অনলাইন
একতরফা তফসিল ও নির্বাচন আয়োজনে উদ্বেগ ৪৭ বিশিষ্ট নাগরিকের
স্টাফ রিপোর্টার
(১ সপ্তাহ আগে) ২০ নভেম্বর ২০২৩, সোমবার, ৭:১২ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০৮ পূর্বাহ্ন

‘একতরফা’ তফসিল ও নির্বাচন আয়োজন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের ৪৭ জন বিশিষ্ট নাগরিক। সোমবার এক বিবৃতিতে তারা এই উদ্বেগ প্রকাশ করার পাশাপাশি সব অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচন উপযোগী পরিবেশ তৈরি করতে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
সাবেক মন্ত্রীপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, লন্ডন স্কুল অব ইকনমিক্স অ্যান্ড পলিটিকাল সায়েন্স এর ভিজিটিং প্রফেসর স্বপন আদনান, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, অধ্যাপক আসিফ নজরুল প্রমুখ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন।
এতে তারা বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, সরকার সম্প্রতি আরও একটি একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এরই অংশ হিসেবে ২৮শে অক্টোবর পরবর্তী সময়ে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অজস্র মামলা দায়ের করা হচ্ছে, তাদের নির্বিচারে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এরই মধ্যে বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপের সম্ভাবনা নাকচ করা হয়েছে এবং বিভিন্ন প্রচারমাধ্যম ব্যবহার করে বিরোধী দলের প্রতি বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচার করা হচ্ছে। এমন একটি পরিস্থিতিতে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন সরকারের একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠানের সহায়ক শক্তি হিসেবে ভূমিকা রাখছে বলে আমরা মনে করি। এ পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমরা অতীতের দু’টি নির্বাচনের অভিজ্ঞতায় দেখেছি- একতরফা, বিতর্কিত ও সাজানো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে দেশে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক জবাবদিহিতা থাকে না; রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের অজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়, দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, খুন, দুর্নীতি, লুটপাট, বিদেশে অর্থপাচার ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এই পরিপ্রেক্ষিতে আরও একটি বিতর্কিত এবং একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠান বাংলাদেশকে গভীরতর সংকটে নিপতিত করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা এই পরিস্থিতিতে অবিলম্বে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের মুক্তি দিয়ে তাদের এবং অন্যান্য অংশীজনের সাথে আলোচনা করে নির্বাচন উপযোগী একটি পরিস্থিতি সৃষ্টির উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা একই সঙ্গে সংলাপের পথ উন্মুক্ত রাখার স্বার্থে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করার জন্য বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে আহবান জানাচ্ছি।
আমরা মনে করি, অতীতের একতরফা নির্বাচনের অভিজ্ঞতার পরও দেশি-বিদেশি নানা মহলের সংলাপের আহ্বানকে উপেক্ষা করে সরকার যদি আরও একটি অনুরূপ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিকে অগ্রসর হয় তাহলে এর দায়-দায়িত্ব মূলত সরকারকে বহন করতে হবে।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরদাতাদের মধ্যে আছেন,
আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, মানবাধিকার কর্মী শিরিন হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, লেখক রেহনুমা আহমেদ, মানবাধিকার কর্মী নূর খান লিটন, লেখক অরূপ রাহী, রাখাল রাহা, মাহবুব মোর্শেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, অধ্যাপক মির্জা তসলিমা সুলতানা, অধ্যাপক রায়হান রাইন, লেখক ও নৃবিজ্ঞানী সায়েমা খাতুন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আ-আল মামুন, কবি সাখাওয়াত টিপু, সিনিয়র আইনজীবী তবারক হোসেইন, সুব্রত চৌধূরী, মানবাধিকার কর্মী হানা শামস আহমেদ, চিকিৎসক ও সমাজকর্মী নায়লা জামান খান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোশরেকা অদিতি হক, সাংবাদিক সায়দিয়া গুলরুখ, গবেষক ও মানবাধিকার কর্মী রেজাউর রহমান লেনিন, লেখক ড. মারুফ মল্লিক, যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব পিটসবার্গ এর পিএইচডি গবেষক, মাইদুল ইসলাম, নৃবিজ্ঞানী নাসরিন খন্দকার, কথাসাহিত্যিক এহ্সান মাহমুদ, লেখক ও গবেষক মাহা মির্জা, লেখক বাকি বিল্লাহ, রাজনৈতিক ভাষ্যকার মনির হায়দার, শিল্পী ও সংগঠক অমল আকাশ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক আর রাজী, কথা সাহিত্যিক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন, সঙ্গীতশিল্পী ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান, গীতিকবি লতিফুল ইসলাম শিবলী, কবি ও উন্নয়নকর্মী ফেরদৌস আরা রুমী, মানবাধিকার কর্মী রোজিনা বেগম, প্রকাশক সাঈদ বারী, যুক্তরাজ্যের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সাদাফ নূর, চলচ্চিত্র নির্মাতা মুহাম্মদ কাইউম, লেখক জিয়া হাশান, লেখক আসিফ সিবগাত ভূঞা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারি অধ্যাপক জি এইচ হাবীব, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোস্তফা নাজমুল মানছুর তমাল।
।
পাঠকের মতামত
মেয়র যাদের পানিতে চুবানোর কথা বলেছিল ওনারা কই।
৪৭ বিশিষ্ট নাগরিকের বিবৃতি আওয়ামী লীগের গোনার সময় নাই। সেই সময়ও নাই। সেই সুযোগও নাই। বীরদর্পে দেশ শাসন করতে হয় কিভাবে গত পনের বছর ধরে আওয়ামী লীগ সেটা দেখিয়ে দিয়েছে। আমার কাছে মনে হয় শুধু বাংলাদেশ কেন, তামাম দুনিয়ার শাসকবর্গ এবং রাজনীতিবিদরা আওয়ামী লীগের কাছে শিশু। একক কর্তৃত্বে দেশ শাসন করার যে অনন্য নজির স্হাপন করেছে আওয়ামী লীগ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের শেখার আছে। কতো বিবৃতি আসলো আর গেলো আওয়ামী লীগের টিকিটিও স্পর্শ করতে কেউ পারেনি। এতোদিন শুনলাম আমেরিকার চাপে পড়ে আওয়ামী লীগ সরকার কাবু হয়ে পড়েছে। টকশো সরগরম করে বলা হয়েছে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো নির্বাচন সহজে করতে পারবেনা। এতো বকবকানির মধ্যেই কিন্তু সিডিউল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। কেউ তো ঠেকাতে পারলোনা? আওয়ামী লীগ কি জিনিস আরো কি বুঝার বা দেখার বাকি আছে? আওয়ামী লীগ আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহ কোনো দেশের মাতব্বরি মেনে নেবেনা। একতরফা নির্বাচন হলে নাকি কি ঘটে যাবে? দেখা যাক কি ঘটে। কে ঘটায় তাও দেখা যাবে। কারো মুরোদ নাই আওয়ামী লীগের সামনে দাঁড়াবার। নির্বাচন ঠিক সময় মতো হবে, যেভাবে আওয়ামী লীগ চায় সেভাবে হবে। পারলে ঠেকাও।
The government will ignore this appeal. Nothing will happen.
সুশীল সমাজ উদ্বিগ্নের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। এদেশের সুশীল সমাজ যদি শক্ত হতো, তাহলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অনুশীলন সহজতর হতো। এদেশের সুশীল সমাজের সাহসিকহীনতার কারণে এদেশে স্বৈরতান্ত্রিকতার সাহসিকতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
মন্তব্য করুন
অনলাইন থেকে আরও পড়ুন
অনলাইন সর্বাধিক পঠিত
দ্য ডিপ্লোম্যাটের নিবন্ধ/ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য বাংলাদেশিরা যুক্তরাষ্ট্রের দিকে তাকিয়ে
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন/ নির্বাচন নিয়ে মার্কিন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় 'হস্তক্ষেপ'কে হাইলাইট করলেন মোমেন
গুম-খুন-কারা নির্যাতিত বিএনপি নেতাদের স্বজনদের আহাজারি/ বাঁচার অধিকার না থাকলে সবাইকে একসাথে মেরে ফেলুন

জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]