খেলা
‘ব্যাটিং ব্যর্থতা’, কোচ সালাউদ্দিন দিলেন নয়া অজুহাত
স্পোর্টস রিপোর্টার, সিলেট থেকে
২১ এপ্রিল ২০২৫, সোমবার
১৯১ রানে অলআউট। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দেশের মাটিতে সিরিজের প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ দলের লজ্জার ব্যাটিং। এমন ব্যর্থতার গল্প নতুন নয়। দেশের টেস্ট ক্রিকেটে এখনো সবচেয়ে চিন্তার নাম ‘ব্যাটিং’। অধিনায়ক শান্ত স্বীকার করেছেন তাদের দুর্বলতার কথা। কিন্তু ম্যাচের আগে নতুন দিনের স্বপ্নও দেখিয়েছিলেন তিনি। তবে অধিনায়কের কথা রাখতে পারেননি সতীর্থরা। বদলাতে পারেননি নিজেদের। দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র সহকারি কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনও বিব্রত। তবে এমন ব্যর্থতার পিছনে বরাবরের মতো তিনি দাঁড় করিয়ে দিলেন নানা অজুহাত। যেমন তিনি দুষলেন দেশের ক্রিকেটের সার্বিক সুযোগ-সুবিধাকে। এমনকি এমন বাজে ব্যাটিংয়ের পেছনে দিলেন নয়া অজুহাতও। তার মতে দেশের সংবাদ মাধ্যম ক্রিকেট নিয়ে ভালো লেখেন না সেটিরও প্রভাব পড়েছে দলের ওপর। তিনি বলেন, ‘দেখুন, আমি আপনাদেরকে একটা কথা বলি। একটা দেশ যদি...ধরেন, আপনার দেশ অর্থনৈতিক দিক দিয়ে অনেক শক্তিশালী। আপনি কি একটা পার্ট দিয়ে কখনও শক্তিশালী হতে পারবেন? আপনার ভালো প্রশাসন লাগবে, ভালো রাস্তাঘাট লাগবে, ভালো লোকজন লাগবে। সবকিছুই লাগবে। যদি বলেন খেলোয়াড়রা চেষ্টা করছে না, এটা ভুল বলা হবে। কারণ, আমি খুব কাছ থেকে দেখছি। তারা চেষ্টা করছে। কিন্তু এটার সঙ্গে তো আনুষাঙ্গিক অনেক ব্যাপার স্যাপার থাকবে। আমার ভালো কোচ লাগবে, আমরা ভালো কোচিং করাই না, আমরা তো গ্রাসরুট থেকে ভালো কোচিং করাই না। আমরা ভালো মাঠ দিতে পারিনি। যারা পাকিস্তানে গেছেন, তারা তো দেখছেন, সাধারণ একটা একাডেমি মাঠে কী ফ্যাসিলিটিজ। আমাদের কি সেরকম ফ্যাসেলিটিজ আছে!’ অন্যদিকে সালাউদ্দিন ব্যাটিং ব্যর্থতা বা বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নতি না হওয়ার পেছনে সংবাদ মাধ্যমের ভালো না লেখাকেও দায়ী করেন। তিনি বলেন, ‘এমনকি আপনারাও (সাংবাদিক) যদি ভালো লেখা না লেখেন, ওটাও বোঝা যাবে আমাদের মানটা কীরকম। সবকিছু বোঝা যাবে...একটা দেশের অর্থনীতি যেভাবে আগায়, একটা দেশের ক্রিকেটও সেভাবে আগাবে। শুধু খেলোয়াড়দের দোষ দিয়ে কোনো লাভ নাই। আমি মনে করি সবাইকে মিলেই কাজ করতে হবে। দোষাদোষী, রেষারেষি না। এর মধ্যে আমরা কীভাবে ভালো করতে পারি সেদিকে লক্ষ্য রাখা উচিত। প্রস্তুতির দিক থেকে বলি, একটা জাতীয় দলের যতটুকু প্রস্তুতি নেওয়ার দরকার ছিল, সিলেটে এসে আমরা সেটা পেয়েছি। আমরা আজকে করতে পারিনি, এটা আমাদের ব্যর্থতা।’ সালাউদ্দিন বলেন, ‘একটা দেশের ক্রিকেট কীভাবে আগাবে, এখানে সবারই সাহায্য করতে হবে। এখানে কেউ একা বের করতে পারবে না। আমার কোচ ভালো হলেও চলবে না, আমার খেলোয়াড় ভালো হলেও চলবে না, আমার সঙ্গে আরও অনেক কিছু ভালো হতে হবে। এখন যদি বলেন কতদিন অপেক্ষা করতে হবে, এটা আমার নিজেরও প্রশ্ন।’ বাংলাদেশ দলে যারা খেলছেন তাদের একের পর এক সুযোগ দেয়া হচ্ছে। বিশেষ করে দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম ও মাহমুদুল হাসান জয়ের দিকে তাকালে তা স্পষ্ট। কিন্ত তারা এই সুযোগ পেয়েও তার প্রতিদান রাখতে ব্যর্থ। তাহলে ক্রিকেটারদের আর কত ইনিংস সুযোগ দিলে তারা নিজেদের প্রমাণ করতে পারবেন সেটিও একটি প্রশ্ন। এ নিয়ে কোচ সালাউদ্দিন বলেন, ‘কত ইনিংস (ক্রিকেটারদের) দেবো সেটা তো বলে দেওয়া যাবে না। সবকিছু দ্রুত করতে হবে। আমরা খুব বেশি অপেক্ষা করতে পারবো না। কারণ আন্তর্জাতিক দল ফল না করলে সবসময় আমাকে স্বীকার করে নিতে হবে। এটা আসলে আল্টিমেটলি পুরোটা জাতীয় দল কী করছে। একটা দেশের ক্রিকেট কীরকম করছে সেটা নির্ভর করে আপনার জাতীয় দল কেমন খেলছে। তার জন্য যা যা করা দরকার, তা তা করতে হবে। ছেলেরা ভালো করছে না, প্লেয়াররা ভালো করছে না কিন্তু আমি আপনাদের একটা কথা বলি, আমি কাছ থেকে দেখতেছি, ছেলেদের মেন্টালেটি বলেন, ওয়ার্ক এথিক বলেন, নিজের ইচ্ছে বলেন, তাদের আছে। কিন্তু এটা শুধু তাদের একার পক্ষে সম্ভব না। পারিপার্শ্বিক অনেক ব্যাপার আছে যেগুলো সবসময় বলতে পারি না, বলা উচিতও না। আপনাদের একটু সময় দিতে হবে।’
পাঠকের মতামত
বাংলাদেশে ক্রিকেট নিষিদ্ধ করা উচিৎ