অনলাইন
আট বছরের শিশুকন্যার মস্তিষ্কে হামলা কোভিডের, নয় দিন কোমায় থাকায় পর মৃত্যু
মানবজমিন ডিজিটাল
(৮ ঘন্টা আগে) ২৩ মে ২০২৫, শুক্রবার, ১২:৩৬ অপরাহ্ন
চীনের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন যে, আট বছরের এক শিশুকন্যার মস্তিষ্কে হামলা চালিয়েছিল মারণ ভাইরাস কোভিড। এর জেরে কোমায় চলে যায় সে। নয় দিন কোমায় থাকায় পর মৃত্যু হয় তার। একটি মেডিকেল জার্নালে বিষয়টি শেয়ার করে চিকিৎসকরা বলেছেন যে, মেয়েটি ভাইরাসের একটি বিরল, মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ভুগছিল। কোভিড মহামারী ছিল দুই বিশ্বযুদ্ধের পর মানব সভ্যতার সবথেকে বড় সংকট। একটানা দুই বছর মৃত্যুমিছিল দেখেছিল দুনিয়া। তখনই বোঝা গিয়েছিল কতটা ভয়ংকর এই ভাইরাস। চীনা চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, শুরুতে জ্বর হয়েছিল এই শিশুকন্যার। এরপর খিঁচুনি শুরু হয়। সঙ্গে মাথায় তীব্র যন্ত্রণা হচ্ছিল। কিছুদিন পর সারা গায়ে ফুসকুড়ি বেরতে শুরু করে। আরম্ভ হয় বমি। শিশুটি যে কোভিডে আক্রান্ত তা প্রথম দিকে আন্দাজ করতে পারেননি চিকিৎসকরা। পরীক্ষাও হয়নি। কিন্তু দ্রুত অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে। মুখ থেকে ফেনা বেরুতে শুরু করে শিশুর। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ শক্ত হয়ে ওঠে, শ্বাস-প্রশ্বাসের কষ্ট হয়। এরপর গুয়াংজু উইমেন অ্যান্ড চিলড্রেনস মেডিকেল সেন্টারে যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়। তাতে ধরা পড়ে মস্তিষ্কের একটি বিরল রোগ অ্যাকিউট নেক্রোটাইজিং এনসেফালোপ্যাথিতে ভুগছে শিশুকন্যা। নেপথ্যে মারণ ভাইরাস কোভিডের সংক্রমণ। হাসপাতালে নয় দিন কোমায় থাকার ‘ব্রেন ডেথ’ ঘোষণা করা হয় শিশুটির।
মেইল অনলাইনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গবেষণায় দেখা গেছে যে, কোভিড-১৯ মস্তিষ্কে পৌঁছাতে পারে এবং স্নায়বিক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এদিকে, গুয়াংজু উইমেন অ্যান্ড চিলড্রেনস মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসকরা বলেছেন যে, ‘দ্রুত স্নায়বিক অবক্ষয়’ ভোগা কোভিড-১৯ আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসার উপায় কী তা এখনও বোঝার চেষ্টা চলছে। শিশুকন্যার মল এবং রক্তে রোটাভাইরাসের চিহ্নও খুঁজে পাওয়া গেছে। কিন্তু ডাক্তাররা জার্নালে বলেছেন যে কোভিড-১৯ ভাইরাস স্নায়বিক জটিলতার একটি সম্ভাব্য কারণ। চিকিৎসকরা আরও যোগ করেছেন, 'থেরাপি সত্ত্বেও, রোগী অবশ ওষুধ ছাড়াই গভীর কোমায় ছিল।' অ্যাকিউট নেক্রোটাইজিং এনসেফালোপ্যাথি হলো এমন এক রোগ
যখন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কোভিড-১৯ বা ফ্লুর মতো সাধারণ ভাইরাসের প্রতি অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখায়। শরীরের অভ্যন্তরীণ প্রদাহ হয় এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যখন মস্তিষ্কে এটি ঘটে, তখন বিষাক্ত পদার্থ এবং ব্যাকটেরিয়া মস্তিষ্কে প্রবেশ করে এবং টিস্যুকে ক্ষতিগ্রস্থ করে। মস্তিষ্ক ধীরে ধীরে ফুলে ওঠে এবং কোষগুলো মারা যায়। ডাক্তাররা বলছেন যে, এটি একটি বিরল ঘটনা এবং চিকিৎসা সাহিত্যে মাত্র একশটি ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে।
সূত্র: wionews