খেলা
কক্ষপথে আবাহনী, আশা বাঁচিয়ে রাখলো মোহামেডান
স্পোর্টস রিপোর্টার
২১ এপ্রিল ২০২৫, সোমবার
ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে শিরোপা ধরে রাখার মিশনে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল আবাহনী লিমিটেড। সুপার লীগের প্রথম রাউন্ডে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের হারে, এককভাবে শীর্ষস্থান দখলে নেয় তারা। দ্বিতীয় রাউন্ডে গুলশান ক্রিকেট ক্লাবকে হারিয়ে সেটা আরও মজবুত করলো মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের দল। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে জয় দিয়ে নিজেদের আশা বাঁচিয়ে রেখেছে মোহামেডান। মূল কাজ বল হাতে হলেও এদিন গুলশানকে লড়াইয়ে রেখেছিলেন নিহাদুজ্জামান। কিন্তু তার ৮২ রানের ইনিংস শেষ পর্যন্ত শুধু হারের ব্যবধানই কমিয়েছে।
মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গতকাল ডিপিএলে সুপার লীগের দ্বিতীয় রাউন্ডে গুলশানকে ৫০ রানে হারায় আবাহনী। টস হেরে ব্যাটিং করতে নামা দলটি ২৭৮ রানের পুঁজি পায়। সেটা তাড়া করতে নেমে ২২৮ রানেই গুটিয়ে যায় গুলশান। ১৩ ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে শিরোপার আরও কাছে পৌঁছে গেলো আবাহনী। আর ১৩ ম্যাচে গুলশানের সংগ্রহ ১৭ পয়েন্ট। ৮৩ রান করা আবাহনীর ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমনের হাতে ওঠে ম্যাচসেরার পুরস্কার।
লক্ষ্য তাড়ায় ব্যাট করতে নেমে পাওয়ার প্লে’তেই এলোমেলো হয়ে যায় গুলশান। ১০ ওভারে ২৫ রান তুলতেই বিদায় নেন ৪ ব্যাটার। এক রানে ফেরেন ওপেনার আফিফ হাসান। মোহাম্মদ ইলিয়াস ফেরেন ৫ রানে। কোন রান না করেই বিদায় নেন খালিদ হাসান।দলের এমন বিপর্যয়ে গতকাল নাঈম ইসলামও হাল ধরতে পারেননি। এরপর শাকিব শাহরিয়ার ও শাহাদাৎ হোসেন প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দেন। তবে দুই ব্যাটার মিলে সাময়িক বিপদ কাটালেও দলীয় ৭১ রানে শাকিব ফেরেন ৪২ রানে।
দলকে ১০০’র ঘরে নিয়ে গিয়ে দলীয় ১১০ রানে ৩৫ রান করা শাহাদাৎকে ফেরান আবাহনী অধিনায়ক সৈকত। ১১৯ রানে মেহেদি হাসানকেও বিদায় করেন এই অফ স্পিনার। ৭ উইকেট হারানো গুলশান অবশ্য নীচের দিকের ব্যাটারদের কল্যানে ১৫০ পার হয়। ফরহাজ রেজা যখন অষ্টম ব্যাটার হিসেবে ফিরছেন তখন দলের রান ১৫৪। খানিক পর আসাদুজ্জামান পায়েলের বিদায়ে নবম উইকেট হারায় গুলশান। এরপর ব্যাট হাতে লড়াই শুরু করেন নিহাদ। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে শুধু দলকে লড়াইয়েও রাখেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর পেরে ওঠেননি। ৬টি চার ও ৫টি ছক্কায় নিহাদ অপরাজিত থাকেন ৮২ রানে। আবাহনীর হয়ে দুটি করে উইকেট নেন মেহরাব হোসেন, মোসাদ্দেক, রাকিবুল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান রাব্বি।
এদিন আগে ব্যাটিং করতে নেমে আবাহনীরও শুরুটা একেবারেই ভালো হয়নি। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে শাহরিয়ার কমল বিদায় নেন ১১ বলে ২ রান করেই। এরপর তিনে নেমে পারভেজ হোসেন ইমনের সঙ্গে জুটি গড়েন জিসান আলম। দুজনের ব্যাটে দলীয় রান ৫০ পার করে টেবিল টপাররা। তবে দলীয় রান ১০০ হওয়ার পূর্বে জিসানকে ২৬ রানে বিদায় করেন নিহাদুজ্জামান। এরপর মোহাম্মদ মিঠুনকে সঙ্গে নিয়ে রান বাড়াতে থাকেন ইমন। সেঞ্চুরির আশায় থাকা ইমন ৭০ বলে ৮৩ রান করে নিহাদের দ্বিতীয় শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন। এরপর মেহরাব হোসেন অহিনকে নিয়ে দলকে ২০০’র দিকে নিয়ে যেতে থাকেন মিঠুন। কিন্তু ১৬ রান করা অহিন ফাঁদে পড়েন রান আউটের। ৪৫ রান করে ফেরেন মিঠুন। এর এক রান পর বিদায় নেন মোসাদ্দেকও। ব্যাটারদের এমন দ্রুত আসা-যাওয়ার মিছিলে মাহফুজুর রাব্বির ২২ ও মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর ২৬ রানের সুবাদে দলীয় সংগ্রহ আড়াইশ পার করে আবাহনী। ৩ উইকেট নেন ফরহাদ রেজা।
রনির সেঞ্চুরি, সাইফউদ্দিনের চার উইকেট
সুপার লীগের প্রথম রাউন্ডেই হোঁচট খায় মোহামেডান। দ্বিতীয় রাউন্ডে গতকাল অগ্রণী ব্যাংক ক্রিকট ক্লাবকে ৭ উইকেটে হারিয়ে আশা বাঁচিয়ে রাখলো তারা। গতকাল বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে আগে ব্যাটিং করে ২৪০ রান করে অগ্রণী ব্যাংক। মোহামেডানের হয়ে একাই ৪ উইকেট নেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ৩টি উইকেট নিয়েছেন ইবাদত হোসেন। দুই উইকেট পান মোস্তাফিজুর রহমান। জবাবে ৭ উইকেট আর ১৫.৫ ওভার হাতে রেখেই জয় তুলে নেয় মোহামেডান। ১০০ বলে ১২২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন ওপেনার রনি তালুকদার। আরেক ওপেনার আনিসুল ইসলাম ইমনের ব্যাট থেকে আসে ৭৫ রান। ওপেনিং জুটিতেই ১৯৯ রান যোগ করেন রনি ও ইমন। দুই ওপেনার ফিরলে দ্রুত আউট হয়ে যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তিন নম্বরে নেমে রিয়াদ করেন মাত্র ৭ রান। আর ২২ বলে ২৭ রান করে ফেরেন তৌফিক খান তুষার।
এই জয়ে ১৩ ম্যাচে ২০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দুই নম্বরে রয়েছে মোহামেডান। সমান ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আবাহনী। আর সুপার লীগে টানা দুই ম্যাচ হারা অগ্রণী ব্যাংকের পয়েন্ট ১৩ ম্যাচে ১৪।