ঢাকা, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৬ হিঃ

বাংলারজমিন

কেরানীগঞ্জে ট্রিপল মার্ডারের লোমহর্ষক বর্ণনা ঘাতকের জবানিতে

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি
২৯ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার
mzamin

ঢাকার কেরানীগঞ্জে মোবাইল রিচার্জ কার্ডের সূত্র ধরে ট্রিপল মার্ডারের রহস্য উদ্ঘাটন ও মূল ঘাতক মো. মহিউদ্দিন হাওলাদার ওরফে শিমুলকে (৩১) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নিহতরা হলেন- বিথী আক্তার (২৪), তার শিশু পুত্র রাফসান (৪) ও নূপুর (২৫)। গতকাল বিকালে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন কেরানীগঞ্জ সার্কেল জাহাঙ্গীর আলম। তিনি জানান, গত ২৫শে এপ্রিল রাতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের মাকসুদা গার্ডেন সিটির সামনে থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় নূপুরের মস্তক, হাত ও পাবিহীন খণ্ডিত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ২৭শে এপ্রিল হাসনাবাদ নৌ পুলিশ ফাঁড়ির পোস্তগোলা ব্রিজের পূর্বদিকে বুড়িগঙ্গা নদীর দক্ষিণ তীর সংলগ্ন অসমান অবস্থায় তিনটি খণ্ডিত অংশ উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে ছিল একটি পা ও দু’টি উরু। পরে ঘটনাস্থলের পাশের সিসিটিভি ফুটেজ ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার সহিত সরাসরিভাবে জড়িত শিমুলকে রাজধানীর জুরাইন রেললাইন এলাকা হতে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে শিমুল জানায়, বিথীর সঙ্গে সে কারখানায় চাকরি করতো। এর সুবাদে তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০১৭ সালে তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বিষয়টি তার আগের স্ত্রী রুমা জানতে পারলে সে বিথীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ করে। এরপর সে রুবেল নামে অন্য একটি ছেলেকে বিয়ে করে। ওই ঘরে তার ছেলে রাফসানের জন্ম হয়। ঘাতক শিমুল জানতে পেরে বীথির সঙ্গে ফের সম্পর্ক স্থাপন করে। এছাড়া, বিয়ে না করেই স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে মীরেরবাগ এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে থাকে। শিমুল প্রথম স্ত্রী রুমাকে নিয়ে রাজধানীর কদমতলী থানার জুরাইনে বসবাস করে। এ ঘটনাটি প্রথম স্ত্রী আবার জানতে পেরে তার সঙ্গে বিভিন্ন সময় ঝগড়া বিবাদে জড়িয়ে পড়তো। এদিকে বিথী শিমুলকে বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। এ অবস্থায় ২৫শে এপ্রিল সকালে শিমুল বিথীর বাসায় চলে আসে। এ সময় তার সঙ্গে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে শিমুল গামছা দিয়ে শ্বাসরোধে বিথীকে হত্যা করে। বিষয়টি দেখে ফেলায় রাফসানকেও শ্বাসরোধে হত্যা করে। এসব ঘটনা দেখে ওই ফ্ল্যাটের সাবলেটে ভাড়া থাকা নূপুর চিৎকার করলে তাকেও গামছা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে মৃতদেহগুলো টুকরো টুকরো করে কেটে বিভিন্ন প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে। রাফসানের ছয় টুকরো লাশ বস্তাবন্দি করে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের পেয়ারা এলাকায় একটি ঝোপের মধ্যে ফেলে দেয়। নূপুরের লাশ রাতে মাকসুদা গার্ডেন সিটির সামনে ফেলে দেয়। বিথীর লাশ বুড়িগঙ্গা দ্বিতীয় ব্রিজের উপর থেকে নদীতে ফেলে দেয়। পরে স্বাভাবিক অবস্থায় সে তার জুরাইনের বাসায় চলে যায়। শিমুলের স্বীকারোক্তির পর রোববার রাতে রাফসানের খণ্ড- বিখণ্ড লাশ পেয়ারা পূর্বপাড়ায় ঝোপঝাড়ের মধ্য থেকে উদ্ধার করা হয়। তবে বিথী ও নূপুরের মাথা এখনো উদ্ধার করা যায়নি। 
 

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status