ভারত
২৩ বছর পর দাউদ ইব্রাহিমের দোকান হাতে পেলেন মুম্বইয়ের প্রৌঢ়
মানবজমিন ডিজিটাল
(১ সপ্তাহ আগে) ৫ জানুয়ারি ২০২৫, রবিবার, ৪:১৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:১০ পূর্বাহ্ন
ভারতের মুম্বই শহরের নাপাদা এলাকায় গ্যাংস্টার দাউদ ইব্রাহিমের একটি দোকান ছিল। ২০০১ সালে ১৪৪ স্কয়ার ফুটের ওই দোকানের নিলামে অংশ নেন উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা হেমন্ত জৈন। তখন তাঁর বয়স ছিল ৩৪ বছর। হেমন্ত বলেন, “খবরের কাগজ পড়ে জানতে পারি, দাউদের সম্পত্তি কিনতে ভাল ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না।” তখনই তিনি নিলামে দোকানের একটি অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। প্রথমবার দেখেই তাঁর দোকানকে কেবল দোকান মনে হয়নি। মনে হয়েছিল, এতে দাউদের ছায়া রয়েছে। কিন্তু তারপর?
ছোট্ট একফালি দোকান হাতে পেতে, তাঁর সময় লেগে গেল ২৩ বছর। ২০০১ সালে ইনকাম ট্যাক্স একটি নিলাম করে, তাতে হেমন্ত ওই দোকানটি কেনেন। জয়রাজ ভাই স্ট্রিটের ওই দোকানটি তিনি দু’ লক্ষ টাকার বিনিময়ে কিনে ফেলেন। কিন্তু তারপরই শুরু হয় আইনি ঝামেলা। একের পর এক সমস্যা, যার জট কাটতে সময় লেগে যায় বহুদিন। হেমন্ত বলেন, “সম্পত্তি কেনার পর আধিকারিকরা আমাকে ভুল বোঝান।
তাঁরা বলেন, কেন্দ্রের অধীনস্থ এই সম্পত্তি হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। পরে জানতে পারি, এরকম কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই।” হেমন্ত বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর অফিসে অনেক চিঠি লিখেছি। কখনও কখনও জবাব পেয়েছি। কিন্তু, দোকানের রেজিস্ট্রেশন করাতে পারিনি। এর প্রধান কারণ, আয়কর দফতর থেকে দোকানের আসল ফাইল নিখোঁজ হওয়া।” ২০১৭ সালে তাঁকে বলা হয়, সম্পত্তির ফাইল উধাও হয়ে গিয়েছে। ফলে সম্পত্তির বর্তমান বাজারমূল্য হিসেবে তাঁকে স্ট্যাম্প ডিউটি দিতে হবে। আর তা ২৩ লক্ষ টাকা। হেমন্ত বলেন, “যেহেতু নিলাম থেকে সম্পত্তি কিনেছিলাম। ফলে স্ট্যাম্প ডিউটি সম্পত্তির বাজারমূল্য হিসেবে ধরা যায় না।
রেজিস্ট্রার অফিসের সঙ্গে বছরের পর বছর ধরে যোগাযোগ রেখে চলেছি। কিন্তু, কোনও জবাব পাইনি।” সম্পত্তি নিজের নামে করতে আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি। আদালতের নির্দেশে ২০২৪ সালের ১৯ ডিসেম্বর সম্পত্তির রেজিস্ট্রেশন হয়েছে। স্ট্যাম্প ডিউটি এবং জরিমানা হিসেবে দেড় লক্ষ টাকা দিতে হয়েছে। দীর্ঘদিনের আইনি লড়াইয়ে তাঁর নামে দোকানটি হয়েছে। এই দীর্ঘ লড়াইয়ের মাঝে দেশে তিনবার প্রধানমন্ত্রী বদলে গিয়েছেন। বহু জটিলতা পেরিয়ে ২০২৪-এর ডিসেম্বরে শেষমেশ সম্পত্তি তাঁর নামে হয় আইনত।তবে জয় এখনও সম্পূর্ণ নয়। দোকানের দখল কি নিতে পারবেন? হেমন্ত নিজেই বলছেন, তাঁকে আরও একটা লড়াই লড়তে হবে। কারণ, ওই দোকান দখল করে রেখেছে দাউদের গ্যাংয়ের ছেলেরা। শেষে বলতে হয় , দাউদ ইব্রাহিমের নাম শুনলে যেখানে সকলে ভয়ে কাঁপতে থাকেন, সেখানে এক প্রৌঢ় দাউদের সম্পত্তি কেনার জন্য লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন। তাও ২৩ বছর ধরে চোখে চোখ রেখে।
সূত্র: হিন্দুস্থান টাইমস