অনলাইন
ত্রাণের জন্য জীবন দিলেন অভুক্ত বিপ্লব
তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
(১ মাস আগে) ২১ জুন ২০২২, মঙ্গলবার, ১:০৯ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১:২৯ অপরাহ্ন

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে বন্যা দুর্গতদের জন্য হেলিকপ্টারে করে বিমান বাহিনীর দেয়া ত্রাণ সামগ্রী নিতে গিয়ে বিপ্লব মিয়া নামে এক বানভাসি অভুক্ত যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এসময় আরো ৫ জন গুরুতর আহত হন। মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে সিলেট রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজে চিকিৎসার জন্য নেয়া হলে বিপ্লব মিয়ার (৪৫) মৃত্যু হয়। তিনি উপজেলা সদরের উজান তাহিরপুর গ্রামের শহীদ আলীর ছেলে। নিহত বিপ্লব ২ ছেলে ও ২ কন্যা সন্তানের জনক ছিলেন।
জানা যায়, গতকাল সোমবার বন্যা কবলিতদের বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার উপর থেকে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করে। এসময় নিচ থেকে ত্রাণ নিতে গিয়ে বিপ্লব সহ আরো ৫ জন আহত হয়। গুরুতর আহত বিপ্লব সহ ৬ জনকে তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে আহত বিপ্লবের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য আজ (মঙ্গলবার) সকালে সিলেট রাগীব রাবেয়া মেডিকেল ভর্তি করা হলে চিকিৎসারত অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
তাহিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল লতিফ তরফদার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ত্রাণ নিতে গিয়ে হুড়োহুড়িতে গুরুতর আহত বিপ্লব সিলেট রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় মারা গেছেন।
পাঠকের মতামত
সাদা চামড়ার ব্রিটিশরা কালো চামড়ার ভারতীয়দেরকে শাসন করছে
এমন একটা মর্মন্তুদ ঘটনার পর বিমান বাহিনী কতৃপক্ষের কোন ভাবান্তর লক্ষ্য করা গেল না। প্রজাতন্ত্রের জনগন এতোটা নিগ্রহের স্বীকার হলো কার দোষে?
Amader motamoter kono dam achay naki
Matite name tran gula dile ki oder rajotto kome jeto.. Ai khudartho manush gular sathe edur biral na khellai ki hoi na.
রাষ্ট্রের চাকরগুলো মালিকের মত আচরণ করছে। বিমান থেকে মাটিতে নেমে ত্রান সামগ্রী দিলে কি ভাবসাব কমে যেতো? নাকি মাটিতে পাঁ রাখতে ইচ্ছে করে না!
কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য্য ১৯৪৭ সালে 'হে মহাজীবন' কবিতাটি লিখেছিলেন। কবিতাটির শেষ চরন, 'ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়, পূর্ণিমা চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি।' ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষের মানুষের বসবাস ছিলো ক্ষুধার রাজ্যে দারিদ্র্যের সঙ্গে। বৃটিশ বেনিয়াদের দুইশো বছরের শাসন শোষণে এ অঞ্চলের মানুষের জীবন ছিলো দারিদ্র্য সীমার নিচে। তাই অভাব ছিলো নিত্যসঙ্গী। বৃটিশ বেনিয়ারা চলে গেলেও রেখে গেছে তাদের মানসিকতা। আমাদের একশ্রেণি রাতারাতি বিত্তবান হওয়ার নেশায় পাগলপারা। তারাও একশ্রেণির বেনিয়া। তাদের সিন্ডিকেটের দখলে সবকিছু। সর্বাশী বন্যার জলে হাবুডুবু খাচ্ছে মানুষ। সবকিছু হারিয়ে সর্বস্বান্ত। তবুও নৌকার ভাড়া অনেকগুণ প্রবর্ধিত করা হয়েছে। অপর্যাপ্ত ত্রাণ অসংখ্য বুভুক্ষু মানুষের মধ্যে হাহাকারের প্রতিধ্বনি বৃদ্ধি করা ছাড়া কিছু করেনি। একজন ক্ষুধার্ত মানুষের ক্ষুধার মাত্রা কতোটা ভয়ংকর রূপ ধারণ করলে খাদ্যের জন্য হেলিকপ্টারের নিচে জীবন বাজি রেখে হুমড়ি খেয়ে পড়তে পারে তা কল্পনা করা যায় না। বন্যাকবলিত এলাকায় এক নির্মম মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে। 'বন্যাকবলিত এলাকায় এখন পর্যন্ত পানিতে ডুবে, বজ্রপাতে এবং সর্প দংশনে ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে পানিতে ডুবে ১৭ জন, বজ্রপাতে ১২ জন, সর্প দংশনে একজন এবং অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়ে আরও ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।' (মানবজমিন অনলাইন, স্টাফ রিপোর্টার, ২১ জুন ২০২২)। সর্বগ্রাসী জলপ্রলয়ের করালগ্রাসে মানুষের আশ্রয়ের শেষটুকুও হারিয়ে গেছে। এসময়ে দরকার ছিলো পর্যাপ্ত খাবার, বিশুদ্ধ পানি, ওষুধ ও শিশুখাদ্য। কিন্তু এসবের অপ্রতুলতার কারণে ক্ষুধার রাজ্যে মানুষের জীবন গদ্যময় হয়ে ওঠেছে। বানের জলে জীবন প্রদীপ নিভতে পারে, ক্ষুধার আগুন নেভেনা। তাই তো ক্ষুধার আগুনে জ্বলতে জ্বলতে হেলিকপ্টারের নিচে লাফিয়ে পড়েছে খাবার খেতে। খাবার খাওয়ার আকাঙ্খা তার অপূর্ণই থেকে গেলো। ক্ষুধার আগুনে জ্বলে পুড়ে চলে গেছেন পরপারে। আল্লাহ তায়ালা তাঁকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করুন।
বিমান বাহিনী আকাশ থেকে ত্রাণ এভাবে না ফেলে প্রথমে তাদের কিছু সদস্য রশি বেয়ে নিচে নামবেন এবং জনগণকে কাতারবন্দী করে ত্রাণ বিতরণ করলে এরকম দুর্ঘটনা হতো না। আশা করি হেলিকপ্টারে করে যারা ত্রাণ দিচ্ছেন তারা বিষয়টা বিবেচনা করবেন।
Allah JANNATUL FERDUAS NOSIB KORUN amin Afsos!!