অনলাইন
বদলাচ্ছে সমীকরণ: ভূ-রাজনীতিতে নতুন আকার নিচ্ছে রাশিয়া-দক্ষিণ কোরিয়া সম্পর্ক
মানবজমিন ডিজিটাল
(৭ মাস আগে) ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ৯:২৪ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৩:৪৫ অপরাহ্ন
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পরিপ্রেক্ষিতে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক ল্যান্ডস্কেপে একাধিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। যদিও তাৎক্ষণিক প্রভাব ইউরোপে সবচেয়ে তীব্রভাবে অনুভূত হয়েছিল, তবে এই যুদ্ধের আঁচ লেগেছে আফ্রিকার মতো দূরবর্তী অঞ্চলেও। যেখানে ক্রেমলিন বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালানোর মাধ্যমে সক্রিয়ভাবে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন যুগিয়ে চলেছে। রাশিয়ার এই কর্মকাণ্ড একইসঙ্গে উদ্বেগ এবং জল্পনার জন্ম দিয়েছে যা বৈশ্বিক জোট এবং কূটনৈতিক সম্পর্ককে পুনর্মূল্যায়নের দিকে পরিচালিত করে। এই পরিবর্তনশীল গতিশীলতার মধ্যে একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন হলো রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়ার সম্পর্কের উষ্ণতা এবং সেইসঙ্গে মস্কো ও সিউলের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতি।
রাশিয়ার ক্রিয়াকলাপের পিছনে কারণগুলো বহুমুখী। কোথাও প্রয়োজনীয়তার, কোথাও কৌশল, কোথাও বা তার প্রতিপক্ষ ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় সমর্থনকে অস্থিতিশীল করার ইচ্ছা। এই লক্ষ্যে একটি উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন হলো রাশিয়ার প্রতিরক্ষা শিল্প খাতে আউটসোর্সিং এর উপর অংশীদারিত্ব গঠনের কৌশলগত পদ্ধতি। এটি এমন একটি কৌশল যা শুধুমাত্র গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলগুলোতে রাশিয়ার কূটনৈতিক লিভারেজ এবং প্রভাব বাড়ায় না বরং শ্রমের ঘাটতি মেটাতে ও গোলাবারুদ-ক্ষেপণাস্ত্রের উৎপাদন খরচ কমানোর জন্য একটি সমাধান হিসেবে কাজ করে। অংশীদারিত্বের গতিশীলতার এই ক্রমবর্ধমান প্রেক্ষাপটের বিরুদ্ধে, কিছু বিশ্লেষক কোরীয় উপদ্বীপের চারপাশে একটি কৌশলগত বিভাজনের সম্ভাব্য অস্থিতিশীল প্রভাবের বিরুদ্ধে সতর্ক করতে শুরু করেছেন। যেটি চীন-উত্তর কোরিয়া-রাশিয়া জোটের বিরুদ্ধে মার্কিন-জাপান-দক্ষিণ কোরিয়া জোটকে দাঁড় করিয়ে বিশ্বব্যাপী ভূ-রাজনীতিকে প্রভাবিত করতে পারে। ঐতিহ্যগত জোটের এই অবনতি আর্কটিকসহ পূর্ব এশিয়া থেকে বহুদূরের অঞ্চলে সম্ভাব্যভাবে ভূ-রাজনৈতিক গতিশীলতাকে নতুন আকার দিতে পারে। যেখানে দক্ষিণ কোরিয়া এবং রাশিয়া সম্প্রতি শিপিং এবং জ্বালানিসহ বেশ কয়েকটি খাতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে। এই উন্নয়নগুলোর কৌশলগত প্রভাবগুলো সাবধানতার সাথে বিবেচনার দাবি রাখে কারণ তারা আর্কটিক ল্যান্ডস্কেপকে নতুন আকার দেয়ার এবং কোরিয়ান উপদ্বীপের বাইরে আন্তর্জাতিক স্বার্থকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা রাখে।
ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকে রাশিয়া-দক্ষিণ কোরিয়া সম্পর্ক: একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়ার সম্পর্ক নিম্নগামী। রাশিয়ার বিরুদ্ধে মার্কিন নেতৃত্বাধীন নিষেধাজ্ঞাকে দক্ষিণ কোরিয়ার সমর্থন, ফলস্বরূপ উন্নত সেমিকন্ডাক্টর বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা ক্রেমলিনকে সিওলের ‘অবান্ধব’ দেশের তালিকায় যুক্ত করেছে। গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে একজন দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিককে গ্রেপ্তারের সাথে পরিস্থিতি আরো খারাপ জায়গায় পৌঁছেছে। পরিস্থিতি আরও জটিল হয় যখন ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে দক্ষিণ কোরিয়া নরম অবস্থান নেয়। দেশটি রাশিয়ার তীব্র বিরোধিতার মুখোমুখি হয়েছিল।
এই ধরনের পদক্ষেপের জন্য প্রেসিডেন্ট ইওলকে সতর্কবার্তা পাঠিয়ে মস্কো জানিয়েছিল সিউল সরাসরি সংঘর্ষে জড়িত হওয়ার ঝুঁকি নিচ্ছে। যখন রাশিয়ান ভাষ্যকাররা দক্ষিণ কোরিয়ার সার্বভৌমত্ব এবং তার সিদ্ধান্ত গ্রহণ সম্পর্কে সংশয় প্রকাশ করতে শুরু করেছিলেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, মস্কো পিয়ংইয়ংয়ের সাথে তার সামরিক সহযোগিতা পুনরুজ্জীবিত করেছে। অত্যাধুনিক অস্ত্র সম্বলিত সামরিক সহায়তা এবং প্রযুক্তিগত সরঞ্জামের সন্দেহজনক আদান-প্রদান দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানকে সতর্ক করেছে। ফলশ্রুতিতে উভয় দেশই এখন তাদের নিজ নিজ স্বার্থে নিমগ্ন এবং কেউই কূটনৈতিক সমঝোতার জন্য প্রকৃত ইচ্ছা প্রদর্শন করছে না।
দক্ষিণ কোরিয়ার আর্কটিক কৌশল: রাশিয়ার কী ভূমিকা?
প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তার বিষয়গুলোকে বাদ দিলে দক্ষিণ কোরিয়ার আর্কটিক কৌশল অর্থনৈতিক সুযোগগুলো দখল করার এবং এই অঞ্চলের ভবিষ্যত গঠনে নিজেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তার উচ্চাভিলাষী দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রতিফলিত করে। কোরিয়া প্রজাতন্ত্র অর্থনৈতিক সহযোগিতা, আর্কটিক কাউন্সিল এবং ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও) এর মতো বহুপাক্ষিক এবং আন্তর্জাতিক ফোরামের মধ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় গঠনমূলক অংশগ্রহনের মাধ্যমে এবং আর্কটিক সম্পর্কিত বিভিন্ন পরিবেশগত সমস্যা সমাধানের জন্য বৈজ্ঞানিক/প্রযুক্তিগত অবদানের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে একটি বিস্তৃত রূপরেখা দিয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, দক্ষিণ কোরিয়ার আর্কটিক কৌশলটি রাশিয়ার সাথে সহযোগিতার মাধ্যমে জড়িত। এই অংশীদারিত্ব কাকতালীয়ভাবে পরিবহন এবং লজিস্টিক উন্নয়ন থেকে হাইড্রোকার্বন নিষ্কাশন এবং জাহাজ নির্মাণের প্রচেষ্টা পর্যন্ত বিস্তৃত। তাদের আর্কটিক আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে উত্তর সাগর রুটের (এনএসআর) ব্যবহার এবং পরিবহন ও সরবরাহ ব্যবস্থার অগ্রগতি। পূর্ব এশিয়া থেকে ইউরোপে শিপিং খরচ কমানোর জন্য এনএসআরকে একটি লাভজনক উপায় হিসেবে দেখে। সিউল সক্রিয়ভাবে আর্কটিক উপকূলীয় অঞ্চলে সামুদ্রিক নেভিগেশন প্রসারিত করার চেষ্টা করেছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, কোরিয়ার জাতীয় লজিস্টিক মাস্টার প্ল্যান ২০১৬-২০২৫ তে রাশিয়ার সাথে সহযোগিতার উপর জোর দেয়া হয়েছে, বিশেষ করে ইয়ামাল দ্বীপ থেকে অপরিশোধিত তেল রপ্তানিতে জড়িত কোরিয়ান কোম্পানিগুলিকে সহযোগিতা করার জন্য। এই সহযোগিতার একটি উদাহরণ হলো ইয়ামাল এলএনজি প্রকল্প যেখানে Novatek এবং KOGAS - ২০১৮ সালে একটি সমঝোতা স্মারক নিশ্চিত করেছে যা এই প্রকল্পে দক্ষিণ কোরিয়ার সম্ভাব্য সম্পৃক্ততার ইঙ্গিত দেয়৷ মধ্যপ্রাচ্যের অপরিশোধিত তেলের পরিবর্তে দক্ষিণ কোরিয়া রাশিয়ার আর্কটিক থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) সরবরাহ বাড়াতে গভীরভাবে আগ্রহী। এক্ষেত্রে মস্কোর ইয়ামাল এলএনজি-র সাথে দক্ষিণ কোরিয়ার সমন্বয় একটি প্রধান উদাহরণ হিসাবে কাজ করে যা আর্কটিক সংস্থানগুলোতে অ্যাক্সেসের বিনিময়ে হাইড্রোকার্বন উৎপাদন এবং পরিবহনে উচ্চ প্রযুক্তির দক্ষতা প্রদান করে। এই উদ্দেশ্যগুলো অর্জনের জন্য, দক্ষিণ কোরিয়ার উদার এবং রক্ষণশীল সরকারগুলো ধারাবাহিকভাবে তেল ও গ্যাস পরিবহনের জন্য গ্যাস পরিবহন কন্টেইনার এবং বিভিন্ন জাহাজ তৈরিতে সহযোগিতা জোরদার করার চেষ্টা করেছে। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, রাশিয়া এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে অংশীদারিত্ব জাহাজ নির্মাণ সেক্টরে প্রসারিত যেখানে উভয় পক্ষই শাটল ট্যাঙ্কার নির্মাণকে উন্নত করার জন্য একে অপরের শক্তিকে কাজে লাগাতে চায়।এলএনজি ট্যাঙ্কার নির্মাণে দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষতা রাশিয়ার শক্তিশালী ইঞ্জিনিয়ারিং এর পরিপূরক হিসেবে কাজ করে যা শাটল ট্যাঙ্কার ডিজাইন এবং নির্মাণের সাথে যুক্ত। স্যামসাং হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ এবং ডাইউ, দক্ষিণ কোরিয়ার দুটি প্রধান সংস্থা এই সহযোগিতায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই ধরনের প্রচেষ্টা দক্ষিণ কোরিয়ার উৎপাদন উৎকর্ষের সাথে রাশিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং দক্ষতার সমন্বয় থেকে প্রাপ্ত পারস্পরিক সুবিধাগুলিকে তুলে ধরে।
ভবিষ্যত কী বলছে?
আর্কটিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে বহুলাংশে একে ওপরের পরিপূরক প্রকৃতির কারণে, মস্কো এবং সিউলের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতি এই অঞ্চলে তার উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যগুলো পূরণ করার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।যেহেতু রাশিয়া উত্তর কোরিয়ার সাথে ক্রমবর্ধমানভাবে সম্পৃক্ত হচ্ছে, দক্ষিণ কোরিয়া আর্কটিকের সহযোগিতামূলক উদ্যোগ বজায় রাখতে বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। বিশেষ করে, আর্কটিক থেকে এলএনজি সরবরাহের মতো জ্বালানি সহযোগিতায় বাধা, মধ্যপ্রাচ্যের অপরিশোধিত পণ্যের উপর নির্ভরতা দক্ষিণ কোরিয়ার দীর্ঘমেয়াদী শক্তি নিরাপত্তা কৌশলকে প্রভাবিত করতে পারে। এর প্রধান জাহাজ নির্মাতারা সমস্যার মুখে পড়তে পারেন। রাশিয়ার জন্যও, আর্কটিকের একটি শক্তিশালী অংশীদার হিসাবে দক্ষিণ কোরিয়া এবং প্রকৃতপক্ষে জাপানের ক্ষতি বিশ্ব শক্তির বাজারে তার আর্কটিক সম্পদ সংগ্রহের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। এর অর্থ কেবল সম্ভাব্য রাজস্বের ক্ষতি নয় বরং এর অর্থ এই অঞ্চলের বিশাল গ্যাস সম্পদের নিষ্কাশনের জন্য প্রয়োজনীয় অংশীদারের ক্ষতি।
রাশিয়া এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে আর্কটিক সহযোগিতা পুনরুজ্জীবিত হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। একসময় দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য আর্কটিক বিষয়গুলোর সাথে জড়িত একটি মূল প্ল্যাটফর্ম 'আর্কটিক কাউন্সিল কিছু কাজ পুনরুদ্ধার করা সত্ত্বেও, এখনও অনেকাংশে অকার্যকর। নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক শূন্যতার সম্মুখীন সিউল তার আঞ্চলিক স্বার্থ সুরক্ষিত করার লক্ষ্যে আর্কটিক শাসনে অংশগ্রহণের বিকল্প উপায় খুঁজতে পারে। জাপান এবং সিঙ্গাপুরের সাথে সারিবদ্ধ হয়ে, দক্ষিণ কোরিয়া আর্কটিক গভর্নেন্স ল্যান্ডস্কেপের মধ্যে একটি এশিয়ান ব্লক গঠনের লক্ষ্য রাখতে পারে যার সাথে এর জাতীয় স্বার্থ জড়িত। এটি পরিপূরক করার জন্য, সিউল জাতিসংঘ এবং আইএমও-এর মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির সাথে তার অংশগ্রহণ এবং সম্পৃক্ততা বাড়ানোর চেষ্টা করতে পারে। বহুপাক্ষিক প্ল্যাটফর্মের সুবিধার মাধ্যমে, দক্ষিণ কোরিয়া আর্কটিক শাসন আলোচনায় তার সুর চড়াতে পারে।
আঞ্চলিক এশীয় অংশীদারদের সাথে সহযোগিতার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সাথে সক্রিয়তা রাশিয়া এবং পশ্চিম আর্কটিক অঞ্চলগুলিকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে। আর্কটিক কাউন্সিলের অবশিষ্ট সদস্যদের দ্বারা সম্ভাব্য বিচ্ছিন্নতা সম্পর্কে উদ্বিগ্ন এবং আর্কটিকের দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন লক্ষ্যগুলো উপলব্ধি করার জন্য বিদেশী পুঁজি ও প্রযুক্তির জরুরী প্রয়োজনে, রাশিয়া তার অতীত পছন্দ থেকে বেরিয়ে এসে নন-আর্কটিক রাষ্ট্রগুলির কাছে গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়েছে। এটি করার মাধ্যমে রাশিয়া একদিকে চীনের সাথে এবং অন্যদিকে ভারত, জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে তার সহযোগিতার মধ্যে একটি সূক্ষ্ম ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করেছে। রাশিয়ার সাথে পূর্ণ অংশীদারিত্বের প্রতি ভারতের প্রতিশ্রুতি একটি প্রশ্ন তুলে দেয়। সম্পদের সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ না করলেও অনুমেয় যে, সিউল এবং টোকিওর রাশিয়া থেকে নিজেদের দূরে রাখার চলমান প্রচেষ্টা মস্কোর ভারসাম্য রক্ষার কৌশলের ওপর ভয়ঙ্কর প্রভাব ফেলবে, সম্ভবত বেইজিংয়ের উপর রাশিয়ার অতিরিক্ত নির্ভরশীলতাকে আরও বাড়িয়ে দেবে।
এই উত্তেজনাগুলির মধ্যে, দক্ষিণ কোরিয়া ফিনল্যান্ড এবং সুইডেনের মতো সমমনা আর্কটিক দেশগুলোর সাথে শক্তিশালী অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার মাধ্যমে তার শিপিং কৌশলগুলিকে পুনর্গঠন করার একটি সুযোগ পেতে পারে৷ প্রথমত, দক্ষিণ কোরিয়া, ফিনল্যান্ড এবং সুইডেনের মধ্যে সহযোগিতা তাদের পরিবেশগত উদ্দেশ্যগুলোর সাথে সারিবদ্ধ। পরিবেশগত সমস্যার জন্য শিপিং-কে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদানকারী হিসাবে মেনে নিয়ে, এই দেশগুলো বর্ধিত সামুদ্রিক কার্যকলাপ থেকে দূষণ হ্রাস করার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়েছে।ফিনল্যান্ড এবং সুইডেন পরিবেশ সুরক্ষার প্রতি অঙ্গীকার প্রদর্শন করেছে, যখন দক্ষিণ কোরিয়ার গ্রিন নিউ ডিল স্বচ্ছ জ্বালানি প্রযুক্তি এবং টেকসই অনুশীলনের উপর জোর দেয়। সম্মিলিত দক্ষতাকে ব্যবহার করে, তারা আর্কটিক শিপিংয়ের সাথে সম্পর্কিত পরিবেশগত উদ্বেগগুলিকে মোকাবেলা করার জন্য সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে পারে।
পরিবেশ বান্ধব সামুদ্রিক প্রযুক্তির উন্নয়নে দক্ষিণ কোরিয়া ফিনল্যান্ড এবং সুইডেনের সাথে অভিন্ন স্বার্থ শেয়ার করে। সামুদ্রিক প্রযুক্তিতে তাদের উদ্ভাবনের জন্য বিখ্যাত ফিনল্যান্ড এবং সুইডেন এই প্রযুক্তিগুলোর বিকাশ এবং গ্রহণকে ত্বরান্বিত করতে দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে সহযোগিতা করতে পারে। এর মাধ্যমে তারা মূল সেক্টরে তাদের নিজ নিজ অবস্থান শক্তিশালী করার পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি চালনা করতে পারে। এই তিনটি ছোট শক্তির মধ্যে ভবিষ্যতে প্রতিরক্ষা-শিল্প সহযোগিতার সম্ভাবনারও সুযোগ রয়েছে। এই তিনজনের মধ্যে বিদ্যমান উদ্যোগ যেমন MIRAI 2.0 এবং গ্রিন ইকোনমি সহযোগিতা চুক্তি, সেইসাথে নরওয়ে, এস্তোনিয়া এবং পোল্যান্ডের কাছে উন্নত অস্ত্র ব্যবস্থা বিক্রিতে সিউলের সাম্প্রতিক সাফল্য আর্কটিক শিপিং ডিকার্বনাইজিং এবং সম্ভবত আরও গুরুত্বপূর্ণভাবে, আর্কটিকের বর্ধিত সামুদ্রিক নিরাপত্তা উভয় ক্ষেত্রেই সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টার ভিত্তি প্রদান করে। এই উদ্যোগের উপর ভিত্তি করে, দক্ষিণ কোরিয়া, ফিনল্যান্ড এবং সুইডেন আর্কটিকের নিরাপদ নৌচলাচলের জন্য প্রয়োজনীয় AI-চালিত নেভিগেশনাল সিস্টেম এবং আধুনিক আইসব্রেকারগুলোর বিকাশে তাদের সহযোগিতাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
সূত্র : thearcticinstitute