চাকরি গেল লেস্টার কোচের এবার কপাল খুলবে হামজার!

ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের শেষ মৌসুমটা লেস্টার সিটি যেভাবে কাটিয়েছে, তাতে সব যেন অনুমিতই ছিল। নিয়োগের স্রেফ ছয় মাসের মধ্যেই বরখাস্ত হয়েছেন কোচ রুড ভ্যান নিস্টলরয়। শুক্রবার পারস্পারিক সমঝোতার মাধ্যমেই নিস্টলরয়ের সঙ্গে চুক্তি ছেদ করেছে বলে এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে জানিয়েছে লেস্টার। 

ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ থেকে সবশেষ মৌসুমে অবনমিত হয়ে চ্যাম্পিয়নশিপে নেমে গেছে ২০১৫-১৬ মৌসুমের চ্যাম্পিয়নরা। ৩৮ ম্যাচে স্রেফ ৬ জয়, ৭ ড্র আর ২৫ হারে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের অষ্টাদশে থেকে মৌসুম শেষ করে লেস্টার। নিস্টলরয়ের কোচিংয়ে ২৭ ম্যাচে ১৯টি হারের তেতো স্বাদ পায় লেস্টার, জয় পায় কেবল ৫ ম্যাচ। এর জের ধরেই বরখাস্ত হতে হলো এই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কিংবদন্তি ফরোয়ার্ডকে। লীগের পাঁচ রাউন্ড বাকি থাকতেই অবনমন নিশ্চিত হয়ে যায় দলটির। তবুও মৌসুম শেষ করার সুযোগ পান নিস্টলরয়। এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরে ইউনাইটেডের অন্তবর্তীকালীন কোচের দায়িত্ব ছেড়ে হামজা চৌধুরীদের ডেরায় আসেন তিনি। বাজে পারফর্মেন্সের কারণে চাকরি হারানো স্টিভ কুপারের স্থলাভিষিক্ত হন এই সাবেক ডাচ স্ট্রাইকার। সে সময়েই দল অবস্থান করছিল লীগ টেবিলের ১৬ নম্বরে। এরপর থেকে আরও নিচে নামতে শুরু করে লেস্টার। দায়িত্বে আসার এক মাসের মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারিতে হামজাকে চ্যাম্পিয়নশিপের ক্লাব শেফিল্ড ইউনাইটেডে ধারে পাঠান তিনি। সে মাসের শেষ দিকে এর কারণ হিসেবে এই ডাচ কোচ বলেন, ‘সে এমন একজন খেলোয়াড় যার আরও মিনিট (খেলার সময়) দরকার। তার জায়গায় আমাদের আরও যেসব মিডফিল্ডার আছে, তাতে তার সময় আরও কমে যায়। ওর জন্য খেলতে পারাটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সে সেটিই চাচ্ছিল, এটি ক্লাব ও তার জন্য ভালো, তাই এটি একটি ভালো পদক্ষেপ।’ শেফিল্ডকে প্রিমিয়ার লীগে ফেরানোর খুব কাছ থেকেই ব্যর্থ হন হামজারা। প্লে অফ ফাইনালে সান্ডারল্যান্ডের সঙ্গে ২-১ গোলে হেরে স্বপ্ন ভাঙে শেফিল্ডের। ধারের চুক্তি শেষে বাংলাদেশি মিডফিল্ডার হামজা ফিরেছেন ২০১৫তে যোগ দেয়া লেস্টারেই, শুরু করেছেন প্রাক-মৌসুমের অনুশীলনও। বর্তমানে ইংলিশ ক্লাবটির সঙ্গে এই ২৭ বছর বয়সী ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারের চুক্তি রয়েছে ২০২৭ পর্যন্ত।

ফুটবলের পরিসংখ্যানবিষয়ক ওয়েবসাইট ট্রান্সফারমার্কেটের সূত্রানুযায়ী, নিস্টলরয় লেস্টারে যোগ দেয়ার পর প্রিমিয়ার লীগে ১০ ম্যাচের মধ্যে হামজা চৌধুরী সুযোগ পান স্রেফ ৩ ম্যাচে। বাকি ৭ ম্যাচের ৩ ম্যাচেই ছিলেন না স্কোয়াডে, আর বাকি ৪ ম্যাচ কাটিয়েছেন বেঞ্চে বসে। এর মধ্যে তিনি প্রথমবার সুযোগ পান ডিসেম্বরে নিউক্যাসেলের বিপক্ষে ৪-০ গোলে হেরে যাওয়া ম্যাচে। নিস্টলরয়ের অধীনে লীগে সেই ম্যাচে সর্বোচ্চ ৫৯ মিনিট খেলেন হামজা। পরের ম্যাচেই উলভারহ্যাম্পটন ওয়ান্ডারার্সের বিপক্ষে ৩-০ গোলে হারের ম্যাচে ৩৭ মিনিট সুযোগ পান এই বাংলাদেশি মধ্যমাঠের খেলোয়াড়। পরের ম্যাচ বেঞ্চে কাটিয়ে ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে নিজের সুযোগ পাওয়া শেষ ম্যাচে তিনি খেলেন স্রেফ ২০ মিনিট। ইংলিশ জায়ান্টদের সঙ্গে ২-০ গোলে হেরে যাওয়া ম্যাচটির পরের দুটিতে বেঞ্চে বসে কাটান হামজা। আর লীগের শেষ দুই ম্যাচে তার জায়গা হয়নি স্কোয়াডেও।