ঢাকা, ৫ মে ২০২৫, সোমবার, ২২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৬ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

খেলা

ওয়াসিম আকরামের কোকেন আসক্তি ও প্রথম স্ত্রী’র হারিয়ে যাওয়ার গল্প

স্পোর্টস ডেস্ক
৫ মে ২০২৫, সোমবার
mzamin

ক্রীড়াঙ্গনে তারকাখ্যাতি অনেক বড় জিনিস। খেলোয়াড়রা বিশ্ব জুড়ে সমাদৃত হন নানা ধরনের মানুষের কাছে। এমনকি তাদের জীবনধারাও প্রভাব ফেলে ভক্তদের ওপর। তবে আলোকসজ্জার এই দুনিয়ার বাইরেও তাদের অনেকের একটি অন্ধকার জগৎ থাকে, যার ব্যাপারে অবগত থাকে না বাইরের কেউই। পাকিস্তানের কিংবদন্তি ওয়াসিম আকরামকে বলা হয় ‘সুলতান অব সুই’। ১৯৯২তে বিশ্বকাপ জেতা এই পেসার ওয়ানডে আর টেস্ট মিলিয়ে নিয়েছেন ৯০০টিরও বেশি উইকেট। ২০২২-এ সাংবাদিক গিডিওন হেইগের সঙ্গে যৌথভাবে নিজের আত্মজীবনী ‘সুলতান: আ মেমোয়ার’ প্রকাশ করেন আকরাম। বইয়ের ‘ব্যাটলিং মাই ডিমনস’ অংশে নিজের সেই অন্ধকার জীবনের কথা তুলে ধরেন ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই ফাস্ট বোলার।

খেলোয়াড়ি জীবনের পর ভয়াবহ মাদকদ্রব্য কোকেনের নেশায় জড়িয়ে যান ওয়াসিম আকরাম। এসবের শুরুটা হয়েছিল ইংল্যান্ডের এক পার্টিতে। সেবারই প্রথম, তবে অল্প অল্প করে আসক্তি বাড়তে থাকে।  এক সময় ব্যাপারটা এমন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছায় যে তার স্বাভাবিকভাবে চলাফেরার জন্যও এটির দরকার পড়তো বলে মনে করতেন তিনি। আকরাম যখন পুরোপুরিভাবে কোকেনের ওপর নির্ভরশীল, তখন হুমা মুফতি (প্রয়াত স্ত্রী) ম্যানচেস্টার ও লাহোরে প্রায়শই একা থাকতেন। হুমার ক্রিকেট নিয়ে বা মাঠের বাইরের খ্যাতি নিয়ে কখনোই আগ্রহ ছিল না। আকরামের সন্দেহ হতো, স্বামীর ওপর ক্রিকেটের প্রভাব দেখেই হয়তো তাদের দুই সন্তান তাহমুর ও আকবরকে সবসময় খেলা থেকে দূরে রাখতেন হুমা।

 একপর্যায়ে আকরামকে ধরে ফেলেন হুমা, স্বামীর ওয়ালেটে থাকা কোকেনের একটি প্যাকেট খুঁজে পান তিনি। সে সময় হুমা বলেন, ‘আমি জানি তুমি মাদক নিচ্ছো, তোমার সাহায্যের দরকার।’ খোদ আকরামও রাজি ছিলেন, কেননা কোকেনের পরিমাণ বাড়তে বাড়তে ততদিনে দুই গ্রামে পৌঁছে গিয়েছিল। তখন একটি পুনর্বাসন প্রোগ্রামে ভর্তি হতে রাজি হন আকরাম। তবে লাহোরের সেই রিহ্যাবটি খুব একটা জাতের ছিল না। ডাক্তারাও খুব সুবিধার ছিল না। প্রতি সপ্তাহে চার্জ করা হতো প্রায় ২ লাখ রুপি। সেখানে এক মাস থাকাকালীন স্ত্রী-সন্তানদের একবারের জন্যও দেখতে পাননি আকরাম। একপর্যায়ে তারা দেখা করতে এলে রাগের সুরেই সেখান থেকে বের হওয়ার কথা জানান তিনি। তবে ডাক্তার নিজের খেলাটা খেলেন, হুমাকে বলেন, ‘আমি তো আগেই বলেছিলাম যে, সে এমনই করবে।’ এর আরও সাত সপ্তাহ পর যখন হুমা বুঝতে পারলেন যে, আকরামই ঠিক ছিলেন- তখন বের করে নিয়ে আসেন তার স্বামীকে। একপর্যায়ে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ (আইপিএল) থেকে কলকাতা নাইট রাইডার্সের পক্ষ থেকে আকর্ষণীয় এক চাকরির প্রস্তাব পান আকরাম। তবে তখনো কোকেনের মোহ থেকে সম্পূর্ণভাবে বের হতে পারেননি তিনি। একপর্যায়ে বিবাহবিচ্ছেদের কথাও ভাবেন। শেষমেশ ২০০৯-এ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে গিয়ে হুমার নজরদারির বাইরে গিয়ে ফের কোকেন নেয়া শুরু করেন আকরাম। অন্যদিকে তাকে ভালো করে তুলতে গিয়ে একপর্যায়ে নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়েন হুমা। সংক্রামক এন্ডোকার্ডাইটিসে আক্রান্ত হয়ে ইহলোক ত্যাগ করেন তিনি। এর কয়েক বছর পর দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন ওয়াসিম আকরাম। অস্ট্রেলিয়ার শানিয়ারা থম্পসনের সেই ঘরে একটি কন্যাসন্তানও আছে।

 

খেলা থেকে আরও পড়ুন

খেলা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status