বাংলারজমিন
শহীদ রফিক স্মৃতি পাঠাগারে বছর জুড়েই পাঠকের অভাব
রিপন আনসারী, মানিকগঞ্জ থেকে
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, বৃহস্পতিবার৫২’র ভাষা আন্দোলনের প্রথম বীর শহীদ রফিক উদ্দিন আহমেদ। মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার পারিল গ্রামের এই কৃতী সন্তানের নামে নিজ গ্রামে নির্মাণ করা হয়েছে শহীদ রফিক গ্রন্থাগার ও জাদুঘর। এখানে ১৬ হাজার বইয়ের ভাণ্ডার থাকলেও সারা বছরই পাঠকশূন্য অবস্থায় বিরাজ করছে গ্রন্থাগারটি। শুধুমাত্র ভাষার মাস এলেই কিছু পাঠকের দেখা পাওয়া যায়। ভাষা শহীদদের ওপর লেখা বইয়ের স্বল্পতা থাকায় নতুন প্রজন্ম মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন গ্রন্থাগারের প্রতি। ২০০৮ সালের ২৪শে মে মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদ রফিক নগরে নির্মাণ করে ভাষা শহীদ রফিক উদ্দিন আহমদ স্মৃতি জাদুঘর ও গ্রন্থাগার। ১২ হাজার বই দিয়ে গ্রন্থাগারের যাত্রা শুরু হয়। এরপর বাড়তে বাড়তে বর্তমানে ১৬ হাজার বই রয়েছে। প্রথম পাঠকদের নাম রেজিস্ট্রেশন খাতায় অন্তর্ভুক্ত করা হলেও দিন দিন পাঠক কমে যাচ্ছে জানান লাইব্রেরিয়ান ফরহাদ হোসেন খান। তিনি বলেন, আসলে পাঠকদের মনের অবক্ষয় থেকেই পাঠাগারের প্রতি মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন বলে আমার ধারণা। বাংলা একাডেমি থেকে বেশ কিছু বই দেয়া হয় এখানে। আগে পাঠকদের মন-মানসিকতা ঠিক করতে হবে। এলাকার শিক্ষার্থীরা জানান, যেহেতু ভাষা শহীদ রফিকের নামে গ্রন্থাগারটি প্রতিষ্ঠিত সেখানে ভাষা আন্দোলনের ওপর যেসব বই থাকার কথা সেগুলো নেই। যার কারণে নতুন প্রজন্ম ভাষা আন্দোলনের সঠিক ইতিহাস জানতে পারছে না। লেখক ও গবেষক মিয়াজান কবীর বলেন, এই গ্রন্থাকারে কিছু বই থাকলেও পাঠক সংকট দেখতে পেলাম। পাঠক বাড়াতে হলে প্রথমে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংযোগ সৃষ্টি করতে হবে। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপযোগী পাঠ্যক্রমে পাঠ্যসূচিতে সেসব পাঠ্যসূচির সহায়ক বই পাঠাগারে রাখতে হবে। ভাষা আন্দোলন স্মৃতি রক্ষা পরিষদ কমিটির সহ-সভাপতি মোসলেউদ্দিন খান মজলিস বলেন, ভাষা শহীদ রফিক স্মৃতি পাঠাগারটি সমৃদ্ধ করতে হলে ভাষা আন্দোলন সংশ্লিষ্ট এবং যারা শহীদ হয়েছেন তাদের জীবন বৃত্তান্ত সম্পর্কিত গবেষণামূলক বই এখানে থাকতে হবে। আমি এখনো ওই ধরনের কোনো বই এখানে দেখতে পাইনি। এ ছাড়া এই অঞ্চলের ভাষা শহীদ রফিক সম্পর্কে এখনো অনেকেই অবগত নন। আশা রাখছি, ভাষা আন্দোলনের সর্বজ্ঞ বিষয়ভিত্তিক বই আনা হলে পাঠক বাড়বে। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট গোলাম মহিউদ্দিন বলেন, পাঠাগারে পাঠক বাড়ানোর নানা পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে। পাঠকদের পাঠাগারে আকৃষ্ট করতে আমরা প্রতিবছর পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে প্রতিদিন এখানে কালচারাল অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করতে পারি।