ভারত
টানা ১১ রাত গুলি বিনিময়
ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর ঘোষণা- জবাব দেয়ার দায়িত্ব আমার
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা
(৪ দিন আগে) ৫ মে ২০২৫, সোমবার, ১২:৪৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৬:৫৭ অপরাহ্ন

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে রণদেহী মনোভাব ক্রমশ বাড়িয়ে চলেছে ভারত। নিয়মিত সামরিক মহড়া চলছে। এরই মধ্যে সীমান্তের বিভিন্ন সেকশনে টানা ১১দিন গুলি বিনিময় চলেছে। পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নানা স্তরে একের পর এক কঠোর অবস্থান নিয়েছে ভারত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইতিমধ্যেই তিন বাহিনীকে যথাযথ পদক্ষেপের অবাধ স্বাধীনতা দিয়েছেন। এরই মধ্যে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং রোববার দিল্লিতে বলেছেন, সশস্ত্র বাহিনীর সাথে কাজ করা এবং যারা ভারতের দিকে খারাপ নজর রাখে তাদের ‘যোগ্য জবাব’ দেওয়া তার দায়িত্ব।
পাকিস্তানের প্রতি ভারতের প্রতিক্রিয়ার ইঙ্গিত করে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই যে- প্রধানমন্ত্রী মোদির নেতৃত্বে আপনারা যা চান তা অবশ্যই ঘটবে। তার মতে, প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে, সৈন্যদের সাথে কাজ করা এবং দেশের সীমান্তের সুরক্ষা নিশ্চিত করা আমার দায়িত্ব। এবং যারা আমাদের দেশের দিকে খারাপ নজর রাখে তাদের উপযুক্ত জবাব দেওয়াও আমার দায়িত্ব।
সোমবার ভারতীয় সেনা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর আটটি অগ্রবর্তী সেক্টরে পাকিস্তানি সেনারা বিনা উস্কানিতে গুলি চালিয়েছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে এবং ভারতীয় সেনাদের কাছ থেকে প্রতিশোধ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যে এটি নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর গুলি চালানোর টানা ১১তম রাত বলে জানানো হয়েছে।
জম্মুর একজন প্রতিরক্ষা মুখপাত্র জানিয়েছেন, ৪ ও ৫ই মে রাতে জম্মু ও কাশ্মীরের কুপওয়ারা, বারামুল্লা, পুঞ্চ, রাজৌরি, মেন্ধার, নওশেরা, সুন্দরবানি এবং আখনুরের বিপরীতে নিয়ন্ত্রণরেখায় ছোট অস্ত্রের গুলি চালিয়েছে পাকিস্তান। ভারতীয় সেনাবাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে এবং আনুপাতিকভাবে জবাব দিয়েছে বলে তিনি দাবি করেছেন।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, জম্মু অঞ্চলের পীর পাঞ্জাল রেঞ্জের দক্ষিণে জম্মু, রাজৌরি ও পুঞ্চ এবং কাশ্মীর উপত্যকার বারামুল্লা ও কুপওয়ারার পাঁচটি সীমান্ত জেলা জুড়ে রাতভর গুলিবিনিময় হয়েছে দুই দেশের মধ্যে।
এদিকে, ভারতের পশ্চিম দিকে ভারতীয় সেনার একের পর এক মহড়ার ছবি সামনে আসছে। রোববার রাত ৯টা থেকে ৯ টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত পাঞ্জাবের ফিরোজপুর ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় ব্ল্যাকআউট ড্রিল হয়েছে। পাঞ্জাবের বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা এই আধ ঘণ্টা এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখে। যতক্ষণ ড্রিল চলে ততক্ষণ বাজতে থাকে হুটার।
জানা গেছে, প্রশাসনের তরফে বাসিন্দাদের অনুরোধ জানানো হয়, যাতে এই ৩০ মিনিট সময় তারা বাড়িতে কোনও ইনভার্টার না জ্বালান, কোনও জেনারেটার না চালান। এই সময় কোনও আলো যেন বাড়ির বাইরে না আসে, তার জন্য স্থানীয়দের অনুরোধ জানানো হয়। ডেপুটি পুলিশ কমিশনার দীপশিখা শর্মা জানিয়েছেন, এটি রুটিন প্রস্তুতির অংশ ছিল। এ নিয়ে অযথা আতঙ্কের কোনও কিছু নেই।
ফিরোজপুরের ক্যান্টনমেন্টে এই ড্রিলের আগে, সম্প্রতি উত্তর প্রদেশের শাহজাহানপুরে এক্সপ্রেসওয়েতে চলেছে ভারতীয় বিমানবাহিনীর মহড়া। আপৎকালে বিকল্প রানওয়ে হিসাবে গঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের ক্ষমতা যাচাই করতেই এই মহড়া চলে।
ভারতীয় নৌবাহিনীও ১লা মে থেকে আরব সাগরে মহড়া চালিয়ে যাচ্ছে। ৭ই মে পর্যন্ত আরব সাগরে লাইভ ফায়ারিং ড্রিল জারি রাখবে ভারতীয় নৌবাহিনী। লাইভ ফায়ারিং ড্রিল হল যুদ্ধপরিস্থিতির মতো পরিবেশ তৈরি করে অনুশীলন করা। এই মহড়া মূলত অস্ত্র পরীক্ষা এবং যুদ্ধের প্রস্তুতির জন্য করা হয়। সমুদ্রে আন্তর্জাতিক সীমান্তের কাছে ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর রণতরীও মোতায়েন রাখা হয়েছে। বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে রণকৌশল এলাকা থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে।
পাঠকের মতামত
রাজনাথসিংয়ের উক্তি যুদ্ধংদেহী,যা স্থিতিশীলতার সহায়ক নয়,বিষয়টি প্রতিবেশীদের ভাবাবে।পেহেলগাম ট্রাজেডির আন্তর্জাতিক তদন্তের পাকিস্তানি দাবী না মানাটাও তাদের ষড়যন্ত্র। যুদ্ধ ভারতের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবেনা,কেননা প্রতিটি প্রতিবেশী তার দ্বারা জর্জরিত।
ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর ঘোষণা- জবাব দেয়ার দায়িত্ব আমার
জানিনা কেন মোদী বাবু, অমিত শাহ ,রাজ্ নাথ সিং আর একজন গেরুয়া পোশাকধারী মুখ্য মন্ত্রী (নাম ভুলে গেছি) এদের দেখলেই ভয়ংকর কোন প্রাণীর কথা মনে হয়। ইন্ডিয়ার জনগণ কি ভাবে এদের নেতা বানায় বুঝিনা। প্রচুর জ্ঞানী গুণী লোক তো আছে ওই দেশে।
ভারত কখনোই বন্ধু রাষ্ট্র নয়। আঞ্চলিক শত্রু রাষ্ট্র হিসেবে ভারত কে চিহ্নিত করা আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও শান্তির জন্য জরুরী।