ঢাকা, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৬ হিঃ

অনলাইন

লন্ডনে বিএনপি-জামায়াত নেতাদের মধ্যে কী সমঝোতা হলো

শান্তনা রহমান

(৬ দিন আগে) ২২ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার, ১২:০৫ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১২:০০ পূর্বাহ্ন

mzamin

বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে তা এখনো অজানা। লন্ডনে বা ঢাকায় কোনো দলের পক্ষ থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই বলা হয়নি। এ কারণেই হয়তো বিস্তর কৌতূহল । দু’দলের মধ্যে যে দূরত্ব বেড়েছিল তার কি কিছুটা অবসান হয়েছে? কেন দূরত্ব তৈরি হলো, কারা এর জন্য দায়ী তা নিয়ে দু’দলের নেতারা আলোচনা করেছেন। খুঁজেছেন উত্তর। চলমান রাজনীতি ও ভবিষ্যৎ নির্বাচন নিয়ে দীর্ঘসময় আলোচনা হলেও সুনির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্তের দিকে হাঁটেননি নেতারা। পর্যবেক্ষকরা পরস্পরবিরোধী অবস্থান থেকে এক কক্ষে বসাটাকেও ইতিবাচক বলে মনে করছেন।  কারণ দু’দলের মধ্যে উদ্বেগ ছিল, ছিল বেদনা। একে অপরকে প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবতে শুরু করেছিল। গেল সপ্তাহে বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ নেতারা এক বৈঠকে মিলিত হন। যদিও বৈঠকটি ছিল মূলত মানবিক। তবে এক ঘণ্টার এই বৈঠকে বেশির ভাগ সময় রাজনীতির চর্চাই হয়েছে। অসুস্থ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতেই জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান সেখানে যান। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসায় তারা মিলিত হন। ডা. শফিকুর রহমান ইউরোপীয় ইউনিয়নের আমন্ত্রণে ব্রাসেলস গিয়েছিলেন। ইউরোপীয় নেতাদের কাছে তারা তাদের অবস্থান তুলে ধরেছেন। জামায়াত কী চায় তাও স্পষ্ট করেছেন। প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত এই বৈঠককে তারা অত্যন্ত সফল বলে বর্ণনা করছেন বিভিন্ন মাধ্যমে। বেগম জিয়ার সঙ্গে বৈঠক হবে এ নিয়ে কোনো জল্পনা ছিল না। অনেকটা নাটকীয়ভাবেই ডা. শফিকুর রহমান সেখানে হাজির হন। দু’দলের শুভাকাঙ্ক্ষীরা এই বৈঠকের ব্যাপারে নানাভাবে তাগিদ দিয়ে আসছিলেন। এর আগে অবশ্য ফোনালাপ হয় দু’পক্ষের মধ্যে। তারেক রহমান নিজেই জামায়াতের আমীরকে স্বাগত জানান। যা ছিল অত্যন্ত আন্তরিকতায় ভরা। নিজ হাতে তিনি তাদের আপ্যায়িত করেন তার বাসভবনে। আলোচনার শুরুটা ছিল আবেগময়। অসুস্থ খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা কেমন, কীভাবে তার দিন কাটছে তা জানার চেষ্টা করেন ডা. শফিকুর রহমান। কবে দেশে ফিরবেন তাও জানতে চান ডা. শফিক। এরপর ধীরে ধীরে রাজনৈতিক আলোচনা শুরু হয়।

২০০১ সনের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বে চারদলীয় জোট গঠিত হয়। ক্ষমতায় আসে জোট। বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সরকারে স্থান পায় জামায়াত। মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ মন্ত্রী হন। যা নিয়ে বিএনপি প্রচণ্ড সমালোচনার মুখে পড়ে। ওয়ান-ইলেভেনের আগ পর্যন্ত তাদের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কই ছিল বহাল। এরপর থেকে দূরত্ব বাড়তে থাকে। বেগম জিয়া যান কারাগারে মিথ্যা মামলায়। জামায়াত নেতাদের ফাঁসি কার্যকর হয়। জাতীয়-আন্তর্জাতিক নানা খেলায় দু’দলের ঐক্যে ফাটল ধরে। অনেকটা প্রকাশ্যেই একে অপরকে দোষারোপ করতে থাকেন। সুযোগ নেয় ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার। 

লন্ডন বৈঠকে বেগম জিয়া খুব কম কথা বলেছেন। তবে তার কথাবার্তার মধ্যে ঐক্যের সুর ছিল। তারেক রহমান আলোচনা এগিয়ে নিয়েছেন। ডা. শফিকুর রহমান বারকয়েক বলেছেন, কোত্থা থেকে কী হলো জানি না। কিন্তু আমাদের তরফে ঐক্য ভাঙার কোনো চেষ্টা ছিল না। বিএনপির নেতাদের বক্তৃতা-বিবৃতি পর্যালোচনা করলেই এর জবাব খুঁজে পাওয়া যাবে। তারেক রহমান তার অবস্থান খোলাসা করেন। বলেন, এতবড় পার্টির কোথায়, কোন নেতা কী বলেছেন তা মনিটর করা সম্ভব নয়। কিন্তু দলের কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না আমি যতটুকু জানি। তখন বেগম জিয়া অত্যন্ত স্বল্প কথায় বিএনপি-জামায়াত ঐক্যের পটভূমি বর্ণনা করেন। যাতে বৈঠকের পরিবেশ অন্যদিকে মোড় নেয়। এরপর ডা. শফিক আলোচনার প্রসঙ্গ পাল্টে চলমান রাজনীতির দিকে  আলোকপাত করেন। ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে একটি বাইরের শক্তি নানা ষড়যন্ত্র করছে তা নিয়েও তারা আলোচনা করেন এবং তারা একমত হন।  কবে নির্বাচন হতে পারে তা নিয়ে বেশ কিছু সময় আলোচনা হয়। নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে দু’দলের অবস্থান কাছাকাছি নয়, বিপরীতমুখী। দু’দলের মধ্যে দূরত্ব কমাতে কিছু করণীয় নিয়েও কথাবার্তা হয় তাদের মধ্যে। আরো ধৈর্য, আরো সংযমের উপর জোর দেন নেতারা। ঢাকায় একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, ভবিষ্যতে দু’দলের সম্পর্কে ফাটল ধরে এমন কোনো কাজকে প্রশ্রয় দেবেন না কেউই- সেই বিষয়েও তারা এক অলিখিত সিদ্ধান্তে পৌঁছান।
 

পাঠকের মতামত

ঐক্য ভঙ্গের প্রক্রিয়া ডাঃ শফিকুর রহমান নিজেই শুরু করেছিলো দলীয় ফোরামে বি এন পি'র বিরূদ্ধে বক্তৃতায়। কথা বার্তায় জামাত নেতৃবৃন্দ সৎ, এ কথা বলার কোনো উপায় নেই।

মোতাহার
২২ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার, ৯:৫৭ অপরাহ্ন

জামায়া কখনোই উচিত হবে না এই চাঁদাবাজ দলের সাথে আপোষ করা। প্রয়োজনে জীবনে কোনদিন ক্ষমতায় যাবে না তা ও চাঁদাবাজ আর ইসলাম বিরোধী এমন কারো সাথে আপোষ করা ঠিক না।

Arif Billah
২২ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার, ৯:২৫ অপরাহ্ন

বিএনপি ও জামায়াতের ঐক্যের বিকল্প নেই।

মোঃ অমিত হাসান বাচ্চ
২২ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার, ৯:০১ অপরাহ্ন

বিএনপি বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি এককভাবে ক্ষমতায় আসার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে, জামায়াত ছাড়া বিএনপি ২০০/২২০ আসন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তবে জামায়াত কে সঙ্গে নিয়ে দেশ পরিচালনা করলে ফেসিস্ট আওয়ামী লীগ এর ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে সহজ হবে , এবং দেশ ভালোভাবে এগিয়ে যাবে ইনশাল্লাহ, এক্ষেত্রে জামায়াত ও বিএনপি উভয় এর বিদ্বেষ ও প্রতিহিংসার রাজনীতি বন্ধ করতে হবে এবং ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশ পরিচালনা করতে হবে।

মোঃ অমিত হাসান বাচ্চ
২২ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার, ৯:০০ অপরাহ্ন

বিএনপি জামায়াত ঐক্যের বিকল্প নেই।

Mamun
২২ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার, ৭:৫০ অপরাহ্ন

বিএনপি জামাত আলাদা করে নির্বাচন হলে হ্মমতায় যেতে পারবে না।

মোঃ শামছুল হুদা।
২২ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার, ৬:২২ অপরাহ্ন

বিএনপির জামায়াতকে সাথে নির্বাচন করতে হবে কেন? নিজের শক্তিতে বিএনপির ক্ষমতায় যাওয়ার সক্ষমতা আছে। এটা আমার বিশ্বাস, আমার অভিমত।

কামরুল ইসলাম
২২ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার, ৫:২০ অপরাহ্ন

শওকত আলী ভাই হাসাইলেন।জামায়াত ছাড়া বিএনপির ক্ষমতায় যাওয়া দুরুহ?জামায়াত একা নির্বাচন করুক।বিএনপিও একা নির্বাচন করুক।তাহলেই বুঝা যাবে কে ছায়া দেয় আর কে ছায়া নেয়।

Opu khan
২২ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার, ২:৪৬ অপরাহ্ন

বিএনপি-জামায়াত ঐক্যবদ্ধ না থাকলে ফ্যাসিস্ট আবারও মাঠে নামার চেষ্টা করবে।

আব্দুল হালিম
২২ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার, ১:১৩ অপরাহ্ন

বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে ঐক্যমত থাকলে দেশের জনগণও খুশী হয়। কারণ বিএনপি ও জামায়াত ঐক্যবদ্ধ না থাকলে এককভাবে বিএনপি যেমত ক্ষমতায় যাওয়া দূরহ তেমনি জামায়াতে ইসলামীও কাঙ্কিত ফলাফল আশা করতে পারে না। তবে গতানুগতিক ও বিরক্তিকর রাজনীতি থেকে ফিরে এসে জনগণের কল্যাণে কাজ করতে হবে। দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ইত্যাদি বাদ দিয়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। তাছাড়া যে দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস সাহেবকে প্রেসিডেন্ট অথবা প্রধানমন্ত্রীর পদটি অলংকৃত করতে হবে। আন্তর্জাতিকভাবে সম্পর্ক উন্নয়ন ও ভালো ফলাফল পেতে হলে ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস সাহেবকে কাজে লাগাতে হবে।

শওকত আলী
২২ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার, ১২:২৭ অপরাহ্ন

অনলাইন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

অনলাইন সর্বাধিক পঠিত

‘দ্য উইক’ ম্যাগাজিনে তারেক রহমানকে নিয়ে কাভার স্টোরি/ ‘নিয়তির সন্তান’

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status