ঢাকা, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৬ হিঃ

অনলাইন

নেপথ্যের কূটনীতি কি মার্কিন-চীন সম্পর্ককে ভয়ংকর শুল্ক যুদ্ধের হাত থেকে উদ্ধার করতে পারবে?

মানবজমিন ডিজিটাল

(১ সপ্তাহ আগে) ১০ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৫:১৬ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ২:৪০ অপরাহ্ন

mzamin

সময় যত এগোচ্ছে বেইজিং এবং ওয়াশিংটন একে অপরের বিরুদ্ধে আরো দৃঢ়ভাবে শুল্ক যুদ্ধে লিপ্ত হচ্ছে।  দুই পরাক্রমী দেশের  দুই নেতা কীভাবে আলোচনার টেবিলে বসবেন সেটাই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। পর্যবেক্ষকদের মতে, এটি এমন একটি মুহূর্ত যেখানে  কূটনৈতিক   চ্যানেলগুলো নেপথ্যে একটি বিশাল ভূমিকা নিতে পারে। কেউ কেউ পরামর্শ দিচ্ছেন যে এই ধরনের চ্যানেলগুলোই  "একমাত্র উপায় হতে পারে"। বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প চীনা আমদানির উপর আবারও শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছেন, সবমিলিয়ে চীনের ওপর মোট  শুল্কের  পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১২৫ শতাংশ। এদিকে  ট্রাম্প অন্যান্য বেশিরভাগ দেশের উপর শুল্ক আরোপের ক্ষেত্রে  ৯০ দিনের স্থগিতাদেশ দিয়েছেন। এই বৈষম্য দুটি বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে দ্বন্দ্বকে আরও গভীর করে তুলেছে। ঘোষণার পর সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময়, ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে  চীনা পণ্যের উপর আর বেশি শুল্ক বাড়ানোর কথা তিনি ভাবছেন না।

 ট্রাম্প বলেছেন - '"চীন একটি চুক্তি করতে চায়। তবে তারা জানে না কিভাবে এটি করতে হবে। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-কে আমি খুব ভালো করে চিনি। আমি জানি তিনি ঠিক কিছু একটা উপায় বার করবেন।  চীন এখন সেই নিয়েই কাজ করছে। 'বুধবারের শুরুতে, চীন মার্কিন আমদানির উপর ৮৪ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধি করেছে।  বৃহস্পতিবার থেকে এই শুল্ক কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। বেইজিং প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে তারা দৃঢ়ভাবে জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করবে এবং শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবে। ওয়াশিংটনে স্টিমসন সেন্টারের চীন প্রোগ্রামের পরিচালক সান ইউনের মতে, 'এখন দুই নেতার মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ করা কঠিন হবে। কারণ কোনো এক পক্ষকে প্রথম পদক্ষেপ নিতে হবে । 

কূটনৈতিক ব্যাকচ্যানেলগুলো এক্ষেত্রে  সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।  কিন্তু এই ক্ষেত্রে, কেউ শি'র পক্ষে কথা বলতে পারবে না, এমনকি ট্রাম্পের পক্ষেও  না। এটাই হবে চ্যালেঞ্জ। আমরা সম্ভাব্যভাবে বাণিজ্য যুদ্ধের তীব্রতা এবং আরও দুর্ভাগ্যজনকভাবে অন্যান্য ক্ষেত্রেও এর প্রভাব দেখতে পাব। যদি শীঘ্রই উত্তেজনা হ্রাস না করা হয় তবে এটিই হবে সবচেয়ে গুরুতর ঝুঁকি।' শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ডালি ইয়াং পরামর্শ দিয়েছেন যে ব্যাকচ্যানেলগুলো  সম্ভাব্যভাবে উভয় পক্ষকে শান্ত হতে সাহায্য করতে পারে। কিন্তু তিনি আরও উল্লেখ করেছেন যে ট্রাম্পের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের ধরণ দেখে বোঝা যাচ্ছে যে এই ধরনের ব্যাকচ্যানেলের জন্য সীমিত জায়গা থাকবে।

 ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর থেকে, বিশ্লেষকরা ব্যাকচ্যানেল কূটনীতির গুরুত্ব তুলে ধরেছেন।  কারণ প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের জন্য তিনি বেশ কয়েকজন চীন-পন্থীকে বেছে নিয়েছেন। এক পর্যায়ে, টেসলা কর্তা ইলন  মাস্ক এবং ব্ল্যাকস্টোনের প্রধান নির্বাহী স্টিফেন শোয়ার্জম্যানের  মতো কোটিপতিদের এই তালিকায় বিবেচনা করা হয়েছিল। দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের মতে, মাস্ক গত সপ্তাহে আরোপিত তথাকথিত পারস্পরিক শুল্ক প্রত্যাহারের জন্য ট্রাম্পের কাছে সরাসরি আবেদন করেছিলেন, যদিও তা ব্যর্থ হয়। বাজার যখন অস্থিরতার মধ্যে ছিল, তখন মঙ্গলবার বেইজিংয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় যাকে ব্যাকচ্যানেল কূটনীতির সম্প্রসারণ হিসেবে দেখা যেতে পারে। 

ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের চেয়ারম্যান এমিরিটাস জন থর্নটন - যিনি জো বাইডেন প্রশাসনের প্রথম দিকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন - তাকে চীনের ভাইস-প্রিমিয়ার হি লাইফেং অভ্যর্থনা জানান। বৈঠকের পর একটি চীনা বিবৃতি  অনুসারে, উভয়পক্ষ মার্কিন-চীন অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক, সেইসাথে সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে মতামত বিনিময় করেছেন।  থর্নটন উল্লেখ করেছেন যে মার্কিন-চীন সম্পর্ক "অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ"। সেইসঙ্গে থর্নটন বলেছেন  যে তিনি দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের স্থিতিশীলতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা পালন করে যাবেন। সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির লি কুয়ান ইউ স্কুল অফ পাবলিক পলিসির ডিন ড্যানি কোয়াহ মনে করেন , '  বিশেষ করে যখন পরিস্থিতি অর্থনৈতিকভাবে সত্যিই খারাপের দিকে যাবে তখন হয়তো   ট্রাম্প এবং শি বসে কথা বলতে চাইবেন। তবে আপাতত এখন সেরকম কোনো সম্ভাবনা নেই। ব্যাকচ্যানেলই হয়তো একমাত্র উপায়। কিন্তু যদি তারা সেখানে একমত  হয় , তবুও পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেবে তা অনুধাবন করা কঠিন।  '

সূত্র : সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট

অনলাইন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

অনলাইন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status