বাংলারজমিন
দৌলতপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে নাজুক অবস্থা
দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
৩০ জুন ২০২৫, সোমবারচিকিৎসক-সংকট, যন্ত্রপাতি বিকল এবং পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় সীমান্তবর্তী কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙের স্বাস্থ্যসেবা নাজুক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় ৭ লাখ মানুষের বৃহৎ উপজেলায় একমাত্র ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙটি চলছে চরম অব্যবস্থাপনার মধ্যদিয়ে। উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের ৫৩টি কমিউনিটি ক্লিনিক ও ৭টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রায় একই চিত্র। অধিকাংশ কমিউিনিটি ক্লিনিকে অনুপস্থিত থাকে স্বাস্থ্যকর্মীরা, নেই প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র ও স্বাস্থ্যসেবা। বিশেষ করে মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের প্রায় অর্ধলাখ মানুষ নির্ভর করে গ্রাম্য চিকিৎসক ও ওষুধ ব্যবসায়ীদের ওপর। বর্ষায় নৌকায় আর শুষ্ক মৌসুমে বালুচর পাড়ি দিয়ে হাসপাতালে পৌঁছাতে গিয়ে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে অহরহ বলে অভিযোগ রয়েছে।
সূত্র জানায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেঙের একমাত্র এঙ-রে মেশিনটি এক যুগ ধরে বিকল। ৩৫ জন চিকিৎসক পদের বিপরীতে কর্মরত মাত্র ৭ জন। এর মধ্যে নেই কোনো গাইনি বিশেষজ্ঞ। ফলে সিজারিয়ানসহ জটিল প্রসবের রোগীদের পাঠাতে হয় অন্য হাসপাতালে। ২০২২ সালে ৬ বছর পর চালু হওয়া অপারেশন থিয়েটারও আবার বন্ধ হয়ে গেছে। চলতি বছরের মে মাস থেকে সে সেবাও বন্ধ। এমন সংকটে চিকিৎসা নিতে আসা উপজেলার সাধারণ মানুষ বাধ্য হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন অনুমোদিত ও অনুমোদনহীন বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে, যেখানে স্বাস্থ্যসেবা মিলছে টাকার বিনিময়ে। দিনে গড়ে ৫-৬শ’ রোগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসেন। আর ৫০ শয্যার স্থলে ভর্তি থাকেন সর্বদা ৮০-১২০ জন রোগী। সেবা দিচ্ছেন মাত্র ৩ জন চিকিৎসক ও ৮ জন মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট।
এ বিষয়ে চিলমারী ইউপি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান বলেন, তার ইউনিয়নে কমিউনিটি ক্লিনিকে ওষুধ পাওয়া যায় না। জমি দিলেও আজও স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণ হয়নি। বারবার জানানো সত্ত্বেও কার্যকর পদক্ষেপ নেই। রোগীদের অভিযোগ, বাইরে থেকে খরচ করে এঙ-রে করতে হচ্ছে। চিকিৎসক সংকটে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে চিকিৎসা নিতে হয়, যা দুঃসহ ও কষ্টদায়ক। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল হাসান তুহিন বলেন, সংকটগুলো আমরা বারবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কিন্তু এখনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হয়নি। তবে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা চিকিৎসা না পেয়ে কেউ বিমুখ হয়ে ফিরে যায় না। যথাসাধ্য রোগীদের সেবা দেয়ার চেষ্টা করা হয়।