অনলাইন
অশান্তির আগুনে জ্বলছে নিউ ক্যালিডোনিয়া, ফ্রান্সের অধীনস্থ এই দেশে জারি জরুরি অবস্থা
মানবজমিন ডিজিটাল
(১ বছর আগে) ২১ মে ২০২৪, মঙ্গলবার, ১১:০২ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:৪১ অপরাহ্ন

ফ্রান্সের অধীনে থাকা দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপ নিউ ক্যালিডোনিয়ায় এখন অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি। সম্প্রতি নিউ ক্যালিডোনিয়ার সংসদে একটি নতুন বিল পাশ হয়েছে। সেই বিলকে কেন্দ্র করেই ঝামেলার সূত্রপাত। বিলে বলা হয়েছে, যে সব ফরাসি নাগরিক ১০ বছর কিংবা তার চেয়ে বেশি সময় ধরে নিউ ক্যালিডোনিয়ায় বসবাস করছেন, তারা ভোটাধিকার পাবেন। আর এই নিয়েই আপত্তি আদি বাসিন্দাদের। ক্রমে বিক্ষোভের আঁচ ছড়িয়ে পড়তে থাকে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, তারা নিউ ক্যালিডোনিয়ার পুরনো বাসিন্দা। মাত্র ১০ বছর ক্যালিডোনিয়াতে থাকলে, কেন ভোটাধিকার দেওয়া হবে? এই প্রশ্ন তুলে পথে নামেন বিক্ষোভকারীরা। আন্দোলনকারীদের রুখতে পথে নামে সশস্ত্র ফরাসি পুলিশ বাহিনী ও আধাসেনার যৌথ বাহিনী। নিউ ক্যালিডোনিয়ায় এখনও ফরাসি শাসন চলছে। অস্টেলিয়ার পূর্বে অবস্থিত এই দ্বীপপুঞ্জের জনসংখ্যা প্রায় তিন লাখ। তাদের মধ্যে ৪৪ শতাংশই সেখানকার আদিবাসী কনক সম্প্রদায়ের মানুষ। ৩৪ শতাংশ ইউরোপীয় থাকেন সেখানে। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই ফরাসি।
১৭৭৪ সালে অস্টেলিয়ার পূর্বে অবস্থিত এই দ্বীপ আবিষ্কার করেন বৃটিশ নাবিক জেমস কুক। এখানকার ভূপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে নিজের মাতৃভূমির মিল পেয়ে তিনি এর নাম রাখেন ‘নিউ ক্যালিডোনিয়া’। ১৮৫৩ সালে তা পাকাপাকিভাবে ফ্রান্সের হাতে চলে যায়। নিউ ক্যালিডোনিয়ার রাজধানীর নাম নৌমেয়া। ১৮৫৩ সালে তৃতীয় নেপোলিয়ান অধিকার করেন নিউ ক্যালিডোনিয়া দ্বীপপুঞ্জ। ফরাসি শাসকেরা মূলত এই দ্বীপপুঞ্জকে জেল হিসাবে ব্যবহার করতেন।
১৯৪৬ সাল থেকে নিউ ক্যালিডোনিয়ায় স্বায়ত্বশাসন স্থাপন করে ফ্রান্স। ফরাসি প্রেসিডেন্টই এই দ্বীপের প্রেসিডেন্ট। কিন্তু এখন ফ্রান্সের অধীনস্থ এই দেশে জারি হয়েছে জরুরি অবস্থা। পথে নেমে এসে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা। এখনও পর্যন্ত এই সংঘর্ষে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত শতাধিক। নিহতদের মধ্যে দুজন ফরাসি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। দ্বীপের বাসিন্দাদের কাছে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী গেব্রিয়াল আতাল। নিউ ক্যালিডোনিয়ায় আন্তর্জাতিক বিমান ওঠানামার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার কোনও লক্ষণই নেই।
সূত্র : wionews