অনলাইন
ওষুধ আমদানিতে ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের ইঙ্গিত
চাপের মুখে পড়বেন ভারতীয় ওষুধ প্রস্তুতকারকরা
মানবজমিন ডিজিটাল
(১ সপ্তাহ আগে) ১০ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ২:২২ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:১৮ পূর্বাহ্ন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন তার দেশ শিগগিরই ওষুধ আমদানির ওপর ‘বড়’ শুল্ক আরোপ করবে। ন্যাশনাল রিপাবলিকান কংগ্রেসনাল কমিটি আয়োজিত অনুষ্ঠানে এক বক্তৃতায় ট্রাম্প বলেন, ‘এই পদক্ষেপের লক্ষ্য হলো ওষুধ কোম্পানিগুলোকে তাদের কার্যক্রম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তর করতে উৎসাহিত করা।’
পূর্বে ট্রাম্প প্রশাসন তার পারস্পরিক শুল্কনীতির আওতা থেকে ওষুধ ও সেমিকন্ডাক্টরকে অব্যাহতি দিয়েছিল। গত মঙ্গলবার হাউস রিপাবলিকানদের জন্য একটি তহবিল সংগ্রহ অনুষ্ঠানে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা খুব শিগগিরই ওষুধের ওপর একটি বড় শুল্ক ঘোষণা করতে যাচ্ছি। একবার আমরা এটা করতে পারলে ওষুধ কোম্পানিগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা করতে আগ্রহী হবে। সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো আমরাই বড় বাজার।’
ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরে দেশীয় ওষুধ উৎপাদনের অভাবের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে আসছেন। তার প্রশাসন ইঙ্গিত দিয়েছে যে, তথাকথিত ধারা ২৩২-এর ক্ষমতা ব্যবহার করে ওষুধের ওপর শুল্ক আরোপ করবে।
ট্রাম্প ২৪ মার্চ বলেছিলেন, ‘আমরা দেশে আর ওষুধপত্র তৈরি করি না। যদি আমরা হঠাৎ করে যুদ্ধ বা অন্য কিছু বড় সমস্যার মুখে পড়ি তাহলে আমাদের ইস্পাতের প্রয়োজন, আমাদের ওষুধপত্রের প্রয়োজন।’
ট্রাম্প ইতিমধ্যেই ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম ও অটোমোবাইলের ওপর ২৫ শতাংশ সেক্টরাল শুল্ক আরোপ করেছেন। এই সঙ্গে তামার ওপরও এই শুল্ক আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। ওষুধের পাশাপাশি, তার প্রশাসন কাঠ এবং সেমিকন্ডাক্টর চিপে অতিরিক্ত সেক্টরাল শুল্ক আরোপের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ট্রাম্প ওষুধ আমদানিতে নতুন শুল্ক ঘোষণা করলে ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ওষুধের অন্যতম বৃহত্তম সরবরাহকারী উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত হতে পারে।
২০২৪ সালে ভারতের ওষুধ রপ্তানির মূল্য ছিল ১২.৭২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা এটিকে দেশের বৃহত্তম শিল্প রপ্তানি খাত করে তুলেছে। মার্কিন স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় ভারতীয় ওষুধ কোম্পানিগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ২০২২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি দশটি প্রেসক্রিপশনের মধ্যে চারটিতে তাদের অবদান ছিল।
প্রতিবেদন অনুসারে, ভারতীয় কোম্পানিগুলোর ওষুধ ২০২২ সালে মার্কিন স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় ২১৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০১৩ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ১.৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার সাশ্রয় করেছে। আগামী পাঁচ বছরে ভারতের জেনেরিক ওষুধগুলো অতিরিক্ত ১.৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার সাশ্রয় করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, ওষুধ আমদানির ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপের ফলে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাবে এবং ভারতীয় ওষুধ প্রস্তুতকারকরা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বেন। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৬শতাংশ পারস্পরিক শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে। সূত্র: ইকোনোমিক টাইমস