ভারত
সংকটের সাতকাহন (এক)
আদানি বিশ্বের ধনী তালিকায় নেমে এলেন ১১ নম্বরে, বাজেট অধিবেশনে ঝড় ওঠার সম্ভাবনা
বিশেষ সংবাদদাতা, কলকাতা
(২ বছর আগে) ৩১ জানুয়ারি ২০২৩, মঙ্গলবার, ১১:২৯ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:১৮ পূর্বাহ্ন

(আদানি সাম্রাজ্য’র পতন না-কি ভারতের ওপর পরিকল্পিত আক্রমণ? ধন্দে গোটা দুনিয়া। এই প্রেক্ষিতে বিশেষ ধারাবাহিক প্রতিবেদন। আজ প্রথম কিস্তি)
ধনকুবের গৌতম আদানি সোমবারও আমেরিকার হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ রিপোর্টকে ভারতের বিরুদ্ধে আক্রমণ বলে অভিহিত করেছেন। উত্তরে হিন্ডেনবার্গ জানিয়েছে, ভারতের স্ফীতবৃদ্ধি নিয়ে তারা একেবারেই সন্দীহান নয়, কিন্তু একজন আর্থিক ফ্রড যেভাবে বিষয়টিকে জাতীয় স্বার্থের দিকে ঘুরিয়ে দিতে চাইছে তাতে তারা উদ্বিগ্ন। তারা যে কোনও ধরনের যাচাইয়ের সামনে দাঁড়াতেও যে প্রস্তুত হিন্ডেনবার্গ সেই কথাও জানিয়েছে। এই দুইয়ের টানাপোড়েনের মাঝখানে ফোর্বস-এর ধনী তালিকায় তৃতীয় থেকে একদম ১১ তম স্থানে নেমে গেছেন গৌতম আদানি। তার আগে জায়গা পেয়েছেন ক্রমপর্যায় অনুযায়ী বার্নার্ড আর্নল্ট, ইলন মাস্ক, জেফ বেজস, লারি এলিসন, ওয়ার্নার বুফে, বিল গেটস, কার্লোস স্লিম এবং পরের দুটি স্থানে ল্যারি পেজ, মুকেশ আম্বানি।
শুধু ১১ তম স্থানে নেমে যাওয়া নয়, ভারতে মঙ্গলবার শুরু হতে যাওয়া বাজেট অধিবেশনেও অস্বস্তি বাড়াতে পারে আদানি। মোদিকে নিশানা করে বিরোধীরা সরব হবেন দুটি বিষয় নিয়ে। এক, আদানির শেয়ার পতন। দুই, মোদির বিরুদ্ধে বিবিসির তথ্যচিত্র।
বিশিষ্ট রাজনৈতিক সমীক্ষক নীলাদ্রি বন্দোপাধ্যায় যদিও দুটি ঘটনায় ইঙ্গো-মার্কিন-পাক চক্রান্ত দেখছেন, কিন্তু বিরোধী দলগুলো তা মনে করছে না। তাদের ধারণা, তিন বছরে আদানি সাম্রাজ্য যে পনের শ’ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে এর পিছনে প্রধানমন্ত্রী মোদির অদৃশ্য হাত আছে। শ্রীলঙ্কায় আদানিদের একটি তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের গণ্ডগোল মেটাতে তদানীন্তন শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দ রাজাপক্ষকে মোদি চাপ দিয়েছিলেন বলেই দাবি করেন বিরোধীরা। একজন রাষ্ট্রনায়ক এক শিল্পপতির হয়ে সওয়ালে নামেন কখন? বিরোধীরা এই প্রশ্ন তুলছে। সোমবার তৃতীয়দিনে আদানি সাম্রাজ্যে পতন অব্যাহত।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, আদানিদের আর্থিক ক্ষতি ছ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার কোটি রুপি। অন্য একটি হিসেব জানাচ্ছে, ক্ষতির পরিমাণ সোমবার পর্যন্ত পাঁচ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার কোটি রুপি। সোমবার আদানি ট্রান্সমিশনের শেয়ার ১৪ দশমিক ৯১ শতাংশ, আদানি গ্যাসের শেয়ার ২০ শতাংশ, আদানি টোটাল গ্যাসের শেয়ার ২০ শতাংশ, আদানি পাওয়ারের শেয়ার পাঁচ শতাংশ এবং আদানি উইলমার-এর শেয়ার পাঁচ শতাংশ পড়েছে।
শুধু দুই শতাংশ ফলোঅন পাবলিক অফার বা এফপিওর ফলে আদানি এন্টারপ্রাইজের শেয়ারে চার দশমিক ২১ শতাংশ বৃদ্ধি দেখা গেছে।
প্রশ্ন উঠে গেছে, আদানিদের এই পতন কি রক্ষা করতে পারবে তাদের লগ্নিকে? এলআইসি ও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো জানিয়েছে যে, আদানিদের ইমমোবাইল প্রপার্টি তাদের কাছে যা গচ্ছিত আছে তাতে তাদের আশু বিপদের সম্ভাবনা নেই। কিন্তু, লগ্নির ভবিষ্যৎ কী হতে পারে- হয়তো সময়, একমাত্র সময়ই সেই প্রশ্নের জবাব দিতে পারে।