অনলাইন
চীনের মধ্যস্থতায় প্রত্যাবাসন প্রস্তুতি নিয়ে যা বললেন জাতিসংঘ দূত
কূটনৈতিক রিপোর্টার
(৩ মাস আগে) ৫ জুন ২০২৩, সোমবার, ১১:৪৮ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৪:৫০ অপরাহ্ন

প্রত্যাবাসন শুরু করার আগে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের রাখাইন রাজ্য তথা মিয়ানমারের বাস্তব অবস্থা সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা দিতে হবে। খোলামেলাভাবে তাদের কাছে পরিস্থিতির বিষয়ে সত্য তুলে ধরতে হবে। সত্য-সুষ্ঠু তথ্যের ভিত্তিতে তারা স্বপ্রণোনিত হয়ে চূড়ান্ত মতামত দিবে। সিদ্ধান্ত গ্রহণে তাদের ওপর কোনরকম চাপ বা প্ররোচনা প্রভাব ফেলছে কি-না? অর্থাৎ রোহিঙ্গা শরণার্থীরা কতটা স্বচ্ছ তথ্যে রাখাইনে ফিরে যেতে আগ্রহী হচ্ছে- তা মূল্যায়নের সুযোগ ইউএনএইচসিআর তথা জাতিসংঘের থাকতে হবে।
বাংলাদেশ সফর করে এমনটাই জানিয়ে গেলেন ইউএনএইচসিআর-এর ডেপুটি হাই কমিশনার কেলি টি. ক্লেমেন্টস। চীনের মধ্যস্থতায় প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য বাংলাদেশ এবং মিয়ানমারের প্রস্তুতির মুহূর্তে জাতিসংঘের ওই বক্তব্যটি এলো। যা নিয়ে কূটনৈতিক অঙ্গনে তাৎক্ষণিক কানাঘুষা শুরু হয়েছে। জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর এর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সফরকালে কেলি ক্লেমেন্টস রোহিঙ্গা শরণার্থী, বাংলাদেশ সরকার, দাতা সংস্থা এবং মাঠ পর্যায়ে মানবিক কর্মকান্ডে নিয়োজিত কর্মীদের সঙ্গে সিরিজ বৈঠক করেছেন। সেই সব বৈঠকে শরণার্থীদের জন্য জরুরি সহায়তার আহ্বান জানান তিনি। প্রায় ৬ বছর ধরে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় প্রদানের জন্য বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা পূনর্ব্যক্ত করে জাতিসংঘ দূত কেলি ক্লেমেন্টস বাস্তুচ্যুতদের জীবিকা ও স্বনির্ভরতামূলক কর্মকান্ডের সুযোগ প্রদানের অনুরোধ জানান।
তিনি বলেন, এমন উদ্যোগ নিতে হবে, যেনো বিদ্যমান মানবিক সংকটের আর অবনতি না ঘটে। ডেপুটি হাই কমিশনার বলেন, স্থানীয় জনগণকে সাহায্যের পাশাপাশি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যয় ও জীবন মান উন্নয়নে জোর প্রচেষ্টা দেয়ার সময় এসেছে, যেনো প্রত্যাবাসনের উপযুক্ত পরিস্থিতি তৈরি হলে তারা বাংলাদেশে পাওয়া দক্ষতা, প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা নিয়ে নিজ দেশে ফিরে যেতে পারে।
কক্সবাজারে শরণার্থী শিবির পরিদর্শনের পর কেলি ক্লেমেন্টস বলেন, আমরা মিয়ানমারে অনুকূল পরিস্থিতি তৈরির জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি যাতে শরণার্থীরা নিরাপদে ও মর্যাদার সাথে ফিরে যেতে পারে, এবং তাদের স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসন যেন টেকসই হয়।
জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, শিবিরে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা তাদের মৌলিক চাহিদার জন্য মানবিক সাহায্যের উপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল। তথাপি, এই সহায়তার জন্য ন্যূনতম তহবিলও এখন আর পাওয়া যাচ্ছে না। ১লা জুন থেকে তহবিলের অভাবে তিন মাসের মধ্যে দ্বিতীয় দফায় খাদ্য সহায়তা কমাতে বাধ্য হয়েছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি।
রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করা মানবিক সংস্থাগুলো এখন বাধ্য হচ্ছে শুধুমাত্র সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চাহিদাগুলো চিহ্নিত করে কাজ করতে, যার ফলে অনেক মৌলিক চাহিদা অপূর্ণ থেকে যাচ্ছে; আর এর পরিণাম হচ্ছে মারাত্মক।
ইউএনএইচসিআর উদ্বিগ্ন যে এই বছরের শুরুতে একটি বড় অগ্নিকাণ্ড এবং কয়েক সপ্তাহ আগে ঘূর্ণিঝড় মোখা'র পর এই হ্রাসকৃত রেশনের কারণে শরণার্থীদের মধ্যে অপুষ্টির হার, লেখাপড়া থেকে ঝরে পড়া, বাল্যবিবাহ, শিশুশ্রম এবং লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার ঘটনা বৃদ্ধি পাবে। পর্যাপ্ত সহায়তার অভাবে শরণার্থীদের মরিয়া পদক্ষেপ গ্রহণের ঝুঁকি রয়ে যায়।
কেলি ক্লেমেন্টস আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের কিছু আয় করার সুযোগ দেওয়া হলে তারা তাদের বেশিরভাগ খাবার নিজেরাই কিনতে পারবে। তারা তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে চান। মোবাইল আর্থিক পরিষেবা (ফাইন্যানশিয়াল সার্ভিস)-এর সুযোগ থাকলে তারা নিজে কেনাকাটার মাধ্যমে তাদের দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে।
সরকারী অংশীদারদের সাথে তার বৈঠকে কেলি ক্লেমেন্টস শরণার্থীদের ঘর তৈরিতে আরও টেকসই উপকরণ ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানান, যার মাধ্যমে আগুন ও প্রতিকূল আবহাওয়া ভালোভাবে প্রতিরোধ করা যায়। তিনি জোর দিয়ে বলেন, প্রতিবার তীব্র ঝড় কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর নতুন করে শরণার্থীদের ঘর তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণে যে ব্যয় হয় তা টেকসই নয়।
উল্লেখ্য, কক্সবাজার ও ভাসানচরের ৯২০,০০০ রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং স্থানীয় ৪ ৯৫,০০০ বাংলাদেশীসহ প্রায় ১.৪৭ মিলিয়ন মানুষকে সহায়তার জন্য মানবিক সংস্থাগুলো চলতি বছর ৮৭৬ মিলিয়ন ডলারের বেশি সাহায্যের আবেদন করেছে। জুন মাস পর্যন্ত জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যানের ২৪ শতাংশ অর্থায়ন মিলেছে। এ অবস্থায় বড় ধরণের মানবিক বিপর্যয় এড়াতে এই মুহূর্তে নির্ভরযোগ্য ও টেকসই তহবিল নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি প্রতিনিয়ত অনুরোধ করে চলেছে জাতিসংঘ।
পাঠকের মতামত
ভাই আম চাই না, গাছটা নিয়ে যান। ওখানে নিয়ে পরিবেস ঠিক করুন।
একই কথা একটি দেশের খেলোয়াড় বলা যায় সামান্য গোলকিপার আসলেও মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ পায়, আসে পাশের বাড়ির সোম চন্দ্র, দেব চন্দ্রও হাতে হাত মিলাতে সাহস পায় অথচ সেই মন্ত্রীরা বিদেশের বাড়িতে গেলে ওই দেশের পাতি মন্ত্রীরও সাক্ষাৎ পায় না,এটাই আমাদের দেশের মন্ত্রীদের সার্থকতা।
জাতীসংগ কি রোহিঙ্গা সম্যসা সমাধান ছায় ? নাকি আরেকটা ইসরাইল বানাতে ছায় ?? রোহিঙ্গা শরণার্থীর এক মাত্র সমাধান রাখাইনে কে জাতীসংগের আওতাদিন নিরাপদ অঞ্ছল ঘোষণা করে সেখানে UN Pace keeping Force মোতায়েন করে রোহিঙ্গাদের তাঁদের জন্ম ভুমি পিরিয়ে দেয়া।
যাক তাও ভালো, মিজ কেলি বাংলাদেশ সরকারের পিন্ডি চটকাতে আসে নাই। এখন ব্যাপার টা এমন হয়েছে যে সাদা চামড়ার মানুষ দেখলেই আমাদের দেশের কিছু ধান্ধাবাজ বদমায়েশ কুলাংগার জাতীয় মানুষ হামলে পড়ছে। যদিও এদের এই জাতীয় কোন ক্ষমতা নাই। এই বিষয় এ ছোট্ট একটা গল্প বলি। ঢাকা শহরে থাকে এই রকম এক পরিবার তার গ্রামের বাড়িতে গেছে। তো গ্রামের সব কৌতুহলি মানুষ এসেছে। তারা জিজ্ঞেস করল তারা ঢাকার কোথায় থাকে, তারা বলল গুলশানে থাকে। সবাই তো একেবারে টাশকি লেগে গেল। তারা আরও যোগ করল, তাদের বাড়িতে মন্ত্রী, বড় বড় সব মানুষ আসে, তারা তাদের পাত্তাই দেয় না। রাস্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী তাদের বাড়িতে চিনি ধার করে নিয়ে যায়। যাইহোক সেই গ্রামের আরেকজন আবিষ্কার করল তারা আসলে কড়াইল বস্তিতে থাকে। আমাদের দেশে এখন এই অবস্থা চলছে। আমেরিকা, জাতিসংঘ থেকে কেউ এলেই আমরা মনে করছি, এইতো পেয়ে গেছি।এই সরকারকে সে এখনই ফেলে দেবে আর আমি টুপুত করে যেয়ে ক্ষমতাই বসে যাব। জুনাইদ সাকির মত ছেলেরা দেখলাম এই সরকারের সহজ পয়হ বাতলে দিচ্ছে কিন্ত নিজেরাই সেই পথ চিনে না। কথায় আছে, যে যায় লংকায়, সেই নাকি হয় রাবণ।
মন্তব্য করুন
অনলাইন থেকে আরও পড়ুন
অনলাইন সর্বাধিক পঠিত
ভিসা নীতি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী/ ছেলের ভিসা বাতিল করলে করবে
এমপি বাহারের আবেদনে সাড়া মেলেনি/ ঘরের বউকে ঘরে তুলতে বললেন আদালত
এনডিটিভি'তে সাগরিকা সিনহা/ শেখ হাসিনার ধারণা, বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের চেষ্টা চলছে

জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]