খেলা
বাংলাদেশের প্রথম ‘সেঞ্চুরির ফিফটি’
জাতীয় দলকে এখনো কিছু দিতে চান বিজয়
স্পোর্টস রিপোর্টার
২১ এপ্রিল ২০২৫, সোমবার
প্রায় দুই মাস আগে ফেসবুকে ব্যক্তিগত ডায়েরির একটি ছবি শেয়ার করেন এনামুল হক বিজয়। সেখানে তিনি ২০১৪ সালের ৮ই এপ্রিল লিখেছিলেন ২০২৫ সালের মধ্যে নিজের নামের পাশে ৫০টি সেঞ্চুরি দেখতে চান। ঠিক ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসেই সেই স্বপ্ন পূরণ হলো বিজয়ের। গতকাল বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটার হিসেবে তিন সংস্করণ মিলিয়ে ৫০তম সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন এনামুল হক বিজয় । ঢাকা প্রিমিয়ার লীগের সুপার লীগের ম্যাচে লিজেন্ডস অফ রূপগঞ্জের বিপক্ষে ৭ উইকেটে জিতেছে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স। এই ম্যাচেই মাইলফলকটি স্পর্শ করেন গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের অধিনায়ক।
গেলো ২৫শে মার্চ স্বীকৃত ক্রিকেটে নিজের ৪৯তম সেঞ্চুরি করেন বিজয়। গতকাল সাভারে বিকেএসপি’র মাঠে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের পেসার শরীফুল ইসলামকে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ দিয়ে ছক্কা মেরে পৌঁছে যান সেঞ্চুরির ফিফটিতে। ২২৩ রান তাড়া করতে নেমে ইনিংস ওপেন করা বিজয় ১০৫ বলে ১০ চার ও ১ ছক্কায় অপরাজিত ছিলেন ১১০ রানে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বিজয়ের সেঞ্চুরি ২৪টি। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ২৩টি আর স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে ৩টি। তিন সংস্করণ মিলিয়ে বিজয়ের পরে বাংলাদেশ থেকে সর্বোচ ৪৬ সেঞ্চুরি নাঈম ইসলামের। তামিম ইকবালের সেঞ্চুরি ৪৫টি। ৪ নম্বরে থাকা ইমরুল কায়েস করেছেন ৩৪টি সেঞ্চুরি। এছাড়া সমান ৩৩টি সেঞ্চুরি আছে মুমিনুল হক সৌরভ, মোহাম্মদ আশরাফুল ও তুষার ইমরানের। এবারের প্রিমিয়ার লীগে ১৩ ম্যাচে ৭৬.৬০ গড়ে বিজয় করেছেন সর্বাধিক ৭৬৬ রান। সেঞ্চুরি ৩টি আর ফিফটি ৫টি। খেলা শেষে ম্যাচ সেরার পুরস্কার হাতে আবেগতাড়িত বিজয় বলেন, ‘স্বপ্ন সত্যি হলো। আবার নতুন করে স্বপ্ন দেখবো আর কী অর্জন করা যায়। অবশ্যই বিশেষ দিন, আমি সবসময়ই আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করি। আমাকে যারা পছন্দ করে তাদের অনেক ধন্যবাদ, তারা সাপোর্ট করেছে বলেই এই পর্যন্ত আসতে পেরেছি।’ এই বিশেষ দিনে আক্ষেপও আছে বিজয়ের। ২০১২ সালে জাতীয় দলে অভিষেক হয় তার। প্রথম দেড় বছরেই তার ব্যাট থেকে আসে ৩টি সেঞ্চুরি। কিন্তু এমন উড়ন্ত শুরুর পরও বিজয়ের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সেভাবে এগোয়নি। ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপে চোটে পড়ে দেশে ফেরার পর থেকে আর কখনও জাতীয় দলে নিয়মিত হতে পারেননি। এরপর কয়েক দফায় ফিরলেও বাদ পড়েছেন দ্রুতই। গতকাল ম্যাচ শেষে বিজয় বলেন, ‘সত্যি বলতে এই সেঞ্চুরির অর্ধেকও যদি জাতীয় দলের হয়ে করতে পারতাম তাহলে আরও ভালো লাগতো। ৫০টা সেঞ্চুরির মধ্যে দল হয়তো ৪০টাতেই জিতেছে। তবুও আমাকে মাঝেমধ্যেই অনেক বাজে কথা শুনতে হয়েছে, হচ্ছে। আমি এখনও বাংলাদেশ ক্রিকেটকে অনেক কিছু দিতে চাই। পরিশ্রমের ঘাটতি কখনও রাখতে চাই না।’
লক্ষ্য তাড়ায় সাদিকুর রহমানকে নিয়ে ওপেনিংয়ে ৮১ রানের জুটি গড়েন বিজয়। ৩৬ রান করে ফেরেন সাদিকুর। এরপর শামসুর রহমান আউট হয়ে যান মাত্র ১৭ রান করে। সাব্বির হোসেনও বেশিক্ষণ টেকেননি, করেন ৩৩ বলে ১৮ রান। বাকিরা ফিরলেও একপ্রান্ত আগলে ছিলেন বিজয়। ১০৫ বলে ১০ চার ও ১ ছক্কায় ১১০৯ রানের ইনিংসে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন তিনি।