ঢাকা, ১০ মে ২০২৫, শনিবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১১ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

অনলাইন

যারা মিথ্যা মামলা করে তারা শেখ হাসিনার পর্যায়ভুক্ত: আসিফ নজরুল

স্টাফ রিপোর্টার

(৫ ঘন্টা আগে) ১০ মে ২০২৫, শনিবার, ৯:৫৯ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ২:০৭ অপরাহ্ন

mzamin

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, যারা মিথ্যা মামলা করে তারা শেখ হাসিনার পর্যায়ভুক্ত। কারণ শেখ হাসিনা মিথ্যা মামলা করত। পুলিশকে কঠোরভাবে নির্দেশ দেয়া আছে সাবটেন্সি প্রুফ না পেলে কাউকে গ্রেপ্তার করবেন না। হঠাৎ করে আমরা র‌্যাডিক্যাল পরিবর্তন আশা করতে পারি হয়তো বাস্তবায়ন করতে পারি না। 
শুক্রবার রাজধানীর গুলশান ক্লাবে নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের নোয়াব এর ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, অনেকবার বলেছি মিথ্যা মামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। মিথ্যা মামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়। মামলাটা ইনভেস্টিগেশন হবে চার্জশিট হবে বিচারিক প্রক্রিয়ায় যাবে। তখন যদি প্রমাণিত হয় মিথ্যা মামলা তখন শুধু আপনি ব্যবস্থা নিতে পারবেন। তার আগে আপনি ব্যবস্থা নিতে পারেন না। আমরা সবাই যদি জানিও এটা মিথ্যা মামলা, কিন্তু আমাদের কিছু করার থাকে না। আমরা যখন বিভিন্ন এক্সপার্ট নিয়ে গোল টেবিল বৈঠক করলাম তখন তারা বললো আপনি তো ভাই পুুলিশকে দুইবার হ্যারেজ করার সুযোগ দিচ্ছেন। একবার প্রিলিমিনারি তদন্ত করার সময় বলবে আপনার নাম কিন্তু এফআইআর-এ দিয়ে দিব, আর একবার এফআইআর করার সময়। একটা দেশে  ১৫ বছর মিথ্যা মামলার চর্চা হয়েছে, সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। যখন হয়েছে আমরা সম্মিলিতভাবে সেভাবে প্রতিবাদ করতে পারিনি। আপনি যদি বলেন আমরা নিয়মিত হুংকার দিব মিথ্যা মামলাকারীদের ছাড় নাই। দেখেন লাভ হয় কিনা। এটা ব্যাধিরমতো ছড়িয়ে পড়ে। আপনারা মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশে দেখেছেন। সাথে সাথে সবকিছু শৃঙ্খলার মধ্যে আনা যায় না। মিথ্যা মামলাকে প্রচণ্ড ভাষায় আমরা নিন্দা করতে চাই।
তিনি বলেন, সব সরকারের আমলেই স্বাধীন সাংবাদিকতা হুমকির মুখে থাকে। কিন্তু আওয়ামী লীগ আমলে তা তুলনাহীন ছিল। 

আসিফ নজরুল বলেন, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের অধিকাংশ সাংবাদিককে দাসে পরিণত করেছিল। যারা দাস হতে চায়নি, তাদের জীবন অতিষ্ট করে তুলেছিল। আওয়ামী লীগ আমলে সাংবাদিকতার আইয়ামে জাহেলিয়্যাত কায়েম হয়েছিল। বাকশাল কায়েম হয়েছিল।
আইন উপদেষ্টা বলেন, আওয়ামী আমলে সাংবাদিক সম্মেলনগুলো বাংলাদেশের মানুষ ও স্বাধীন সাংবাদিককে অপমান করার একটা ফোরামে পরিণত হয়েছিল। একটা বিকৃত মহিলা তার কিছু তোষামোদকারী নিয়ে পুরো বাংলাদেশের মানুষকে ব্যঙ্গ করতে শুরু করেছিল।
সাংবাদিক সংগঠনগুলোকে নিরপেক্ষভাবে চলতে দেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তাদেরকে তাদের ভূমিকা পালন করতে দেন।
এরশাদ আমলে সাংবাদিক সংগঠনগুলো এরশাদের পতনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছিল। শেখ হাসিনার আমলে এরা ফ্যাসিস্ট রেজিম রক্ষার্থে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছিল। এ পরিবর্তন থেকে সাংবাদিকদের সংগঠনগুলোকে বাঁচাতে হবে। গণঅভ্যুত্থানকালে সাংবাদিকরা যে ভূমিকা রেখেছিল, সার্বিকভাবে তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এ গণঅভ্যুত্থানে অন্যতম উপাদান ছিল সাংবাদিকতা। অনেক আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা একটি নতুন সময় ও সুযোগ পেয়েছি। আমরা স্বাধীনতার চর্চা করব, কিন্তু খুব প্রজ্ঞার সঙ্গে করতে হবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, নোয়াব ২০ বছর জার্নি করছে। এটা খুবই পিসফুল একটা জার্নি। আমি ৩০ বছর জার্নালিজমে ছিলাম। আমার ভালো লাগার জায়গা থেকে জার্নালিজমে এসেছিলাম। আমার খুব কাছে থেকে বাংলাদেশের মোস্ট স্টোরিড যেটা নিউজ পেপার সেটার ধ্বংস দেখেছি।
প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান আবদুল হাকিম বলেন, ফ্রিডম অব প্রেস কিছু শর্তের মধ্যে যেটা ওনি বললেন (প্রেস সচিব) ডিগনিটি (সম্মান) সাংবাদিকদের এটা অত্যন্ত জরুরি। আপনারা জানেন গত ৫৩ বছর প্রেস কাউন্সিল ফ্রিডম অব প্রেসসহ অন্যান্য বিষয়ে কাজ করছে।
নোয়াবের সভাপতি একে আজাদ বলেন, বিগত ১৫ বছর শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের সময়টা ছিল খুবই চ্যালেঞ্জিং । বছরের পর বছর ধরে পতিত হাসিনা সরকার আমাদের বকেয়া বিজ্ঞাপন বিল পরিশোধে বারবার অনুরোধ জানানো সত্ত্বেও কোনো সাড়া দেয়নি। শেখ হাসিনার পতনের পর আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তবে এখনও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখতে পাইনি। 
দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, সত্যিকারার্থে বাংলাদেশে আমরা স্বাধীন সাংবাদিকতা প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। কোনো সরকারকেই আমরা বোঝাতে পারিনি ক্রিটিকস আই ইউর বেস্ট ফ্রেন্ড, নট এনিমিস। ওনারা সবসময় প্রশংসা পছন্দ করেন। সবসময় ওনাদের বড় বড় করে ছবি ছাপব। যখনই সমালোচনা হয় তখন কেমন জানি একটা পরিবর্তন ঘটে। আমাদেরকে শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
বণিক বার্তার সম্পাদক ও প্রকাশক এবং নোয়াবের কার্যনিবাহী কমিটির সদস্য দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সম্পাদকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নোয়াবের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক  মতিউর রহমান, নোয়াবের কোষাধ্যক্ষ ও দৈনিক মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, সম্পাদক ও প্রকাশক মাহবুবা চৌধুরী, দৈনিক সমকালের সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী, দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ, দৈনিক সংবাদের সম্পাদক আলতামাশ কবির, দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন প্রমুখ।

অনলাইন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

অনলাইন সর্বাধিক পঠিত

‘দ্য উইক’ ম্যাগাজিনে তারেক রহমানকে নিয়ে কাভার স্টোরি/ ‘নিয়তির সন্তান’

বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের বাসায় পুলিশ/ ডিএমপির দুঃখ প্রকাশ, এসআই ক্লোজড

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status