বিশ্বজমিন
কাশির সিরাপে শিশুর মৃত্যু, ভারতে স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে গেল একটি ওষুধ কোম্পানি
মানবজমিন ডেস্ক
(২ বছর আগে) ২৩ মার্চ ২০২৩, বৃহস্পতিবার, ৫:৫০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:১০ অপরাহ্ন

উজবেকিস্তানে কাশির সিরাপ সেবন করে মারা গেছে ১৮টি শিশু। ওই সিরাপ ভারতের ম্যারিয়ন বায়োটেক তৈরি করেছিল। ফলে ওই কোম্পানিটির ওষুধ তৈরির লাইসেন্স স্থায়ীভাবে বাতিল করেছে ভারত। এর আগে জানুয়ারিতে ম্যারিয়ন বায়োটেকের তৈরি করা কাশির দুটি সিরাপের ব্যবহারের বিরুদ্ধে সতর্কতা দেয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বলা হয়, ওই সিরাপ নিম্নমানের। কিন্তু অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে ম্যারিয়ন বায়োটেক। কিন্তু উজবেকিস্তানে শিশু মৃত্যুর রিপোর্ট প্রকাশ পাওয়ার পর ওই কোম্পানির ওষুধ উৎপাদনে স্থগিতাদেশ দেয় ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
কোম্পানিটি উত্তর প্রদেশভিত্তিক। বুধবার সেখানকার রাজ্য কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করে, তারা ম্যারিয়ন বায়োটেকের ওষুধ তৈরির লাইসেন্স স্থায়ীভাবে বাতিল করেছে। হিন্দুস্তান টাইমসকে ওষুধ পরিদর্শক বৈভব বাবর বলেন, এখন থেকে নয়ডা শহরে অবস্থিত এই কোম্পানিটি কোনো ওষুধ তৈরি করতে পারবে না।
বিশ্বে জেনেরিক ওষুধের সবচেয়ে বড় রপ্তানিকারক ভারত। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ওষুধের চাহিদার বেশির ভাগই তারা সরবরাহ দিয়ে যাচ্ছে। কয়েক মাসে ওষুধের গুণগত মান নিয়ে নজরদারির মধ্যে আছে ভারতীয় অনেক কারখানা বা কর্তৃপক্ষ। এসব ওষুধ তৈরি নিয়ে ক্রমাগত উদ্বেগ জানিয়ে আসছেন বিশেষজ্ঞরা। ম্যারিয়ন বায়োটেকের বিরুদ্ধে সরকারের সর্বশেষ ব্যবস্থা নেয়ার আগে ডিসেম্বরে এই কোম্পানির কাশির সিরাপের ২২ রকম নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করে সরকার। তাতে দেখা যায় এই সিরাপে ভেজাল আছে এবং ত্রুটিপূর্ণ। ভারতের সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশনের পরিদর্শক আশীষ কুন্দাল অভিযোগে বলেছেন, এই ভেজাল ও ত্রুটিপূর্ণ ওষুধ জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
এ মাসের শুরুতে ভেজাল ওষুধ বিক্রির কারণে ম্যারিয়ন বায়োটেকের তিনজন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করে উত্তর প্রদেশ পুলিশ। বুধবার উত্তর প্রদেশের ড্রাগ লাইসেন্সিং অফিসার এসকে চৌরাশিয়া বলেন, তাদের ওষুধের বিষয়ে নোটিশ ইস্যু করা হয়েছিল। কিন্তু তার প্রেক্ষিতে কোনো জবাব দিতে ব্যর্থ হয়েছে ম্যারিয়ন বায়োটেক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিশ্বজুড়ে মেডিকেল এলার্ট জারির পর ম্যারিয়ন বায়োটেকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয় ভারতে। বিশেষ করে উজবেকিস্তানে এই কোম্পানির সিরাপ সেবন করে ১৮টি শিশু মারা যাওয়ার পর তা জোরালো হয়। উজবেকিস্তানে যে দুটি সিরাপ ব্যবহার করা হয়েছিল তা হলো ডক-১ ম্যাক্স এবং আমব্রোনল। উজবেকিস্তানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গুণগত মান বিষয়ক ল্যাবরেটরিতে এ দুটি ওষুধ পরীক্ষা করে কর্তৃপক্ষ। তাতে দেখা যায়, এই ওষুধে অগ্রহণযোগ্য মাত্রায় ডাইইথাইলিন গ্লাইকোল এবং ইথাইলিন গ্লাইকোল আছে। মানবদেহের জন্য এই উপাদানগুলো ক্ষতিকর। এমন কি এতে মৃত্যু পর্যন্তও হতে পারে। ওদিকে জানুয়ারিতে ম্যারিয়ন বায়োটেক বলে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যে কথা বলেছে তার সঙ্গে তারা একমত নয়।