুর রহমান এজাহার হিসেবে নথিবদ্ধ না করে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মাজরুল ইসলামের মাধ্যমে বাদী গিয়াস উদ্দিনকে জানান মামলাটি থানায় এসেছে। আপনার (বাদীর) টিপসই লাগবে। বাদী সরল মনে ওসি ও এসআইয়ের কথা বিশ্বাস করে টিপসই দেন।
পরবর্তীতে আদালত থেকে বাদী মামলার কপি তুলে দেখেন, অন্য একটি মামলা লিখে বাদীর স্বাক্ষর নেওয়া যে মামলাটি এজহার হিসেবে নথিবদ্ধ করেন তাতে বাদীর নালিশি মামলার ১ নম্বর আসামি নজরুল ইসলামের নাম বাদ দিয়ে বাদীর ভাতিজা মো. আবদুর রশিদের নাম লিখে রাখা হয়েছে।
এর আগে গত ১৭ এপ্রিল ঈশ্বরগঞ্জ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান ও একই থানার সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মাজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করেন গিয়াস উদ্দিন (৫৫) নামের এক ব্যক্তি। ওইদিনই বিচারক একেএম ছিফাতুল্লাহ্ আবেদনটি আমলে নেওয়ায় রেজিস্ট্রার খাতায় মামলা (২৭৭/২৫) হিসেবে নথিবদ্ধ করা হয়।