বাংলারজমিন
কেন হত্যা করা হলো শিশু লাবিবকে?
ইমরান হোসেন সুজন, নবাবগঞ্জ থেকে
২৯ জুন ২০২৫, রবিবার
শুক্রবার দুপুর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ঘুরছে নিখোঁজ শিশু লাবিব পত্তনদারের ফুটফুটে একটি ছবি। তাকে ফিরে পেতে আকুতি জানিয়ে পোস্ট করেন স্বজনরা। নেটিজেনরাও লাবিবের খোঁজে শেয়ার করতে থাকেন পোস্টটি। শিশুটির মায়াবি মুখের ছবি একনজর যার দৃষ্টিতে পড়েছে তিনি ক্ষণিকের জন্য থেমে গেছেন। লাবিবকে খুঁজে পেতে প্রার্থনাও করেছেন অনেকে। অবশেষে শিশুকে খুঁজে পাওয়া গেলেও জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। শনিবার ভোরে এলাকার একটি ডোবা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। এমন ঘটনা ঘটেছে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার বাহ্রা ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামে। নিহত লাবিব পত্তনদার রসুলপুর এলাকার হারুন পত্তনদারের ছেলে এবং স্থানীয় আব্দুল জব্বার নূরানী কিন্ডারগার্টেনের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন লাবিব। এরপর বিভিন্ন জায়গা খোঁজ করতে থাকেন পরিবারের লোকজন। সন্ধান চেয়ে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয় যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। যা দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়।
শনিবার ভোরে এলাকার একটি ডোবায় শিশুর মরদেহ ভাসতে দেখে পুলিশকে খবর দেয় এলাকাবাসী। সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাল শেষে লাশ উদ্ধার করে থানায় এনে দুপুরে ময়নাতদন্ত করতে ঢাকা স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বাবুল পত্তনদার নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ডোবাতে ফেলে দেয় দুর্বৃত্তরা। নিহত শিশু লাবিবের মা চম্পা আক্তারের অভিযোগ, টাকার জন্য আমার ছেলেকে নিয়ে হত্যা করেছে। সায়েম তার ছেলেকে হত্যা করেছে বলে সন্দেহ তার। তাই ঘটনার পর হতে সায়েম পলাতক রয়েছে। সায়েম হোসেন বাহ্রা গ্রামে তার নানা বাড়ীতে থাকে। তার নামে মাদক কেনা বেচাসহ ব্যাপক অভিযোগ আছে বলে জানান ওই গ্রামবাসীরা।
এ বিষয়ে সায়েমের নানা কফিল উদ্দিনের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। চম্পা আরো বলেন, তার ছেলেকে হত্যার পর গুম করার পরিকল্পনা করে দুবৃর্ত্তরা। আমি এসব খুনিদের বিচার চাই। লাবিবের চাচা বাবু পত্তনদার বলেন, ওরা কেন আমার ভাতিজাকে মারলো এখনও বুঝতে পারছি না। তবে আমি চাই হত্যাকারীদের ফাঁসি হোক। হত্যার সঙ্গে জড়িতদের অনতিবিলম্বে বিচার দাবি করেন তিনি। স্থানীয় বাসিন্দা আলমগীর দেওয়ান ও শিউলী আক্তার বলেন, এতটুকু শিশুর কোন শত্রু থাকতে পারে না। পরিবারের সঙ্গে কারও শত্রুতা আছে কিনা তাও জানি না। যে কারণেই হোক যারা শিশুকে হত্যা করেছে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি চাই। এ বিষয়ে নবাবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করছি শিশুটিকে শ্বাসরোধে হত্যার পর পানিতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। তার গায়ে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় শিশুটির মা চম্পা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করবে। মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।