অনলাইন
জঙ্গি সম্পৃক্ততায় আটকদের বিষয়ে সাড়া নেই
মালয়েশিয়ায় ৫ বন্দির দেখা পাচ্ছে মিশন
কূটনৈতিক রিপোর্টার
(৯ ঘন্টা আগে) ৯ জুলাই ২০২৫, বুধবার, ৯:২৩ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৪:২৮ অপরাহ্ন
জঙ্গি কার্যক্রমে সম্পৃক্ততার অভিযোগে আটক ৩৫ বাংলাদেশিকে কনস্যুলার একসেস প্রদানে হাইকমিশনের অনুরোধে কাঙ্ক্ষিত সাড়া নেই মালয়েশিয়া সরকারের। এ নিয়ে আটকের পর থেকেই দেশটির পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র ও মানবসম্পদ বিভাগে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে কুয়ালালামপুর মিশন।।
ঢাকা ও কুয়ালালামপুরের একাধিক কূটনৈতিক সূত্র মানবজমিনকে বলেছে- আটক ৩৫ জনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহায়তায় হাইকমিশন প্রত্যাশা অনুযায়ী সাড়া না মিললেও অন্য মামলায় গ্রেপ্তার পাঁচ বাংলাদেশির দেখা পাচ্ছে বাংলাদেশ মিশন। হাইকমিশনের কর্মকর্তারা বুধবার দুটি কারগারে গিয়ে তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
সূত্র মতে ওই পাঁচ বাংলাদেশিকে ‘কনস্যুলার সেবা’ দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ হাইকমিশন। দেশটির কারা কর্তৃপক্ষ কনস্যুলার সেবার অনুমতি দিয়েছে। হাইকমিশনের কর্মকর্তারা তাদের আইনি সহায়তা কিংবা অন্যান্য মৌলিক সহায়তার প্রয়োজন কি না, তা জানবেন। তাদের কোনো বক্তব্য থাকলে সেটা জেনে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন। গত এপ্রিলে মালয়েশিয়া পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার হন ওই পাঁচজন বাংলাদেশি। তাদের মধ্যে দুজন দেশটির সেলাঙ্গর কারাগারে আর তিনজনকে জোহর বারু কারাগারে রাখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ জুন মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুতিওন ইসমাইল জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মালয়েশিয়ায় ৩৬ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানান। তিনি বলেন, মালয়েশিয়ার পুলিশ পরিকল্পনা অনুযায়ী সেলাঙ্গর ও জোহর অঞ্চলে গত ২৪ এপ্রিল থেকে তিন ধাপে এ অভিযান চালায়। গ্রেপ্তার ৩৬ বাংলাদেশির মধ্যে কারাবন্দী পাঁচজনকে সন্ত্রাসবাদ-সংশ্লিষ্ট অপরাধে অভিযুক্ত করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ১৫ জনকে মালয়েশিয়া থেকে বহিষ্কারের আদেশ জারি হয়েছে। বাকি ১৬ জনের বিরুদ্ধে জঙ্গি-সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে অধিকতর তদন্ত চলছে।
সূত্র জানায়, গত এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাসে রয়্যাল মালয়েশিয়া পুলিশের সন্ত্রাস দমন বিভাগের আলাদা আলাদা অভিযানে ৩৫ জন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে ১৪ জন ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছিলেন।
অবৈধভাবে অবস্থানের কারণে ওই ১৪ জনকে হস্তান্তর করা হয় ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে। বাকিদের মধ্যে পাঁচজনকে সন্ত্রাসবাদের অপরাধে অভিযুক্ত করা হয়। আর ১৬ জনের বিরুদ্ধে অধিকতর তদন্ত চলছে বলে কুয়ালালামপুরের কূটনৈতিক সূত্র জানায়। সূত্র মতে, যে ১৪ জনকে ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে, তাদের মধ্য থেকে ছয়জনকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। হাইকমিশনের একটি সূত্র জানায়, রয়্যাল মালয়েশিয়া পুলিশের সন্ত্রাস দমন বিভাগ যখন এই অভিযান চালায়, সে সময় দেশটির আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত একাধিক প্রতিষ্ঠান অনানুষ্ঠানিকভাবে কয়েকজন বাংলাদেশির বিষয়ে খোঁজ নিয়েছিল। বিশেষ করে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের কারও অতীতে জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ততার অভিযোগ ছিল কি না, তা মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল। তখন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, নামের যে তালিকা দেওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে কারও অতীতে জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ততার কোনো অভিযোগ বাংলাদেশে ছিল না।
এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওই কূটনৈতিক সূত্র জানায়, মালয়েশিয়ার অনানুষ্ঠানিক অনুরোধে সে সময় তাদের তথ্য সরবরাহ করা হয়। কিন্তু দেশটির পুলিশ যে সন্ত্রাসবাদবিরোধী কোনো অভিযান চালাচ্ছে, তা সে সময় হাইকমিশনকে জানানো হয়নি।