ঢাকা, ৩০ জুন ২০২৫, সোমবার, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৩ মহরম ১৪৪৭ হিঃ

বাংলারজমিন

আমেরিকা নেয়ার কথা বলে ৪৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ

লাকসাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
২৯ জুন ২০২৫, রবিবার

কুমিল্লার লাকসামে আমেরিকা নেয়ার কথা বলে ইয়াছিন ইমুর ও তার আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে ৪৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে এক প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে। দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও কোনো টাকা ফেরত দেয়া হয়নি। টাকা চাইতে গেলে সন্ত্রাসীদের দিয়ে হুমকি দেয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে লাকসামে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগীরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মামলার বাদী মো. দ্বীন ইসলাম বলেন, আব্দুল কাইয়ুমের এক ছেলে আমেরিকা বসবাস করছে। আমার ভাগিনা ইয়াছিন ইমুকে আমেরিকা নেয়ার কথা বলে ৫০ লাখ টাকা দাবি করে। ঢাকা থেকে বিমানযোগে মেক্সিকো এরপর সড়ক পথে ১০/১২ দিনের মধ্যে আমেরিকা যাওয়ার কথা। আমেরিকার বর্ডার থেকে তার ছেলে নিয়ে যাবে এবং আমেরিকায় কাজ ঠিক করে দিবে। তার কথা বিশ্বাস করে ২০২৩ সালে ১১ই ডিসেম্বর আব্দুল কাইয়ুমের সঙ্গে কথা হয়। আমরা গরিব মানুষ। অনেক  কষ্টে ৫০ লাখ টাকা থেকে ৪৪ লাখ টাকা দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। প্রথমে বাংলাদেশে ৪ লাখ টাকা দেয়া হয়। বাকি টাকা মেক্সিকো পৌঁছার পর দেয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। ২০২৩ সালের ৭ই ডিসেম্বর মেক্সিকোর উদ্দেশ্যে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে আমি ও আমার আত্মীয়স্বজনরা তাকে বিদায় জানাই। পরে মেক্সিকো না নিয়ে নেপাল বিমানবন্দরে নামানো হয়। এরপর তার ভাগিনা ইয়াছিন ইমু বলেন, আমিসহ ৭ জন বাংলাদেশি আমেরিকা যাওয়ার যাত্রী ছিলাম। মেক্সিকো না নিয়ে আমাদের নেপাল এয়ারপোর্টে নামানো হয়। পরে ২ জন নেপালী এসে আমাদেরকে নিয়ে নেপালে একটি রিসোর্টে নিয়ে যায়। রিসোর্টে নেয়ার পর আমাদের ৭ জনকে বেঁধে নির্যাতন করতে থাকে। পাসপোর্টসহ আমার কাছে ২ হাজার ডলার ছিল তাও নিয়ে যায়। এরপর গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দেয় ও শারীরিক নির্যাতন করতে থাকে। পরে তারা আমাদের আত্মীয়স্বজনকে ফোন দেয়ার জন্য বলে। তাদের কথামতো আত্মীয়কে বলি, আমরা মেক্সিকোতে রয়েছি এবং বাকি টাকা দিয়ে দেয়ার জন্য। মামলার বাদী মো. দ্বীন ইসলাম আরও বলেন, বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে আব্দুল কাইয়ুমকে ৪৪ লাখ টাকা প্রদান করি। টাকা দেয়ার পর আমার ভাগিনাসহ নেপাল এয়ারপোর্টে একটি গাড়িতে উঠিয়ে দেয়। এয়ারপোর্টের কাছে তাদেরকে নামিয়ে দেয়। পাসপোর্ট ও কাগজপত্র না থাকার কারণে নেপালি পুলিশ আমাদের গ্রেপ্তার করে। নেপালি পুলিশকে সব ঘটনা বলি। তারা আমাদের বাংলাদেশ দূতাবাসে নিয়ে যায়। দূতাবাস থেকে আমরা বাংলাদেশে ফিরে আসি। মামলার বাদী আরও বলেন, ঘটনা শোনার পর আমরা কাইয়ুমের নিকট সমস্ত ঘটনা জানাই। তিনি আমাদের বলেন, চিন্তা করিও না। আমি সমস্ত টাকা দিয়ে দিবো। এ নিয়ে এলাকায় বেশ কয়েকটি সালিশি বৈঠক হয়। কিন্তু  বৈঠকে কাইয়ুম উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও নানা কারণ দেখিয়ে উপস্থিত হন না। উপরন্তু টাকা চাইতে গেলে, তৎকালীন সময় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের দিয়ে হুমকি প্রদান করে। ২০২৪ সালে মনোহরগঞ্জ থানায় একটি মামলা করা হয়। মামলা করার পর বিভিন্নভাবে হুমকি ও আমার ভাগিনা ইমুকে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে। টাকা না দেয়ার কারণে আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি। সহায়সম্বল, জমি ও স্বর্ণ বিক্রি করে কাইয়ুমের নিকট আমরা উক্ত টাকা প্রদান করি। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিএনপি ও জামায়াতের সন্ত্রাসী দিয়ে এখনো অব্যাহতভাবে হুমকি প্রদান করছে। বিপুলাসার বাজারে তার একটি দোকান রয়েছে। সেখানে তাকে পাওয়া যায় না। যদিও বাজারে আসে বিভিন্ন সন্ত্রাসী তার সঙ্গে থাকে। এ ব্যাপারে কাইয়ুমের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
 

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন/ বড়লেখায় মন্দিরে চুরির রহস্য উদ্‌ঘাটন, ৬ চোর গ্রেপ্তার

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status