ঢাকা, ৯ জুলাই ২০২৫, বুধবার, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৩ মহরম ১৪৪৭ হিঃ

অনলাইন

সহযোগীদের খবর

নির্বাচনে নতুন ভয় এআই

অনলাইন ডেস্ক

(১১ ঘন্টা আগে) ৯ জুলাই ২০২৫, বুধবার, ৯:৫২ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১২:২৪ অপরাহ্ন

mzamin

দেশ রূপান্তর

দৈনিক দেশ রূপান্তরের প্রথম পাতার খবর ‘নির্বাচনে নতুন ভয় এআই’। প্রতিবেদনে বলা হয়, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে আপত্তিকর ছবি, ভিডিও বা অপতথ্য ছড়ানো হচ্ছে বিশ্বব্যাপী। বিশেষ করে জাতীয় নির্বাচন কেন্দ্র করে মিথ্যা তথ্য প্রচার, ডিপফেক ভিডিও, অ্যালগরিদমে ভর জনমত প্রভাবিতকরণে এআইর ব্যবহার ক্রমেই বাড়ছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। আগামী নির্বাচনে এআইকে হাতিয়ার করা হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সম্প্রতি ‘সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০২৫’-এর যে খসড়া প্রকাশিত হয়েছে, তাতে এআই ব্যবহারের বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করে অপরাধ রোধ করতে প্রয়োজন গাইডলাইন বা সুনির্দিষ্ট আইনি কাঠামো। বাংলাদেশে ডিজিটাল মিডিয়া শিক্ষার অভাব, গুজব যাচাইয়ের অভ্যাস না থাকা ও আইনি দুর্বলতার কারণে এআইয়ের মাধ্যমে গুজব ছড়ানো খুবই সহজ। এ ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গণমাধ্যমকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। জনসচেতনতাও বাড়াতে হবে।

আগামী নির্বাচনে এআইয়ের অপব্যবহারকে নির্বাচন কমিশন বড় হুমকি হিসেবে দেখছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন।

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে কানাডার হাইকমিশনার অজিত সিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাতে সিইসি এমন উদ্বেগের কথা জানিয়ে কানাডার সহায়তা চেয়েছেন। কারণ, সম্প্রতি কানাডার নির্বাচনে এ বিষয়টির মোকাবিলা করতে হয়েছে তাদের।

এআই প্রযুক্তির দ্রুত প্রসার ও বৈচিত্র্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিভিন্ন দেশ আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করছে। কিন্তু বাংলাদেশে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার রোধে এখনো আইনি কাঠামো নেই।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানিয়েছেন, পলিসি তৈরিতে কাজ করছে সরকার।

২০২০ সালে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ‘জাতীয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কৌশল’ প্রণয়ন করে। তাতে অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, প্রশাসনসহ বিভিন্ন খাতে এআই ব্যবহারের রূপরেখা তৈরি করা হয়। কিন্তু তার বাস্তবায়ন

হয়নি। গত বছর ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার সরকার এআই বিষয়ে খসড়া নীতিমালা তৈরি করেছিল। যদিও খসড়াটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

নির্বাচনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহারের প্রভাব: আগামী নির্বাচনে এআইয়ের মাধ্যমে ডিপফেক ভিডিও তৈরি করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হেয় করা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বট অ্যাকাউন্ট দিয়ে গুজব ছড়ানো, সংবাদের ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে বিভ্রান্তি তৈরি, এআই দিয়ে তৈরি কণ্ঠ বা চেহারা ব্যবহার করে প্রচারণা চালানো, নির্দিষ্ট শ্রোতাদের টার্গেট করে বিভ্রান্তিকর তথ্য পৌঁছে দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

এ ছাড়া মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে এআই জেনারেটেড অডিও ছড়ানো, টিকটকে বট অ্যাকাউন্ট দিয়ে ট্রেন্ড তৈরি, ফেসবুকে নির্দিষ্ট দলের পক্ষে এআই বটের মাধ্যমে কমেন্ট করাসহ নির্বাচন কমিশন সম্পর্কিত বিভ্রান্তিকর তথ্য তৈরি ও ছড়ানো হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নেতাদের বক্তব্য বিকৃত করে তৈরি ডিপফেক ভিডিও মুহূর্তে ভাইরাল হতে পারে, যা জনমতকে প্রভাবিত করতে পারে। এ ধরনের কনটেন্ট ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সহিংসতাও উসকে দিতে পারে। এ ধরনের প্রচারণায় নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট হতে পারে। এআই ভোটারদের ব্যক্তিগত তথ্য বিশ্লেষণ করে নির্দিষ্ট কিছু গ্রুপের নির্বাচনী আচরণ প্রভাবিত করতে পারে।

ফ্রান্সভিত্তিক সংবাদ সংস্থা এএফপির বাংলাদেশবিষয়ক ফ্যাক্ট চেক সম্পাদক ইয়ামিন সাজিদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আগামী জাতীয় নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের পক্ষে-বিপক্ষে প্রচার-অপপ্রচারের প্রধান হাতিয়ার হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। এআই দিয়ে তৈরি অডিও, ভিডিও এবং স্থির চিত্র সাধারণ জনগণের পক্ষে শনাক্ত করা প্রায় অসম্ভব।’

দেশে এআইয়ের অপব্যবহার: সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও বিশিষ্টজনের ভুয়া ছবি, ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। দেশের প্রথম সারির একটি পত্রিকা ওই ভুয়া ছবি প্রচার করে পরে তা প্রত্যাহারও করেছে। এগুলো ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু ততক্ষণে যাদের সামাজিক মর্যাদার হানি হওয়ার কথা দেশ-বিদেশে, তা হয়ে গেছে। ভুক্তভোগীদের ক্ষতি কখনই পূরণ হয় না।

ভুয়া খবর শনাক্তকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ডিসমিসল্যাব গত ৩০ জুন একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। মাত্র ১০ দিনে (১৮ থেকে ২৮ জুন) ফেসবুকের বিভিন্ন পেজ ও গ্রুপ থেকে ৭০টি ভিডিও সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে তারা নিশ্চিত হয়েছে, এগুলো এআই দিয়ে তৈরি।

ফেসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রতিষ্ঠানগুলোর সবারই অপতথ্য, ভুয়া তথ্য ঠেকানো বা অপসারণের অঙ্গীকার রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশসহ তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোয় এ অঙ্গীকারের বাস্তবায়ন খুব কম। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উন্নত ও ধনী দেশগুলোর মতো তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত বা জরিমানার ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি মূলত নিজেদের দুর্বলতার কারণে। এখন তা কাটিয়ে উঠতে হবে।

সমাধান ও করণীয়: নির্বাচনে এআইয়ের অপব্যবহার রোধে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এর মধ্যে রয়েছে নির্বাচন কমিশনের অধীনে এআই মনিটরিং সেল গঠন, ভুয়া তথ্য শনাক্তে ফ্যাক্টচেকিং প্ল্যাটফর্মকে শক্তিশালী করা, এআই ব্যবহারসংক্রান্ত নীতিমালা তৈরি ও বাস্তবায়ন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সমন্বয় জোরদার করা এবং জনসচেতনতা বাড়াতে গণমাধ্যমে প্রচারণা চালানো। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে নিয়মিত তথ্য প্রকাশ ও ডিপফেক শনাক্তে এআই টুল ব্যবহারেরও পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ও ফাইবার অ্যাট হোম লিমিটেডের চিফ ইনফরমেশন অফিসার সুমন আহমেদ সাবির দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এআইয়ের অপব্যবহার রোধে সাধারণ মানুষের সচেতনতা বাড়ানো দরকার। নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সংশ্লিষ্টদেরও এ বিষয়ে যথাযথ মনিটরিং থাকা দরকার। ভুক্তভোগীরা চাইলে আইনি ব্যবস্থাও নিতে পারেন।’

ইউনেসকোর এআই প্রস্তুতি কমিটির সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক বিএম মইনুল হোসেন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘বিভিন্ন দেশে নির্বাচন ঘিরে শুরু হয়েছে এআইয়ের অপব্যবহার। রোমানিয়ায় নির্বাচনের তারিখ পর্যন্ত পরিবর্তন করতে হয়েছে। বাংলাদেশেও বেশ কিছু ফেক (ভুয়া) ভিডিও, ছবি দিয়ে বিভিন্নজনের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে। নির্বাচনের আগমুহূর্তে সেটা যে বড় ঝুঁকি তৈরি করবে, তা বলাই যায়। এর মোকাবিলায় নির্বাচনী আচরণ বিধিমালায় এআই-বিষয়ক নির্দেশনা থাকার পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের এ-সংক্রান্ত মনিটরিং সেল থাকা দরকার।’

তিনি বলেন, ‘এআই-সংক্রান্ত পলিসি বা গাইডলাইন না থাকায় বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে আছে। সম্প্রতি সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫-এ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির কথা উল্লেখ করা হলেও সমন্বিত কোনো পরিকল্পনা নেই।’

এএফপির বাংলাদেশ-বিষয়ক ফ্যাক্ট চেক সম্পাদক ইয়ামিন সাজিদ মনে করেন, এআইয়ের অপব্যবহার রোধে সরকারকে নির্বাচনী প্রচারণায় এআইয়ের ব্যবহার নিয়ে বিশেষ দিকনির্দেশনা জারি করতে হবে। সামাজিকমাধ্যম ব্যবহারকারীদের ‘ডিজিটাল লিটারেসি’ বাড়াতে হবে। বেসরকারি এবং গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার নিশ্চিতে কাজ করে এমন সংস্থাগুলোকে সাধারণ জনগণের মধ্যে এআই-সচেতনতা বাড়াতে কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।

আন্তর্জাতিক নজির: বিশ্বের সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলোতে এআইয়ের অপব্যবহার বিপজ্জনক রূপ নিয়েছে। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনের আগে বাইডেন ও ট্রাম্পের ডিপফেক ভিডিও ভাইরাল হয়। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে এআই কণ্ঠে প্রচারণা চালানো হয়। নাইজেরিয়া, আর্জেন্টিনা, মেক্সিকোতেও নির্বাচনে এআইচালিত গুজব ছড়ানোর নজির রয়েছে।

গত ২ জুন নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় এ-বিষয়ক বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে সর্বসাম্প্রতিক দৃষ্টান্ত হিসেবে কানাডার নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নিকে শিশু যৌননিপীড়ক জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে সুইমিংপুলে একসঙ্গে সাঁতার কাটার বানোয়াট ছবি এক্স (সাবেক টুইটার) প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে পড়ার কথা তুলে ধরা হয়েছে। যদিও এ প্রচারণা কাজে আসেনি।

প্রথম আলো

‘প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডের জটিলতার অবসান কবে’-এটি দৈনিক প্রথম আলোর প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রবেশসংক্রান্ত জটিলতা এখনো কাটেনি। তথ্য অধিদপ্তরের (পিআইডি) দেওয়া প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড থাকলেও অনেক পেশাদার সাংবাদিক সেই কার্ড দেখিয়ে সচিবালয়ে ঢুকতে পারছেন না। যদিও একটি অস্থায়ী তালিকায় নাম থাকা সাংবাদিকেরা প্রবেশের সুযোগ পাচ্ছেন। এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে—তাহলে অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড থাকার মানে কী?

সাংবাদিকেরা বলছেন, মাসের পর মাস ধরে এই জটিলতা চললেও এর কার্যকর সমাধান হচ্ছে না। এতে সাংবাদিকেরা পেশাগত কাজে প্রতিবন্ধকতায় পড়ছেন। কবে এ সমস্যার সমাধান হবে, সেটাও স্পষ্ট করে বলছে না সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর।

সাংবাদিকদের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড দেয় তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন পিআইডি। তাদের তথ্য অনুযায়ী, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডধারীর সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় সাড়ে সাত হাজার। যদিও পরে আওয়ামী লীগ সরকার তখন মূলধারার প্রতিটি গণমাধ্যমের কার্ডের কোটা কমিয়ে দিয়েছিল। পরে বৈধ কার্ডের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ২ হাজার ৯০০।

যুগান্তর

দৈনিক যুগান্তরের প্রধান শিরোনাম ‘পোশাকশিল্পে অশনিসংকেত’। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের ওপর শেষ পর্যন্ত ৩৫ শতাংশ বাড়তি শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট। ১ আগস্ট থেকে এটি কার্যকর হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার চিঠি দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বিষয়টি জানিয়েছেন।

এদিকে অতিরিক্ত এ শুল্কহার কার্যকর হলে বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়ার শঙ্কায় রয়েছে দেশের পোশাকশিল্পসহ রপ্তানি খাত। বিশেষ করে পোশাক খাতে বড় ধরনের অশনিসংকেত দেখা দিতে পারে। কারণ, ট্রাম্প প্রশাসনের এ পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা অনেকটা কমিয়ে দেবে। যুক্তরাষ্ট্র হলো বাংলাদেশের পোশাক খাতের সবচেয়ে বড় বাজার। এছাড়া এর প্রভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাজারেও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এমনটিই মনে করেন বিশেষজ্ঞ ও পোশাকশিল্পের ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা।

যদিও অন্তর্বর্তী সরকারের নীতিনির্ধারণী মহল থেকে আশা প্রকাশ করে বলা হচ্ছে, এ শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এখনো আলোচনা অব্যাহত আছে। আজ আরেক দফা আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। ওয়াশিংটন ডিসিতে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তরের (ইউএসটিআর) সঙ্গে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বৈঠক করবেন। এছাড়া নতুন শুল্কহার নিয়ে ১০, ১১ ও ১২ জুলাই ইউএসটিআর-এর সঙ্গে নিগোসিয়েশন বৈঠক রয়েছে বাংলাদেশের। বৈঠকগুলোর পর শুল্কহার আরও কমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

প্রসঙ্গত, ২ এপ্রিল ট্রাম্প প্রশাসন বাংলাদেশের ওপর অতিরিক্ত ৩৭ শতাংশ পালটা শুল্ক আরোপ করে। দুই শতাংশ কমিয়ে বাংলাদেশের জন্য এখন ৩৫ শতাংশ করায় সব মিলিয়ে ১ আগস্ট থেকে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর মোট শুল্ক দাঁড়াবে ৫০ শতাংশ। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি পণ্যের ওপর ১৫ শতাংশ শুল্ক ছিল।

কালের কণ্ঠ

ট্রাম্প শুল্কে রপ্তানিতে ‘খাঁড়ার ঘা’-এটি কালের কণ্ঠের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, বাংলাদেশের সব রপ্তানি পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী ১ আগস্ট থেকে মার্কিন বাজারে রপ্তানি হওয়া পণ্যের ওপর এই বাড়তি শুল্ক কার্যকর হবে। সোমবার নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এ কথা জানিয়েছেন ট্রাম্প। নতুন শুল্ক হার ঘোষণা করে তিনি বাংলাদেশসহ ১৪টি দেশকে চিঠি দিয়েছেন।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট বলেছেন, সামনে আরো কিছু দেশের উদ্দেশে শুল্কবিষয়ক চিঠি পাঠানো হতে পারে। ট্রাম্পের এ ঘোষণায় নতুন করে পোশাক রপ্তানি খাতে ভয় ও আতঙ্ক ভর করছে। এতে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা কমে গিয়ে রপ্তানিতে বড় ধরনের ধাক্কা আসতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন।

সর্ববৃহৎ একক বাজারে বড় ঝুঁকি

বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রপ্তানি বাজার হলো যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে দেশের মোট পোশাক রপ্তানির ১৮ শতাংশের বেশি পণ্য পাঠানো হয়, যার পরিমাণ প্রায় সাড়ে আট বিলিয়ন ডলার। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) হিসাবে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ ৮৬৯ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, যা দেশের মোট রপ্তানি আয়ের ১৮ শতাংশের কিছু বেশি। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হওয়া বাংলাদেশি পণ্যের ৮৫ শতাংশের বেশিই তৈরি পোশাক। গত ৩ এপ্রিল বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছিলেন ট্রাম্প।

সে সময় বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল। তবে দর-কষাকষির জন্য শুল্ক তিন মাস স্থগিত রেখেছিলেন তিনি। এত দিন বাংলাদেশের পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কহার ছিল গড়ে ১৫ শতাংশ, এখন নতুন করে আরো ৩৫ শতাংশ শুল্ক বাড়ায় এটি দাঁড়াবে ৫০ শতাংশে। চড়া শুল্ক দিয়ে শীর্ষ বাজারটিতে টিকে থাকা নিয়ে ব্যবসায়ী মহলে চরম উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। অনেকেই একে ‘বাণিজ্যিক ভূমিকম্প’ বলে উল্লেখ করছেন।

অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাবে আশঙ্কা

খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতা ব্যর্থ হলে উচ্চ শুল্কের সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে বহু কারখানার ওপর; বিশেষ করে যেগুলো মার্কিন ক্রেতার ওপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশের পণ্যগুলো আরো বেশি অপ্রতিযোগিতামূলক হয়ে পড়তে পারে, যার ফলে রপ্তানি আয় কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সমকাল

দৈনিক সমকালের প্রধান শিরোনাম ‘যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানিতে আবার শুল্কের অস্বস্তি’। খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানিতে নতুন করে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অতিরিক্ত ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের চিঠি এই অস্বস্তির কারণ। বাংলাদেশসহ ১৪ দেশের পণ্যে বিভিন্ন হারে এবার শুল্ক আরোপ করে একযোগে চিঠি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে মূল প্রতিযোগী দেশ চীন, ভিয়েতনাম, ভারত ও পাকিস্তানের নাম নেই। এটি বাংলাদেশের জন্য অসম প্রতিযোগিতার ইঙ্গিত দেয়। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাকের রপ্তানি কমলে দেশের পোশাক খাতে এর বড় প্রভাব পড়বে।

গতকাল মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পাঠানো প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক চিঠিতে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশে বাংলাদেশের পণ্যে ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা জানানো হয়। আগামী ১ আগস্ট থেকে নতুন এই শুল্ক আরোপ হওয়ার কথা। নতুন এ হার কার্যকর হলে বাংলাদেশের পোশাকে শুল্ক দাঁড়াবে ৫১ শতাংশ।

এর আগে গত ২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশে ৬০ দেশের পণ্যে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশসহ বিভিন্ন হারে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তখন বাংলাদেশের পণ্যে ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা বলা হয়, যা কার্যকর হওয়ার কথা ছিল ৯ এপ্রিল। কার্যকরের দিন তিন মাসের জন্য দেশভিত্তিক বাড়তি শুল্ক আরোপ স্থগিত করা হয়। তিন মাসের এ শুল্ক বিরতির সময়সীমা শেষ হওয়ার আগে বাংলাদেশসহ ১৪ দেশের ওপর নতুন করে শুল্কহার নির্ধারণ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ইত্তেফাক

‘তত্ত্বাবধায়ক বাতিলের বিধান বাতিল: পুনর্বহাল গণভোট’-এটি দৈনিক ইত্তেফাকের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর অংশ বিশেষ বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়েছে। প্রকাশিত রায়ে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা, গণভোটের বিধানসহ পাঁচটি অনুচ্ছেদের ওপর সিদ্ধান্ত দিয়েছে হাইকোর্ট। বাকি ৪৯টি অনুচ্ছেদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত কি হবে তা আগামী জাতীয় সংসদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আদালত বলেছে, এসব অনুচ্ছেদ পরিবর্তন, পরিমার্জন ও বিলোপের বিষয়ে আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবেন জনগণের ভোটে নির্বাচিত জাতীয় সংসদের প্রতিনিধিরা। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চের পূর্ণাঙ্গ রায়ে এ সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে। ১৩৯ পৃষ্ঠার রায়টি দুই বিচারপতির স্বাক্ষরের পর মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েব সাইটে প্রকাশ করা হয়।

পূর্ণাঙ্গ রায়ে হাইকোর্ট বলেছে, সংবিধানের ৫৮(খ) অনুচ্ছেদের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্ত হওয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করে আনীত পঞ্চদশ সংশোধনী আইন সংবিধানের মৌলিক কাঠামো তথা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। যেহেতু মৌলিক কাঠামোকে ধ্বংস করেছে, সেহেতু তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের সিদ্ধান্তকে সংবিধান পরিপন্থি ঘোষণা করা হলো।

গণভোটের বিধান পুনর্বহালের রায়ে হাইকোর্ট বলেছে, ১৯৯১ সালে দ্বাদশ সংশোধনী মাধ্যমে সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদে গণভোটের বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে এই বিধান বাতিল করায় সংবিধানের প্রস্তাবনাসহ ৮, ৪৮ ও ৫৬ অনুচ্ছেদ অসংশোধনযোগ্য করে ফেলা হয়েছে। এর ফলে সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে জনমত বা জন আকাঙ্ক্ষাকে উপেক্ষা করা হয়েছে। যা সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও অসংগতিপূর্ণ। ফলে পঞ্চদশ সংশোধনীর ১৪ নম্বর আইনের ৪২ ধারার মাধ্যমে যে গণভোটের বিধান বাতিল করা হয়েছিল তা অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করা হলো।

বণিক বার্তা

দৈনিক বণিক বার্তার প্রথম পাতার খবর ‘মার্কিন শুল্ক কমানো সম্ভব না হলে ভিয়েতনামের চেয়ে পিছিয়ে পড়ার শঙ্কা’। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বে তৈরি পোশাক রফতানিতে চীনের পরেই দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। যদিও গত বছর বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানিতে প্রবৃদ্ধি ছিল ১ শতাংশেরও কম। অন্যদিকে বাংলাদেশের নিকটতম প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনামের প্রবৃদ্ধি ছিল ৯ শতাংশের বেশি।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দেশটির বাজারে ভিয়েতনামের পণ্য রফতানিতে ২০ শতাংশ শুল্কহার নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বাংলাদেশের জন্য এ হার ৩৫ শতাংশ। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে শুল্কহারে ছাড় না পেলে তৈরি পোশাক রফতানিতে ভিয়েতনামের তুলনায় বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) তথ্যানুসারে, ২০২৪ সালে ১৬৫ দশমিক ২৪ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক রফতানির মাধ্যমে শীর্ষে রয়েছে চীন। দেশটির তৈরি পোশাক রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে দশমিক ৩০ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশ এ সময়ে ৩৮ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক রফতানি করেছে। ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে তৈরি পোশাক রফতানিতে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র দশমিক ২১ শতাংশ। তৈরি পোশাকের বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশের নিকটতম প্রতিযোগী ভিয়েতনাম গত বছরে ৩৩ দশমিক ৯৪ ডলার রফতানি করেছে। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ।

আজকের পত্রিকা

‘বেশি চিন্তা তৈরি পোশাকে, কারখানা বন্ধের শঙ্কা’-এটি দৈনিক আজকের পত্রিকার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, দুই দেশের মধ্যে আলাপ-আলোচনার মধ্যে বাংলাদেশি রপ্তানি পণ্যে ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করে বসল যুক্তরাষ্ট্র। এতে চিন্তায় পড়েছে দেশের ব্যবসায়ীরা, বিশেষ করে তৈরি পোশাকের রপ্তানিকারকেরা। তাঁরা বলছেন, এই শুল্কহার যদি শেষ পর্যন্ত বহাল থাকে, তাহলে ভয়ানক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে রপ্তানি খাত। প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এতে অর্থনীতির যেমন ক্ষতি হবে, তেমনি কাজ হারাতে পারে অনেক শ্রমিক।

তৈরি পোশাক কারখানার মালিক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত যদি ৩৫ শতাংশ বাড়তি শুল্ক বহাল থাকে, তবে আমাদের পোশাক খাতে শুল্ক ৫০ শতাংশের বেশি হবে। কারণ পাল্টা শুল্ক আরোপের আগে বাংলাদেশ থেকে গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক দিয়ে পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশ করত। এটা আমাদের রপ্তানিকে বড় চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলে দেবে।’

ভিয়েতনাম, ভারতসহ প্রতিযোগী দেশগুলো আমাদের বাজার দখল করে নিতে পারে—এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে মাহমুদ হাসান আরও বলেন, ‘যদি আমরা প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে চাই, তবে আমাদের পণ্যের দাম কমাতে হবে। আর দাম কমালে কারখানাগুলো লোকসানে পড়বে। এতে দেশের অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে।’

বাংলাদেশ প্রতিদিন

দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রথম পাতার খবর ‘সাড়ে ৭ বিলিয়ন ডলারের বাজার হারানোর শঙ্কা’। প্রতিবেদনে বলা হয়, সমঝোতার বদলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চিঠিতে বাংলাদেশের সব ধরনের পণ্য রপ্তানির ওপর নতুন করে ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণার পর দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। তারা আশঙ্কা করছেন, প্রথম পর্যায়ে সরকারের সমঝোতার চেষ্টার পর এখন দ্বিতীয় দফার আলোচনায় সমঝোতা না হলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রায় সাড়ে ৭ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানির বাজার হুমকিতে পড়বে।

মঙ্গলবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পাঠানো ট্রাম্পের চিঠি বিশ্লেষণ করে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ চিঠিতে এমন কিছু বার্তা রয়েছে, যা দেশের রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে। চিঠিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানিতে প্রচলিত যে শুল্ক রয়েছে, তার ওপর আরও ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ হবে। এটি হলে প্রচলিত ১৫ শতাংশের সঙ্গে ৩৫ শতাংশ মিলিয়ে প্রায় ৫০ শতাংশ শুল্ক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের পণ্য রপ্তানি করতে হবে, যা অসম্ভব। এ ছাড়া এ শুল্কের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ যদি যুক্তরাষ্ট্রের ওপর কোনো শুল্ক আরোপ করে, তবে সেই পরিমাণ শুল্ক অতিরিক্ত হিসেবে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানিতে আরোপ করার হুমকিও রয়েছে ট্রাম্পের চিঠিতে।

বাংলাদেশ নিট তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিকেএমইএর সাবেক সভাপতি ফজলুল হক বলেন, আমরা আশায় ছিলাম, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি সমঝোতা হবে। অথচ এর বদলে আমরা একটি চিঠির কথা শুনলাম, যেটি উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা তৈরি করেছে। তৈরি পোশাক খাতের এ ব্যবসায়ী বলেন, আমাদের প্রতিযোগী দেশগুলোর মধ্যে ভিয়েতনামের সঙ্গে এরই মধ্যে সমঝোতা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। ভারত, পাকিস্তানের সঙ্গেও চুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে। বাকি শুধু বাংলাদেশ। কোনো কারণে যদি দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনায় সমঝোতা না হয়, তবে প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় প্রায় দ্বিগুণের বেশি শুল্ক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি করতে হবে আমাদের। এটি যুক্তরাষ্ট্রের বাজার হারানোর শঙ্কা তৈরি করেছে। বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের জন্যও সবচেয়ে বড় উৎকণ্ঠা তৈরি করেছে।

অনলাইন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

অনলাইন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status