ঢাকা, ৯ মে ২০২৫, শুক্রবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

ভারত

ক্রিকেট, হুল্লোড়, যৌনতা আর খানাপিনার যোগফল আইপিএল

বিশেষ সংবাদদাতা, কলকাতা

(২ বছর আগে) ২৮ এপ্রিল ২০২৩, শুক্রবার, ১২:৩০ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১২:১৮ পূর্বাহ্ন

mzamin

ভারতে বর্তমানে চলা ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ বা আইপিএল কতোটা ক্রিকেট আর কতোটা ক্রিটেনমেন্ট, তাই নিয়ে প্রশ্নের উদয় হয়েছে। দিল্লি ক্যাপিটালস দলের এক খেলোয়াড় ফ্রাঞ্চায়সি পার্টিতে এক মহিলার সঙ্গে অভব্যতা করায় দিল্লি ক্যাপিটালস এর খেলোয়াড়দের জন্যে নতুন কোড অব কনডাক্ট রচনা করা হয়েছে। এই কোড অব কনডাক্ট অনুযায়ী রাত দশটার পরে কোনও ক্রিকেটার তার ঘরে মহিলা অতিথি নিয়ে যেতে পারবেন না। প্রয়োজনে হোটেলের কফি শপে অথবা লবিতে দেখা করা যেতে পারে।

ক্যাপিটালস এর কোড অব কনডাক্টে এই কথাও বলা আছে যে নিয়ম ভাঙলে শাস্তির কবলে পড়তে হবে। অর্থাৎ এই নির্দেশনামা জারি করে ক্যাপিটালস বুঝিয়ে দিল যে আইপিএল মানেই দেদার হুল্লোড়, সীমাহীন যৌনতা আর খানাপিনা। আইপিএলে কী ক্রিকেট নেই! অবশ্যই আছে। এই যে এতো তরুণ প্রতিভাবান ক্রিকেটার উঠে আসছে তাতো আইপিএল এর কল্যানেই। কিন্তু, পাশাপাশি আইপিএলকে কেন্দ্র করে বিনোদন ব্যবসায়ীদের রমরমা আইপিএলকে ক্রিটেনমেন্টে পরিণত করেছে। প্রতিটি ফ্রাঞ্চাইজি টিম এর সঙ্গে একটি করে ট্যুরিং কোম্পানি বা হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির যোগ থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু, এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি। এদের কাজ পোস্ট ম্যাচ পার্টি আয়োজন করা। যে যত জাকজমক করে পার্টি আয়োজন করতে পারবে সেই কোম্পানির তত বেশি কদর। তাই পোস্ট ম্যাচ পার্টিগুলিতে দেখা যাচ্ছে সিনেমা কিংবা টিভির সেকেন্ড গ্রেড শিল্পীদের। বিতাড়িত হচ্ছে বিনামূল্যে মদ এবং মহার্ঘ খাবার। বিনিময়ে অবাধ যৌনতা যার ফলে ক্রিকেটাররাও অনেক সময় বেপথু হচ্ছে। মনে রাখতে হবে বেশিরভাগ আইপিএল ক্রিকেটার এসেছে মধ্যবিত্ত বা নিম্নবিত্ত ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে। তাদের কাছে আইপিএল এক নিষিদ্ধ দুনিয়ার দ্বার খুলে দিচ্ছে। ফলে তারা আবেগে গা ভাসাচ্ছে। কয়েকবছর আগে চিয়ার গার্লদের সঙ্গে নাজায়েস সম্পর্কের জন্যে এক ক্রিকেটারকে সতর্ক করা হয়েছিল। গাভাস্কার কিংবা কপিলদেবদের আমলে, এতদূর যাবো কেন শচীন-সৌরভদের আমলেও পোস্ট ম্যাচ পার্টির কথা ভাবা যেতোনা। এখন আজকের এই ভোগবাদী সমাজে ক্রিকেটাররা স্রোতের সঙ্গে এগোতে না পারলে ব্যাকডেটেড বলে চিহ্নিত হবেন। তাই, প্রমোদে সবাই ভাসছেন। আইপিএলের আর একটি অবদান হল অনলাইন জুয়া খেলার সুযোগ করে দেয়া। লোভনীয় পুরস্কার, দেদার অর্থের হাতছানি--প্রকৃত ক্রিকেটমোদী ছাড়া পেশাদার জুয়াড়িরাও উৎসাহিত হচ্ছে। তাই বলে আইপিএল কী ভালো কিছু করছে না! নতুন প্রতিভার প্লাটফর্ম হয়ে উঠেছে আইপিএল। অনেক ফ্রাঞ্চাইজি। তাই বহু খেলোয়ারের সামনে বন্ধ দরজা খুলে যাওয়ার সুযোগ। রাজহাসের মত দুধটুকু ঠোঁট দিয়ে তুলে জলটা ফেলে দিলেই হলো। কিন্তু নেশার প্রলোভন যে বড় ভয়ঙ্কর। সাফল্য মানেই দেদার টাকা, সুন্দরী নারী সান্নিধ্য, পার্টিতে অফুরান মজা। আইপিএল যেন সেই আগুন যা রান্নার কাজেও লাগে আবার লোকের বাড়িতে লঙ্কাকাণ্ড ঘটাতেও লাগে। এই আইপিএলকে কে কীভাবে ব্যবহার করবে তার ওপরই নির্ভর করে সব কিছু।

ভারত থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

ভারত সর্বাধিক পঠিত

পাকিস্তানে হামলা নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব/ দিল্লি অধিকার প্রয়োগ করেছে

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status